১২ এপ্রিল ২০১২, বুধবার, ০৬:২৭:১৯ পূর্বাহ্ন


প্রশ্ন করছি বিসিবিকেই
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৬-২০২২
প্রশ্ন করছি বিসিবিকেই কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছেনা। নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ। কিন্ত তাতেও কী কোনো ফল মিলছে? /ফাইল ছবি


বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নয়ন, প্রসার এবং পরিচালনার কেন্দ্রীয় দায়িত্ব বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিবির। বাংলাদেশ তিন ফরম্যাটে অর্থাৎ টেস্ট, ওডিআই এবং টি-২০ ক্রিকেট খেলছে ঘরের মাঠে এবং বিদেশে। কিছু আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের অবদানে যতটুকু সাফল্য আছে ওডিআই ক্রিকেটে, টেস্ট এবং টি-২০ ফরম্যাটে অর্জন প্রায় শুন্যের কোঠায়। দুইজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্য, কয়েকজন নামকড়া প্রাক্তন জাতীয় দলের খেলোয়াকে দিয়ে গত একদশকের বেশি সময় বিসিবিতে কিছু ব্যাক্তি দায়িত্বে থাকলেও ক্রিকেটে টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে না কেন? 

২২ বছর টেস্ট ফরম্যাটে কুলিন পরিবারের সদস্য হয়ে ১৩২ টেস্ট খেলেছে , হেরেছে ৯৯ টেস্ট। অনেক টেস্টে ইনিংস পরাজয় হয়েছে, ৩দিন ৪ দিনে হেরেছে। একমাত্র বর্তমানে তলানির দল জিম্বাবুয়েকে দেশে এবং ওদের দেশে হারিয়েছে। কিছু জয় আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৃতীয় সারির দলের বিরুদ্ধে। একটি করে জয় অস্ট্রেলিয়া ,ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে স্পিন ফাঁদ পেতে। বাকি জয়টি শ্রীলংকার বিরুদ্ধে কলম্বোতে যে জয় নিয়ে কিছু প্রশ্ন আছে। পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কোনো ম্যাচে জয় আসেনি। শুধু মাত্র ২০২২ শুরুতে নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওদের দেশে জয়টিকেই স্বস্তি দায়ক জয় বলা যায়। বেশ কিছু দিন ধরে দেশের মাটিতেও নিয়মিত টেস্ট হারছে বাংলাদেশ। কিন্তু কেন এমন অবণতি দিনের পর দিন। টেষ্ট ক্রিকেটের উন্নতি আসছেনা কেন? 

প্রতিবেদকের  ১৯৬০ দশক থেকে -২০০৫  এই অঞ্চলে খেলাধুলার সঙ্গে নানা ভাবে সম্পৃক্ত থাকার অভিজ্ঞতা আছে। ২০০৫ -২০২২ প্রবাসে থেকেও নিয়মিত অন্তত ক্রিকেট ফুটবলের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। আমার জানার সুযোগ আছে ক্রিকেট ফুটবলের হাড়ির খবর, নাড়ির খবর। প্রশ্ন করি, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ২০২২ সূচনায় তামিম, সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ বিহীন বাংলাদেশ দলের কৃতিত্বপূর্ণ জয়ের পর একাধারে ৬ টি টেস্টার পাঁচটিতে কেন শোচনীয় বিপর্যয় হলো বাংলাদেশের? 

দক্ষিণ আফ্রিকায় দ্বিতীয় সারির দলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই স্পিনারের কাছে ৫৩, ৮০ রানে সব উইকেট হারালো? কেন দেশের মাটিতে শ্রীলংকার সাধারণ বোলিং আক্রমণের মুখে বার বার টপ অর্ডার ধসে পড়লো? এতো কিছুর পরেও কেন ব্যার্থদের নিয়েই ওয়েস্টইন্ডিজের মত গুরুত্বপুর্ন ও কঠিন কন্ডিশনে সফরে গেলো?

প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে সোচনীয় ব্যাটিং ব্যার্থতার জন্য কি শুধু ব্যাটসম্যানরাই দায়ী? সাকিব , সোহান ব্যাটিং করে দেখিয়ে দিলো নিজেদের প্রয়োগ করে খেললে ব্যাটিং করা অসাধ্য কোনো কাজ নয়? কি লাভ হচ্ছে বছরের পর বহুমূলে বিদেশী কোচ রেখে? কেন ব্যাটিং ,ফিল্ডিংয়ে এমন হতশ্রী অবস্থা? কেন ঘরোয়া ক্রিকেটকে টেস্ট বান্ধব করা হচ্ছে না? কেন চারদিনের ম্যাচ বা টুর্নামেন্ট/লীগের গুরুত্ব কম। আকর্ষনীয় করা যাচ্ছেনা। কেন এ পর্যায়ের ক্রিকেট নিয়ে দায়সারা ভাব। কেনই বা জাতীয় ক্রিকেট লীগকে (চারদিনের ম্যাচের লীগ) এখন পিকনিক লীগ বলা হয়। 

এ প্রশ্নগুলোর প্রাপক তো বিসিবিই? দিন/রাত একাকার করে অনেক পরিশ্রম করে, কষ্ট করে প্রধানমন্ত্রী আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন সেক্টরের উন্নতির জন্য। এসকল কাজ করতে যেয়ে তিনি কখনও নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরাগভাজন,কখনও সরকারী কর্মকর্তাদেরও বিরক্তির কারন হন। তিনি দেশের স্বার্থে যেটুকু প্রয়োজন সেটাই করেন। সেখানে তিনি কাউকে, কোনো কিছুতেই ছাড় দেন না। তার কাছে আগে দেশ,দেশের স্বার্থ আগে। পরে অণ্যকিছু। 

অথচ ক্রিকেটের মত গুরুত্বপুর্ন একটা স্থানে তারই আস্থাভাজন হয়ে কাজ করে যাওয়া লোকজনের এমন কী সমস্যা, যে এখানে ক্রমশ ব্যার্থতার ঘানি টানতে হচ্ছে। জনমনে প্রশ্ন উঠবে এমন কাজই বা কেন হবে। কেন নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ হয়না। যদি হয়-ই, তাহলে উন্নতি নাই কেন। টানা ব্যার্থতার অজুহাত কী। দামী কোচ,তাদের হাই স্যালারী-সুযোগ সুবিধা- কোনটাতে ঘাটতি। কোথায় অর্থ সঙ্কট বিসিবি’র? তাহলে ক্রিকেটের মান উন্নত হচ্ছেনা কেন। এগুলো এখন জনমনের প্রশ্ন। টেষ্ট ক্রিকেটে এমন ব্যার্থতা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের ক্রিকেটের মান প্রশ্নের মুখে এসে দাড়িয়েছে। এসবের উত্তরটা তো বিসিবিকেই দিতে হবে,অণ্য কেউ তো এসে দিয়ে যাবে না! 


শেয়ার করুন