২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০২:১৯:১৮ পূর্বাহ্ন


তদারকি সরকারের দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ বামজোটের
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১০-২০২৩
তদারকি সরকারের দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ বামজোটের


বামজোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সভায় নেতৃবৃন্দ সংসদ ভেঙে দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। জোটটি এ দাবিতে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা সমাবেশ ডেকেছে। 

বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পল্টনস্থ মুক্তি ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বামজোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিখিল দাস, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির সহ-সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ প্রমুখ। 

সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ যেকোনভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশকে একটি ভয়াবহ সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের গণদাবীকে অগ্রাহ্য করছে এবং তার জন্য বিরোধী দল-মতের উপর অশেষ নির্যাতন, নিপীড়ন নামিয়ে এনেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পরবর্তীতে সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে প্রতিবাদের টুঁটি চেপে ধরেছে। টেলিফোনে আড়ি পাতার মাধ্যমে নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার উপর সরকার হস্তক্ষেপ করছে। সম্প্রতি ফোনে আড়ি পাতার মাধ্যমে ব্যক্তির অবস্থান সনাক্ত করার জন্য আগের চেয়ে আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার নামে এটি করা হলেও, সবাই জানেন এই পদক্ষেপ সরকারের সাজানো নির্বাচনের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা আন্দোলনকে দমনের উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হবে। 

নেতৃবৃন্দ মজুরি বোর্ডের আজকের সভায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির যে প্রস্তাব মালিকপক্ষ এবং তথাকথিত শ্রমিকপক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে দুটোকেই প্রত্যাখ্যান করেন। গার্মেন্টস মালিকরা ১০ হাজার ৪০০ টাকা মজুরি প্রস্তাব করেছেন। ২০১৮ সালে যে মজুরি ঠিক করা হয়েছিল মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকে হিসাব করলে তার বর্তমান মূল্যই এখন ১১ হাজার টাকার বেশি। ফলে মালিকদের প্রস্তাবিত মজুরি বাস্তবে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বর্তমান মজুরি থেকেও কম। নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার যুক্তিসঙ্গত দাবি মেনে না নিয়ে জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করার মধ্য দিয়ে দেশকে একটি সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশকে ঠেলে দেয়ার কোন অধিকার তাদের নেই। বামজোট অবিলম্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ চায়, নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। সভা থেকে এই দাবিতে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় প্রেসক্লাবে বামজোটের সমাবেশ আহ্বান করা হয়। 

সভা শেষে নেতৃবৃন্দ ঢাকেশ্বরী মন্দির পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় উৎসব বাধাহীনভাবে পালন করতে পারছেন কিনা সে বিষয়ে মতবিনিময় করেন। 

শেয়ার করুন