০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:১৮:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


প্রথম টেস্টে শেষ ইনিংসে ৫৩ রানে অলআউটের পর এবার ৮০ তে শেষ
ক্রিকেটে যোগ হলো লজ্জার তৃতীয় মাত্রা
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৪-২০২২
ক্রিকেটে যোগ হলো লজ্জার তৃতীয় মাত্রা রান আউট না হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা লিটন দাসের। এ চিত্রটাই ব্যাটসম্যানদের গোটা ম্যাচের : ছবি সংগৃহীত


বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে লজ্জার তৃতীয় মাত্রা যোগ হলো। দেশের বাইরে কিংবা দেশে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা স্পিন বোলারদের খেলতে পারেনা, এ কথা কখনো শুনতে হয়নি। কোনো ক্রিকেটার বলেনি, যে আমি প্রতিপক্ষের স্পিনারদের ঠিকমতো খেলতে পারছিনা। কোন ম্যাচেও এরকমটা দেখা যায়নি। সেটা টি-টোয়েন্টি হোক টেস্ট কিংবা ওয়ানডে।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এমন এক লজ্জাজনক ক্রিকেট প্রদর্শিত করলেন বাংলাদেশের তামিম,মুশফিকুর,লিটন দাস প্রমুখরা। অবাক দৃষ্টিতে দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব সে দৃশ্য।  বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বিশেষ করে প্রটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজ ও সাইমন হারর্মার কে খেলতে না পেরে লজ্জাজনক এক ইতিহাসের সৃষ্টি করলো।

সারা জীবন যেসব ক্রিকেটাররা বলে আসছে আমাদের ফাস্ট ও বাউন্সি উইকেটে খেলার মত বা প্রাকটিস করার মত উইকেট নেই, সুযোগ নেই। ফলে বিদেশে ফাস্ট বোলিং এর সামনে লুটিয়ে পড়তে হয়। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড কিংবা ইংল্যান্ডে খেলতে হলে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বেশিদিন হোটেলে থেকে নিজের খরচায় ওই কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়ার জন্য তারা প্যাকটিস করে তবেই নামছেন মুল ম্যাচে। 

 কিন্তু স্পিনে কোন সমস্যা হবে এমনটা কখনই শোনা যায়নি। এ ব্যাপারে বরাবরই বলতেন, আমরা তো সবসময় ঘরোয়া ক্রিকেট বা ঘরোয়া হোম সিরিজ গুলি স্পিন-সহায়ক উইকেটে এমনকি নিউজিল্যান্ড সাউথ আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়া এরকম বড় দেশ যখন বাংলাদেশে আসে তখন স্পিনিং উইকেট তৈরি করেসেখানে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে আসছে। এমনকি অনেক ইনিংসে প্রথম থেকেই বা প্রথম ওভার থেকেই স্পিন অ্যাটাক করা হতে দেখা গেছে।

 আজ সেই বাংলাদেশ দল স্পিনের সামনে দাড়াতেই পারে না। দক্ষিণ আফ্রিকা যে দুটি টেস্ট ম্যাচে হেরেছে দুটোতেই স্পিনে পরাস্ত হতে হয়েছে। বাংলাদেশ প্রথম টেস্টে ডারবানে অনুষ্ঠিত ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করে ৩৬৭ রান করেছিল জবাবে বাংলাদেশ করে ২৯৮ রান দক্ষিণ আফ্রিকা ২০৪ রানে অলআউট হলেও বাংলাদেশের একটা চান্স ছিলো। কিন্তু কেশব মহারাজ ও সাইমন হারবার এর বোলিংয়ের সামনে ৫৩ রানে অলআউট হয়ে লজ্জায় ডুবে। কেশব মহারাজ নেন ৭ উইকেট ও বাকী তিনটি হার্মারের। 

বলা হয়েছিল এটা একটা দুর্ঘটনা মাত্র।

 দ্বিতীয় টেস্টে অর্থাৎ পোর্ট এলিজাবেথ এ পেস সহায়ক হবে এরকমটাই ধারণা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রস্তুতিও সেভাবেই। কিন্তু প্রথম ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৫৩ রান করে। জবাবে বাংলাদেশ ২১৭ রানে অলআউট, দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের তোপের মুখে পরে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং করতে নেমে ১৭৬ রান করে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে। জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে ছিল বড় চাপ। কিন্তু বাংলাদেশ ডারবান টেস্টের মত এ ইনিংসে অলআউট মুহুর্তেই। ৮০ রান করতেই অলআউট হয়ে যায় তামিম,মুশফিক,লিটনরা। 

এ যেন আগের টেস্টের কার্বনকপি। প্রতিশ্রুতি প্রতিচ্ছবি কেশব মহারাজ এমন হার্মারে বিধ্বস্ত। সেই একই রকম কেশম মহারাজ সাত ও হার্মার নেন তিন উইকেট। 

 একেবারে ডারবান টেস্টের কার্বন কপি বাংলাদেশ ২৩.৩ ওভারে অল আউট,ম্যাচের চতুর্থ দিনে। বাংলাদেশ অসহায় আত্মসমর্পণ করে ফিরে আসে। ব্যাটসম্যানের সবারই একই চিত্র। দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে পারেন নাই অথচ বাংলাদেশের স্পিনের বিরুদ্ধে সুন্দর একটা ব্যাটিং উপহার দেয়ার ছিল প্রত্যাশা। 

কেশব মহারাজ ও হার্মার এমন কোন বোলার হয়ে যায়নি যাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ ব্যাটিং করতে পারবে না। যদি তাই হতো, উইকেটে যদি সেরকম থাকতো, তাহলে বাংলাদেশের ও তাইজুল মিরাজ পটিয়া ইনিংস গুটিয়ে দিতে পারতো। কই সেটা তো হয়নি। ফলে স্পিনেও বাংলাদেশ ব্যার্থ এমন এক তকমা নিয়ে লজ্জাজনক এক পরাজয়ে শেষ করলো তারা টেস্ট সিরিজ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিন আফ্রিকা: ৪৫৩ ও ১৭৬/৬ ডিক্লে:।

বাংলাদেশ : ২১৭ ও ৮০/১০ (২৩.৩ ওভার)।

ফল: দক্ষিন আফ্রিকা ৩৩২ রানে জয়ী ও সিরিজে ২-০ তে জয়লাভ। 

ম্যান অব দ্যা সিরিজ: কেশব মহারাজ।  

শেয়ার করুন