০১ মে ২০১২, বুধবার, ০৪:১৫:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে এবার বন্দুকধারীর গুলিতে তিন আইনশৃংলাবাহিনীর সদস্য নিহত ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ


ট্রাম্প আপিল করেছেন, বাইডেন রেগে গেছেন
শিতাংশু গুহ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০২-২০২৪
ট্রাম্প আপিল করেছেন, বাইডেন রেগে গেছেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প


নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে (আপিল বিভাগ) ট্রাম্প গত ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার ২০২৪ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন। তার আর্জি ৬ জানুয়ারি (২০২০) মামলা স্থগিত রাখা হোক, কারণ তার পুনর্নির্বাচনের জন্যে এটি মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। তার আইনজীবী বলছেন, প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন কর্মকাণ্ডের জন্যে যদি ফৌজদারি মামলা চলে, তাহলে আমরা এখন যে প্রেসিডেন্সি দেখছি তা আর থাকবে না। কারণ প্রেসিডেন্টরা অফিস ছাড়ার পর মামলার ভয়ে থাকবেন। উল্লেখ্য, আপিল বিভাগ ইতিপূর্বে রায়ে বলেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিচারের ঊর্ধ্বে নন, তার বিচার চলতে পারে। একই দিন ট্রাম্প ফ্লোরিডায় ক্লাসিফাইড ডক্যুমেন্ট সংক্রান্ত অপর একটি ফৌজদারি মামলায় হাজিরা দেন। 

প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভীষণ রেগে গেছেন। ক্লাসিফাইড ডক্যুমেন্ট অযত্নে-অবহেলায় রাখার বিষয়ে তদন্তকারী স্পেশাল কৌঁসুলি রবার্ট হুড় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সুপারিশ না করার কারণ হিসেবে বলেছেন যে, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ৮১ বছরের একজন বৃদ্ধকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোটা ঠিক হবে না। ব্যস, বাইডেন রেগে আগুন। প্রেসিডেন্ট এটি প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার স্মৃতিশক্তি যে লোপ পাচ্ছে না, সেটি প্রমাণে সচেষ্ট হন। সমস্যা হচ্ছে, এর অব্যবহিত পরেই এক ভাষণে তিনি মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-শিশিকে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট বলে উল্লেখ করেন। 

কৌঁসুলি রবার্ট হুর অক্টোবর ২০২৩-এ হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেন, সবাই এটিকে সাধারণ একটি বৈঠক হিসেবেই ধরে নিয়েছেন। সেই বৈঠকের সূত্র ধরেই কৌঁসুলি রবার্ট হুড়ের মন্তব্যে এখন বাইডেন শিবির উৎকণ্ঠিত। প্রশ্ন হচ্ছে, ডেমোক্র্যাটরা কি চাইলে বাইডেনকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিতে পারে? উত্তর হচ্ছে, সেটি একরকম অসম্ভব। বাইডেনের ক্যাম্পেইন মুখপাত্র ড্যানিয়েল ওয়েসেল এনবিসিকে বলেছেন, ডেমোক্র্যাট দল বাইডেনের পেছনে ঐক্যবদ্ধ। বাইডেনই দলীয় প্রার্থী হবেন এবং নভেম্বরে ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো হারাবেন। 

বাইডেনের বয়স ছাড়াও ডেমোক্র্যাটরা থার্ড পার্টি প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি, কর্নেল ওয়েস্ট ও জিল স্টেনকে নিয়ে চিন্তিত। কারণ মূলত এরা ডেমোক্র্যাট হিসেবে পরিচিত এবং বাইডেনের ভোটে ভাগ বসাবেন। বাইডেন-ট্রাম্প সরাসরি ফাইটে ট্রাম্প প্রায় সব জরিপে বাইডেন থেকে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে, নির্দলীয় ও থার্ডপার্টি প্রার্থী থাকলে ট্রাম্প সহজে জিতবেন। ট্রাম্পের জন্যে ভালো সংবাদ হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে, কলোরাডো সুপ্রিম কোর্টের রায় টিকছে না, এবং ট্রাম্প ব্যালটে থাকবেন। চূড়ান্ত রায়ের পর এটি প্রায় সবকটি রাজ্যে প্রযোজ্য হবে। 

বৃহস্পতিবার ৮ ফেব্রুয়ারি নেভাদা ককাসে ট্রাম্প ৯৯.১ শতাংশ ভোটে জয়ী হয়েছেন, এবং সব (২৬) ডেলিগেট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী রায়ান বিঙ্কলি পেয়েছে ০.৯ শতাংশ ভোট। নিকি হ্যালি এখানে প্রার্থী ছিলেন না। যুক্তরাষ্ট্রে মূলত প্রধান দুটি দল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং রিপাবলিকান পার্টি থেকে কেউ একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে থাকেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন চার বছরের জন্যে। জনগণের সরাসরি ভোটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না? তিনি নির্বাচিত হন, ইলেকটোরাল ভোটে। ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট আছে, এর মধ্যে যিনি ২৭০টি ভোট পান, তিনি নির্বাচিত হন। এজন্য ২৭০-কে ম্যাজিক নম্বর বলা হয়! 

জনসংখ্যা অনুযায়ী, প্রতিটি স্টেটের কিছু ইলেকটোরাল ভোট থাকে। যেই প্রার্থী যেই স্টেটে জয়ী হন তিনি সেই স্টেটের সবগুলো ইলেকটোরাল পান। তবে মেইন ও নেব্রাস্কায় ইলেকটোরাল ভোট ভাগাভাগি হয়ে থাকে। মেইনে চারটি এবং নেব্রাস্কায় পাঁচটি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে। ইলেকটোরাল ভোটব্যবস্থার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আল গোর এবং হিলারি ক্লিনটন পপুলার ভোটে জিতেও প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। অর্থাৎ নির্বাচনটি জাতীয় পর্যায়ে হলেও সিদ্ধান্ত হয় স্টেট পর্যায়ে। ছোট-বড় সব স্টেটের সমান গুরুত্ব বহাল রাখতে মার্কিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতারা এ ব্যবস্থাটি করে গেছেন। একইভাবে এবং একই কারণে প্রতি স্টেট থেকে দুই জন সিনেটর নির্বাচিত হয়ে থাকেন। 

১০/১২টি স্টেট ব্যতীত প্রায় সব স্টেট মূলত ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান শিবিরভুক্ত। ওই ১০/১২টি স্টেটকে ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট’ বলা হয়ে থাকে এবং প্রার্থীরা ওই সব স্টেটে প্রচার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এবারও এটি ব্যতিক্রম নয়? ১৮ বছরের মার্কিন নাগরিক ভোটার হতে পারেন। ভোট দিতে বৈধ পরিচয়পত্র লাগে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছাড়াও এবার কংগ্রেসের পুরো ৪৩৫টি আসন, ৩৩টি সিনেট, কটি গভর্নর পদে লড়াই হচ্ছে। বর্তমানে হাউস বা কংগ্রেস রিপাবলিকানদের দখলে, ডেমোক্রেট ২১২, রিপাবলিকান ২১৯, চারটি আসন খালি। সিনেট ডেমোক্র্যাটদের দখলে ৫১ (ডেমোক্র্যাট ৪৮, স্বতন্ত্র ৩), রিপাবলিকান ৪৮। হোয়াইট হাউস ডেমোক্র্যাটদের।

শেয়ার করুন