০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:৫৫:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


তবুও শঙ্কা যানজট মশা ও জ্বালানি বিদ্যুতে
রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে মহাবিপদ
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০১-২০২৩
রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে মহাবিপদ


সমালোচকরা বলতেই পারেন বর্তমান সরকারের আমলে বাস্তবায়িত অ্যান্ড বাস্তবায়নরত মেগাপ্রকল্পগুলোর কয়েকটিতে যথাযথ পরিকল্পনার অভাব সুস্পষ্ট, বাস্তবায়নে দুর্নীতির কারণে ব্যয়বৃদ্ধি পেয়েছে ক্ষেত্রবিশেষে। তবে পদ্মা বহুমুখী সেতু, কর্তফুলী টানেল, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনাল, যমুনা নদীতে রেলসেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ, মাতারবাড়ি জ্বালানি বিদ্যুৎ হাব, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা বন্দর, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসমূহের কাজ, পাশাপাশি বাস্তবায়ন করার সাহস আর দৃঢ়তার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যাকে বাহবা দিতেই হবে। 

কঠিন সময়ে এই মেগাপ্রকল্পগুলো একে একে সমাপ্তির দিকে এগিয়ে চলেছে। সঠিক নিয়ম মেনে সঠিক সময়ে প্রকল্পগুলো চালু করার ধৈর্য ধরতে হবে। তাড়াহুড়ো করছে ক্ষেত্রবিশেষে রাজনৈতিক ফায়েদা নেয়ার জন্য। আমি শঙ্কিত অব্যাহত মহাযানজট, মহানগরীতে মশা বিস্ফোরণ, ২০২৩ সম্ভব্য জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে।

মহানগরীতে মশা এখন মহামারীর মতো। কোথাও স্বস্তিতে একদণ্ড বসা বা দাঁড়ানোর অবস্থা নেই। বলা হচ্ছে প্রতিনিয়ত মশা নিধন কার্যক্রম চলছে। তাহলে মশার এতো উৎপাত কেন? নিধন হলে এগুলো কোন রাজ্য থেকে আসে। ভিআইপি বা রাজউকের কিছু কিছু প্রজেক্টে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ মশার। কিন্তু অন্যত্র ভীষণ বাজে অবস্থা। মানুষ মশায় অতিষ্ঠ। 

কেন দুই চটপটে মেয়র মশা মারার কেরানি হতে পারছেন না? তাদের মুখে বেশ রসবোধ প্রত্যক্ষ করেন মানুষ। কিন্তু রাজধানীর ভুক্তভোগীরাই কেবল জানেন আসলে মশা নিধন নামে কী হচ্ছে। কেন ঢাকার অসহনীয় জানজট, শব্দদূষণ, পরিবেশদূষণ রোধ করা যাচ্ছে না? এ থেকে উত্তরণের কোনো পদক্ষেপ মানুষ দেখছেন না। মানুষ এখন চরম হতাশ। মানুষ ক্রমশ ধরেই নিয়েছেন এ থেকে সহসাই মুক্তির কোনো উপায় নেই। কীভাবে মুক্তি মিলবে সেটাও তাদের জানা নেই। অথচ এ নিয়ে দুই মেয়রের অনেক কিছুই করার আছে। সেটা করলে সাধারণ মানুষকে নিয়েই তারা করতে পারেন। কিন্তু জনগণের কাছে কী তারা যান? মানুষের কষ্টের কথা শুনে কোনো প্ল্যান বা কষ্ট লাগবের কথা শোনান। সবই কী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব। 

কোথায় কোন আনাচে-কানাচে কি হবে সেটাও প্রধানমন্ত্রী বলে দেবেন? তার হুকুম ছাড়া কিছুই কী করতে পারবেন না বড় বড় দায়িত্বপ্রাপ্তরা? বলছি রাজধানীর কথাই। মেয়রদের ইচ্ছে থাকলে তাদের সামর্থ্যরে মধ্যেও অনেক কিছু করা সম্ভব। কিন্তু রাজধানীবাসীর অন্তত বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন মেয়ররা সে কাজগুলো করতে আন্তরিক নন। যেটুকু করেন লোক দেখানো। বাস্তবে সাধারণ মানুষের উপকার হয় এমন কাজগুলো থেকে দূরে তারা। 

এমন চিত্র শুধু রাজধানীতেই নয়, দেশের বহু স্থানেই। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলবেন, জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য। তাদের কথা শোনার জন্য। তাদের সমস্যাগুলো জনগণকে সাথে নিয়ে সামর্থ্যরে মধ্যে থেকে করার জন্য। কিন্তু প্রতিটা গ্রামগঞ্জের মানুষ জানেন, তাদের নেতা বা প্রতিনিধিরা তাদের কাছে কতক্ষণের জন্য যান বা আদৌ খবরটুকু রাখেন কি-না।   

আমি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের মেগাপ্রকল্পসমূহের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছি। জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান নিয়ে সুপারিশ করছি। 

২০২৩ গভীর সংকট ঘনিয়ে আসছে। জাতীয় সংকট জাতীয় ভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। মেগাপ্রকল্পসমূহের সুফল পেতে ধৈর্য ধরতে হবে। তাড়াহুড়ো করলে হিতে বিপরীত হবে। আওয়ামী লীগ সরকার তিন টার্মে ক্রমাগত দেশ পরিচালনার দায়িত্বে। অনেক সাফল্যের রিপোর্টে ব্যর্থতায় আছে বেশকিছু। সবচেয়ে বড় অসুবিধা সমন্বয়ের অভাব, দুর্নীতি আর ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা।  

আশা করি, বৈষয়িক সংকটকে সামনে রেখে রাজপথে সরকার আর বিরোধীদল অচল অবস্থা সৃষ্টি করবে না। দেশটা সবার। কেউ এর একক দাবিদার নয়। দেশ উন্নতিতে সবারই সহযোগিতা প্রয়োজন। সবারই করের বা ট্যাক্সের টাকায় উন্নয়ন হয়। ফলে এ সাফল্যের দাবিদার ১৬ বা ১৮ কোটি বাংলাদেশি সবার। 

ফলে দেশে কোনো সংঘাত, সংকট সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে, এটা সবারই মনে রাখা উচিত। ফলে ন্যূনতম ইস্যুর ভিত্তিতে রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে মহাবিপদ। সাধারণ মানুষ এগুলো বেশ ভালোই মনে রাখেন এবং জবাব দেয়ার প্রয়োজন যখন ঠিক তখনই তারা জবাব দেন। এ কথাগুলো রাজনীতিবিদরা মাঝে মধ্যেই ভুলে যান। অথচ এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয়।

শেয়ার করুন