২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৬:৫৮:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ
রাজনৈতিক ইশতেহারে নারী ইস্যু গুরুত্ব পায় না
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-১১-২০২৩
রাজনৈতিক ইশতেহারে নারী ইস্যু গুরুত্ব পায় না বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ


বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা: ফওজিয়া মোসলেম অভিযোগ করেছেন, সংবিধানের নারী-পুরুষের সমতা ও ন্যায্যতার কথা বলা হলেও রাজনৈতিক ইশতেহারে নারী ইস্যুটি বিশেষ গুরুত্ব পায় না এতে নারী সমাজের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি হচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য সংরক্ষিত আসনে সংখ্যা বৃদ্ধি, সরাসরি নির্বাচন এবং নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট এলাকা নির্ধারণের জন্য মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হলেও বিষয়টি নারী নীতিতে তেমন গুরুত্ব পায়নি।

মহিলা পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে (১৮, তোপখানা রোড, ঢাকা) বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন- বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী।

ডা: ফওজিয়া মোসলেম আরো বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে নারীর জন্য সরাসরি আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সহজ নয় কারণ সমাজের মধ্যে নারীর প্রতি অবমাননাকর দৃষ্টিভঙ্গি ও উপস্থিতি সম্পদ সম্পত্তিতে নারীর অধিকার ও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় শক্তি ও সম্পদের লড়াইয়ে পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে নারীরা পিছিয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের ব্যবস্থা ২/৩ টার্ম বলবৎ রাখা আবশ্যক বলে মনে মহিলা পরিষদ। নির্বাচনে নারী সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এসময় তিনি সুশাসন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জনগণকে সাথে নিয়ে জনবান্ধব নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য এবং নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনকালে এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জোর দাবি জানান। তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে নারীকে অবমাননা করার দিকটির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয় বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থান সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশকে জটিল ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা পূর্ববর্তী সময়ের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে উন্মোচন করছে। এই পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে আহবান জানিয়ে আরো বলা হয়, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে টেকসই ও অগ্রগামী করতে অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করা এবং এই ব্যবস্থা ২/৩ টার্ম বলবৎ রাখা ও প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অধিকহারে নারীদের মনোনয়ন দেয়া এবং অর্থ যাতে মনোনয়নের ক্ষেত্রে কোন বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা এবং সকল রাজনৈতিক দলের সকল কমিটিতে ৩৩% নারীকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি মনিটরিং করাসহ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন; নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন: নারী নির্যাতন প্রতিরোধ; সাম্প্রদায়িকতা ও নারী বিদ্বেষী মনোভাব প্রতিরোধ; আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, দলিতসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার সংরক্ষণ; নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া অধিকার এবং গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিতে সংগঠনের পক্ষে সুপারিশসমূহ উপস্থাপন করা হয়। 

সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি একক মন্ত্রণালয় হিসেবে কাজ করবে; পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ও নারীর অধিকার সুরক্ষায় এই মন্ত্রণালয়ের জোরালো ভূমিকা পালন করবে- এটি মহিলা পরিষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ও দাবি।

শেয়ার করুন