২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৬:২৮:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


দেশ’র রিপোর্টই সত্য হল
মামলায় পার্কচেস্টার মসজিদের নির্বাচন স্থগিত
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১১-২০২২
মামলায় পার্কচেস্টার মসজিদের নির্বাচন স্থগিত পার্ক চেস্টার জামে মসজিদ


অবশেষে পার্কচেস্টার মসজিদের নির্বাচন নিয়ে প্রকাশিত দেশ’র অনুসন্ধানী রিপোর্ট সত্য প্রমাণিত হল। আদালতের হস্তক্ষেপে স্থগিত হয়েছে পার্কচেস্টার মসজিদের নির্বাচন। গত ২০ নভেম্বর রবিবার ব্রঙ্কসের বৃহত্তম এই মসজিদের কার্যকরি কমিটি গঠনের জন্য বহুল প্রত্যাশিত এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

নির্বাচনে নতুন তালিকাভুক্ত ১০৪ জন আজীবন সদস্য নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার প্রেক্ষিতে সভাপতি প্রার্থী আব্দুস শহীদ ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কাজী সাব্বির আহমেদ আদালতের স্মরণাপন্ন হলে ব্রঙ্কস সুপ্রিম কোর্ট আগামী ৫ ডিসেম্বর শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে ততদিন পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে। আদালত কর্তৃক নির্বাচন স্থগিতের চিঠি ইতিমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আসাদুজ্জামান খান ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়নাল চৌধুরীর কাছে হস্তগত করা হয়েছে।

মামলার বাদী ও মসজিদের সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুস শহিদ জানান, ১৯ অক্টোবর নির্বাচনের প্যাকেজ সংগ্রহ করে তারা দেখতে পান ১০৪ জন নতুন আজীবন সদস্যকে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে নির্বাচনের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের দাবি অনুযায়ী এই অন্তর্ভুক্তি মসজিদের সংবিধান পরিপন্থী। মসজিদের সংবিধানে সুস্পষ্ট ভাবে বলা বয়েছে যে নির্বাচনের বছর আগস্ট মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত যারা সদস্য হবেন তারা কেবল নির্বাচনে ভোটার হিসাবে গণ্য হইবেন। ৩১ আগস্টের পরে যুক্ত হওয়া সদস্যগণ মসজিদের আজীবন সদস্য হিসাবে গণ্য হলেও চলতি বছরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ কিংবা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না।

বিষয়টি নিয়ে  নির্বাচন কমিশন বরাবরে অভিযোগ করে শাহীদ-সাব্বির প্যানেলের পক্ষ থেকে। তাদের দাবি ছিলো নতুন ১০৪ জন সদস্যকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে পুরো ভোটার তালিকা সংশোধনের। নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগের কোন সদুত্তোর না দিয়ে সকল প্রার্থী নিয়ে একটি সভা আহবান করেন। উক্ত সভায় ভোটার তালিকায় যুক্ত হওয়া ১০৪ জন অবৈধ ভোটার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কমিশনার নজরুল হক ও আলমাস আলী বিষয়টি নিয়ে তাদেরকে আদালতে যেতে বলেন।

এ ব্যাপারে উপদেষ্টা পরিষদ জরুরি সাধারণ সভা ডাকার আহবান জানালে সভাপতি জয়নাল চৌধুরী তড়িগড়ি করে সাধারণ সভা আহবান করলেও ঐ সভায় নির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে কাউকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সভা মুলতবি ঘোষণা করেন। ফলে শহীদ-সাব্বির পরিষদ কারো নিকট থেকে কোন সিদ্ধান্ত না পেয়ে সাধারণ মুসল্লীদের অনুরোধে নিরূপায় হয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হন। মাননীয় আদালত তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে ৫ ডিসেম্বর শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন স্থগিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও কার্যকরি পরিষদ বরাবরে নোটিশ প্রদান করে। পার্কচেস্টার মসজিদের বর্তমান কমিটি সংবিধান অনুযায়ী কোন দায়িত্ব পালন করছে না। তারা ইতিমধ্যে নির্বাচন না দিয়ে এক বছর কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধির অপচেষ্টা চালিয়েছে। নিয়মানুযায়ী এখন পর্যন্ত বাৎসরিক হিসাব প্রকাশ করা হয়নি। কমিটির আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে ৪ জন সদস্য উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ইতিমধ্যে মসজিদের তহবিল থেকে কোন যাচাই বাচাই না করে লক্ষাধিক ডলার অপচয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই অবস্থায় আদালতের স্মরণাপন্ন হওয় ছাড়া আমাদের কোন গত্যন্তর ছিল না। এ নিয়ে শহদি-সাব্বির প্যানেলের পক্ষ থেকে গত ২২ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনেও তারা এই সব অভিযোগ করেন।

অপরদিকে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক নুরুল এহিয়া বলেনম মসজিদের সংবিধান মেনেই নতুন ভোটার তালিকা করা হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম করা হয়নি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শহিদ-সাব্বির প্যানেল পরাজয় অনুধাবন করতে পেরে অহেতুক আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। এতে মসজিদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হলেও মামলায় তারা জিতবেন তাতে সন্ধেহ নেই। তিনি বলেন, সংবিধানে সাধারণ সদস্যদের ব্যাপারে ৩১ আগস্টের সময়সীমার উল্লেখ করা হলেও আজীবন সদস্যদের ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে এই নিয়ম মানার কথা বলা হয়নি। অতীতের কোন নির্বাচনে এই নিয়ম মানা হয়নি। এমনকি স্বয়ং মামলার বাদী শহীদ সাহেবের ছেলে ৩১ আগস্টের পরে আজীবন সদস্য হয়ে গত নির্বাচনে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে ৩১ আগস্টের পরে শহিদ সাহেব কোন কোন সদস্যকে আজীবন সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যদি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ না থাকে তাহলে কেন এই সময়ে তাদেরকে নগদ টাকা দিয়ে মসজিদের আজীবন সদস্য করা হলো। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা যখন দেখেছেন আমাদের ভোট ব্যাংক তাদের চেয়ে অনেক বেশি তখন তারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে নির্বাচন ও মসজিদের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছেন। 

তবে সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অহেতুক বিতর্ক ও মামলা মোকদ্দমাকে ভালো চোখে দেখছে না। তারা মনে করেন মসজিদের জন্য যারা নিবেদিত এবং কাজ করতে সক্ষম  তারাই কেবল মসজিদের কমিটিতে যুক্ত হতে পারেন। এই কমিটি গঠন নিয়ে অহেতুক বিভেদ বিদ্বেষ ও বিতর্ক শুধু মসজিদ নয় পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই মসজিদের স্বার্থে উভয় পক্ষকে আরো দায়িত্বশীল ও নমনীয় হওয়া উচিত। উভয়ের উচিত সমঝোতার দিকে অগ্রসর হওয়া।

শেয়ার করুন