বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনের এখনো অন্তত ১৫ মাস বাকি। দেশ এখন গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির বাজারেও আগুনের আচ। ঘনিয়ে আসছে তীব্র গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট। এখন প্রতিদিনই নির্বাচন নিয়ে কিছুনা কিছু হোক, না হোক কথা বলে চলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। বাংলাদেশের মানুষ নানা কারণে নির্বাচনে ভোট দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। রাজনীতির প্রতিও অনেকে এখন বীতশ্রদ্ধ। প্রতিদিন সতিনের মতো বাকযুদ্ধ করছে প্রধান দুই বিরোধীদলের মুখমাত্র। কথা শুনে হয়তো কমেডিয়ানরাও হাসছে! নির্বাচন কমিশনের উচিত অনেক নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি গড়ে তোলা, জনগণকে নির্বাচন বিষয়ে আগ্রহী করে তোলা। জনগণ কথা চায় না। দেখতে চায় কাজের মাধ্যমে প্রমাণ চায়। নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ, নিরেপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক এবং অর্থবহ নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি করতে পারে কিনা।
এমনি যখন অবস্থা তখন অপরিণামদর্শী কথা বলে নিজেকে কেন বিতর্কিত করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। বাংলাদেশের বিদ্যমান অবস্থায় সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। মাঠে তীব্র সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে কোণঠাসা করার মতো ক্ষমতা, সামর্থ্য কিছুই নেই বিরোধীদলের। যদিও প্রধান বিরোধীদল গো ধরে আছে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে তারা অংশ নিবেনা। কিছু দেশের কূটনীতিকরাও কূটনীতির সীমানায় পৌঁছে নির্বাচন নিয়ে বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েছে। কিন্তু দেশে সত্যিকার অর্থে জ্বালানি সংকট ছাড়া বিশেষ কোনো কারণ নেই, যা জনগণকে সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
দূর নিয়ন্ত্রিত নেতৃত্ব আর দেশ-বিদেশে জনবিরোধী কার্যক্রম করে কোনো রাজনৈতিক দল অন্তত বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। কোনো বিদেশি শক্তি কোনো দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবেনা। দেশের সেনাবাহিনী অতীতের যে কোনো সময়ের থেকে বেশি দেশের অর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জড়িত থেকে দেশ সেবা করছে। উত্তরপাড়ার তাই আগ্রহ নেই ক্ষমতা বিষয়ে। নির্বাচন যতোই ঘনিয়ে আসবে, ততোই বিরোধী রাজনীতির একটি অংশ নির্বাচনে আগ্রহী হয়ে পড়বে। বিভেদ বা বিভাজন আসবে। সরকারিদল চেষ্টা করবে বিভেদ তৈরি করে দিতে। বিরোধীদলকে বিকল্প উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে জনগণের সামনে আসতে হবে। বর্তমান যুগে মানি না, মানবো না সংস্কৃতি দিয়ে জনগণের মনজয় করা যায় না। তবে শাসকদলের সংকট হাইব্রিড কর্তৃক দুর্নীতি এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের সংযোগহীনতা।
কিন্তু নির্বাচনমুখী পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ করছে। সেটি ভালো। কিন্তু মূল স্রোতের বিরোধীদল না সম্পৃক্ত থেকেছে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন প্রক্রিয়ায়,না সাড়া দিয়েছে ওনাদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বানে। জানিনা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কিছু চমক সৃষ্টি করা কথা বিরোধীদলকে আদৌ আগ্রহ করবে কিনা। কিন্তু এই ধরনের কথা বলে উনি গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছেন। উনার কথা শুনে অনেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপির কথা মনে হয়। গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা বিশেষত সাংবিধানিক পদে থাকা বিশিষ্ট জনকে কথা সতর্ক থাকা উচিত।