২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ১১:১৬:০৫ অপরাহ্ন


এখন দুই বাংলায়ই অভিনয় করছি
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৪-২০২২
এখন দুই বাংলায়ই অভিনয় করছি রাফিয়াত রশিদ মিথিলা


দেশ’কে মিথিলা 

সমানতালে অভিনয়, গান, উপস্থাপনা ও সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। এখন অধিকাংশ সময় তিনি থাকেন শ্বশুরবাড়ি কলকাতায়। সম্প্রতি দুটি কাজ নিয়ে ঢাকায় এসেছেন। একটি গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’ আর অন্যটি একুশের বইমেলায় এসেছে তার নতুন বই ‘আফ্রিকায় সিংহের খোঁজে’। ‘কাজলরেখা’য় কঙ্কণ দাসীর চরিত্রে অভিনয় করবেন মিথিলা। এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন দেশ পত্রিকার সাথে।  


প্রশ্ন : ইদানিং ঢাকার চেয়ে কলকাতায় আপনার সময় বেশি কাটে। বিষয়টি আপনার ক্যারিয়ারে কি রকম প্রভাব বিস্তার করছে বলে মনে হয়?

মিথিলা : প্রয়োজনের কারণেই কলকাতায় বেশি সময় থাকতে হয়। তবে এটি ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব ফেলছে কি না সেটা ভেবে বলতে হবে। কারণ আমি আগে যে ভাবে কাজ করেছি এখনও সেভাবেই করছি। ইদানিং কলকাতার কাজ একটু বেশি করা হচ্ছে। ওখানে বেশি সময় থাকার কারণেই বোধয় এমনটা হচ্ছে। তবে সময়টা উপভোগ করছি। 


প্রশ্ন : কঙ্কণ দাসী নেতিবাচক চরিত্র। আপনি নাকি নিজেই চরিত্রটি নির্মাতার কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছেন?

মিথিলা : ‘কাজলরেখা’ তো রূপকথা। ছোটবেলা থেকে নানা রূপকথা পড়ে বড় হয়েছি। এসবের প্রতি আমার বেশ টান রয়েছে। দুই বছর আগে সেলিম ভাই আমাকে প্রথম ‘কাজলরেখা’র স্ক্রিপ্ট পড়ে শোনান। তখনো ঠিক হয়নি, কে কোন চরিত্র করবেন। গল্পটা শোনার পরে সেলিম ভাই বললেন, কেমন লাগল? প্রথম দিনই তাকে বলেছিলাম, কঙ্কণ দাসীর চরিত্রটি আমার অনেক ইন্টারেস্টিং লেগেছে। 


প্রশ্ন : প্রধান চরিত্র রেখে অন্য চরিত্র পছন্দের কারণ কী?

মিথিলা : প্রথমত, আমাদের আশপাশে যেসব সিনেমা হয়, সেখানে প্রটাগনিস্ট অ্যান্টাগনিস্ট সব পুরুষ থাকে। ‘কাজলরেখা’ সিনেমায় 

নায়ক কিংবা ভিলেন দুটোই নারী। এটা এই গল্পের খুব একটা ইন্টারেস্টিং দিক আমার মনে হয়েছে। মূল চরিত্রে আমি অনেকবারই অভিনয় করেছি। এখন এমন কিছু করতে চাই, যে রকম চরিত্রে আমাকে কেউ ভাববে না বা আমাকে কেউ দেখেনি এর আগে। সে জায়গা থেকেই মনে হয়েছে, একটা সিনেমার প্রধান ভিলেন চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলা অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে আমার জন্য।


প্রশ্ন : নতুন কিছু করতে চান—আপনার কাছে নতুন কিছু মানেক কী? এটা কি শুধু গেটআপের ভিন্নতা? নাকি আরও কিছু?

মিথিলা : যেমন ‘মায়া’ সিনেমার গেটআপের কথাই যদি বলি, এ রকম আমি তো করিনি আগে। আগে হয়তো হয়েছে অনেক, কিন্তু মিথিলাকে এমন চরিত্রে কেউ কখনো দেখেনি আগে, কল্পনাও করেনি। আমি তো জানি আমাকে কী চরিত্র অফার করা হয় সব সময়। এ কারণে আমার জন্য এটা নতুন ধরনের চরিত্র। একেবারে আউট অব দ্য ব্লু তো হতে পারে না, কারণ চরিত্র তো সমাজের ভেতর থেকেই উঠে আসে।


প্রশ্ন : বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের কলকাতায় গিয়ে কাজ করা, এটিকে কি আপনার কাছে বিশেষ কিছু মনে হয়? নাকি এমন মনে হয় যে, শিল্পী তো সবখানেই কাজ করতে পারে?

মিথিলা : আমার কাছে সে রকমই মনে হয়। শিল্পী তো শিল্পীই। বাংলাদেশ, কলকাতা, বলিউড, লন্ডন—সবখানেই শিল্পী কাজ করতে পারবে। শিল্পীর জন্য কাজের জায়গা বিস্তৃত হওয়া উচিত। তবে একটা বিষয় হয় যে, বড় ইন্ডাস্ট্রি, বেশি মানুষ জানবে, চিনবে সেটা হতে পারে। যেমন শুধু বাংলাদেশে কাজ করছিলাম, এখন দুই বাংলাতেই করছি, বড় ইন্ডাস্ট্রি। এ ছাড়া অভিনেত্রী হিসেবে আমার অন্য কোনো ভ্যালু অ্যাড হয় বলে আমি মনে করি না।


প্রশ্ন : কলকাতায় কাজ করাটা কি আমাদের শিল্পীরা প্রমোশন হিসেবে দেখেন?

মিথিলা : সহজ কথায়, কলকাতায় অভিনয় করাটাকে আমি প্রমোশন হিসেবে দেখি না। ধরেন আমি ম্যানেজার থেকে সিনিয়র ম্যানেজার হলাম, কলকাতায় কাজ করাটা ওই রকম কোনো প্রমোশন না। তবে এটা ঠিক যে, আরও বেশি মানুষ যদি আমার কাজ দেখতে পায়, সেটা ভালো লাগার একটি বিষয়।


প্রশ্ন : ঢাকা ও কলকাতা মিলিয়ে অনেকগুলো সিনেমা এখন আপনার হাতে। অভিনয় নিয়ে আপনার আগামীর পরিকল্পনা কী? সিনেমাই করবেন নিয়মিত? 

যদি চাইতাম তাহলে কিন্তু অনেক আগেই সিনেমা করতে পারতাম। কিন্তু তখন আমার বাচ্চা ছোট, একটা ফুলটাইম জব করছি—সময় কিছু বের করতে পারলেও সেই সময়টা পরিবার ও বাচ্চাকে দেয়া খুব জরুরি ছিল। এখনো আমি সিনেমার অফার পেলে অনেক চিন্তাভাবনা করি, কতটুকু সময় দিতে পারব। অভিনয় নিয়ে যে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা আছে বা আমি নিজেকে যে খুব ভালো আহামরি অভিনেত্রী মনে করি, সেটাও না। অভিনেত্রী হিসেবে আমি খুব উচ্চাকাংক্ষী নই।

শেয়ার করুন