২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৫:৩৫:০৬ পূর্বাহ্ন


সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা
অবিলম্বে দিল্লীর সাথে আলোচনা শুরু করুন - আইএফসি
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৬-২০২২
অবিলম্বে দিল্লীর সাথে আলোচনা শুরু করুন - আইএফসি


সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনার জন্য অবিলম্বে দিল্লীর সাথে আলোচনা শুরু তাগিদ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির(আইএফসি) নেতৃবৃন্দ। আজ এক বিবৃতিতে তারা এদাবি জানান। বিবৃতিতে সাক্ষর করেন, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির (আইএফসি) নিউ ইয়র্ক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু, মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান, আইএফসি, বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি ডঃ এস, আই খান, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইরফানুল বারী এবং আইএফসি সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার।

বিবৃতিতে বলা হয়, সিলেট অঞ্চলের বর্তমান বন্যা সেখানকার জনগোষ্ঠিকে আচমকা আঘাত হেনে জান-মালের বিপুল ক্ষতি সাধন করেছে। ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ বন্যা এমন এক সময় এসেছে যখন বাংলাদেশে স্বাভাবিক বর্ষার জন্য হাহাকার চলছিল। আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি মনে করে, মেঘালয় ও আসাম এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অপরিনামদর্শি উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফলে এই বন্যা সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। উজানে গাছপালা কেটে ছাপ করে ফেলায় বিপুল পরিমান বৃষ্টির পানি বিধবংসি বেগে নেমে আসে। সিলেট অঞ্চলের বাঁধ ও রাস্তা এ পানি নেমে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে এবং বন্যার ব্যাপকতা বেড়ে যায়।


বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভিবাজার, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম ও হবিগঞ্জ জেলাগুলোর মানুষ। অতি সম্প্রতি নির্মিত রাস্তাঘাট ভাটিতে পানি নেমে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করায় কিশোরগঞ্জও বন্যার কবলে পড়েছে।


এর সব কিছুর জন্য দায়ী সমন্বিত যৌথ পানি ব্যবস্থাপনার অভাব। এটা পরিষ্কার যে অপরিনামদর্শি বাঁধ ও রাস্তা নির্মিত না হলে বন্যার প্রকোপ অনেক কম হতো। দিল্লীতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পরমর্শক কমিটির বৈঠক থেকে বলা হয় পানি বিষয়ে দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করা হবে। বিবৃতিটা আসা উচিত ছিল যৌথ নদী কমিশন থেকে, কিন্তু এই কমিশন অকার্যকর। বিপুল পাহাড়ী ঢল পানির জন্য হাহাকারে পতিত বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে বিপর্যয়।


আসাম অঞ্চলে কয়েক ডজন বাঁধ আছে। এছাড়াও মেঘনা-বরাক নদীতে পানি সরবরাহকারি উজানে অবস্থিত ২৭টি নদীর প্রত্যেকটিতে বাঁধ নির্মান করা হয়েছে। এর ফলে মেঘনা ও তার শাখা নদীগুলো ভরা বর্ষায়ও তীর উপছে সিলেট-কুমিল্লা অঞ্চলের জলাভূমিগুলোতে পানি দিতে পারছেনা বিগত এক দশক ধরে। জলাভূমিগুলো এখন সারাবছরই শুকনো থাকে। স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বঞ্চিত নদীগুলোর তলদেশ ভরাট হয়ে সেগুলোর পানিবহন ক্ষমতা কমে গেছে। বন্যার ভয়াভহতা বাড়ার এটাও একটা অন্যতম কারণ।


এধরণের ভয়াভহ পরিস্থিতি ভবিষ্যতে যাতে আর না দেখাদেয় তা নিশ্চিত করতে এখনি সরকারের উচিত তার ভারতীয় প্রতিপক্ষের সাথে সংলাপের উদ্যোগ নেয়া। যেন যৌথ নদী অববাহিকাগুলো উৎস থেকে সাগর পর্যন্ত টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জীবিত রেখে দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো সুদৃড় করা যায়। একই সাথে সকল দেশপ্রেমিক জনগনের প্রতি আহবান, বন্যায় সর্বশান্ত মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সাধ্যমত সাহায্যের হাত প্রসারিত করুন।

শেয়ার করুন