০৬ মে ২০১২, সোমবার, ০৮:০২:৫১ পূর্বাহ্ন


পহেলা মে শো-ডাউনের কর্মসূচি নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৪-২০২৪
পহেলা মে শো-ডাউনের কর্মসূচি নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি


গত ২৮ অক্টোবরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশের ওপর ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ এখন রাজধানীবাসী মেনে নিতে চায় না। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখে। এরপর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। 

অনেক শঙ্কা নিয়ে ওই সমাবেশে দুই পক্ষের লোকসমাগম শুরু হওয়ার আগ থেকেই থমথম পরিস্থিতি বিরাজ করে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পালনের জন্য নেতাকর্মীদের বারবার আহ্বান জানালেও শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছিল, সেটা আর দ্বিতীয়বার বলার প্রয়োজন নেই। 

ওই ঘটনার পর বিএনপির শীর্ষনেতাদের অনেকেই কারাগারে পাঠানো হয়। ফাঁকে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় নির্বাচন। এর দীর্ঘদিন পর আবারও নয়াপল্টনে আগামী শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সমাবেশের আহ্বান জানালে একইভাবে গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগও পাল্টা সমাবেশের ডাক দিলে ভীতিকর এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা আবারো যাতে না ঘটে এজন্য তাপপ্রবাহের দোহাই দিয়ে ওইদিনের কর্মসূচি পাল্টে দেয়। পরবর্তীতে ওই তারিখ জানাবে দল। গত ২২ এপ্রিল সোমবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির দফতর সম্পাদক সাইদুর রহমান মিন্টু এ তথ্য জানিয়েছেন। 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির দফতর সম্পাদক জানান, গরমে সতর্কতামূলক ‘হিট অ্যালার্টের’ সময় বাড়ানোর কারণে সমাবেশ পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ১ মে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টনে র‍্যালি ও সমাবেশ করবে বিএনপি। এরপর সুবিধামতো একটি দিন ঠিক করা হবে সমাবেশের জন্য। 

উল্লেখ্য, আগামী ২৬ এপ্রিল শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। গত ২০ এপ্রিল এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারকে অবহিত করে চিঠি দেয় দলটি। এরই মধ্যে বিএনপির ২৬ এপ্রিলের সমাবেশের ঘোষণায় রাজনৈতিক অঙ্গনেও উত্তাপ ছড়ায়। বিএনপির এই ঘোষণার পর একই দিন রাজধানীতে সমাবেশের ডাক দেয় আওয়ামী লীগও। তবে তীব্র গরমের কারণে গত ১৯ এপ্রিল সারা দেশে ৩ দিনের জন্য সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অফিস, যা আজ আরো তিনদিন বাড়ানো হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির একমাত্র উদ্দেশ্য দলের মধ্যে চাঙ্গা ভাব তৈরি করা। 

আপাতত ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসই টার্গেট। ওইদিন উপলক্ষে শ্রমিক দলের ব্যানারে শ্রমিকদের বড় শোডাউন করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এই কর্মসূচি সফল করতে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে তারা। ঘরোয়া বৈঠক ও মতবিনিময় সভাসহ নানা প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলছে। সমাবেশ ছাড়াও তৃণমূল নেতাকর্মীকে আবার সক্রিয় করতে লিফলেট বিতরণসহ কর্মিসভার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। শিগ্গিরই যাবতীয় কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে। এছাড়া ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাসজুড়ে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করা হবে। 

যেহেতু গত বছরের ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড করে দেওয়ার পর এই দুই সমাবেশের মধ্য দিয়ে আবারও রাজপথে ফিরতে চাইছেন তারা। ওই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সারা দেশে প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে নেওয়া হয়। গ্রেফতার এড়াতে দলের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মী চলে যান আত্মগোপনে। টানা আন্দোলন ও নির্বাচন শেষে নেতাকর্মীর কারামুক্তির বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয় দলের পক্ষ থেকে। ফলে নির্বাচন শেষে আন্দোলন কর্মসূচি শূন্যই ছিল দল। কারণ কোনো নীতি বা কর্মসূচি সামনে নিয়ে কীভাবে এগোবে এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে চলে বোঝাপড়া। এখনো সেটা অব্যাহত। তবে এখন আপাতত এ কর্মসূচি সামনে। পরিস্থিতি বলে দেবে রাজপথে তারা কোনটাকে প্রাধান্য দিয়ে এগোবে।

শেয়ার করুন