০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:২৭:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


ঝড় আসুক অর্থপাচারকারীদের মুখোশ উন্মোচনের
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১০-২০২৩
ঝড় আসুক অর্থপাচারকারীদের মুখোশ উন্মোচনের


বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এখন ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণহত্যা সমর্থনকারী কিছু পশ্চিমা সরকার এখন অনেক তৎপর। বিষয়টি তীব্র অর্থনৈতিক সংকট, মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকটের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। দেশ প্রবাসে বর্তমান সরকারের তিন টার্মে ১৫ বছরের রাষ্ট্র শাসন নিয়ে সত্য-মিথ্যা নানা প্রচারের মধ্যে বাংলাদেশের একটি দৈনিকে ‘আসছে মার্কিন ঝড়’ শিরোনামে একটি লেখা, লিখেছেন একজন প্রখ্যাত সংবাদিক। 

ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কিছু টকশোতে নির্বাচনী আলাপে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ইঙ্গিত দিয়েছে জরুরি আইন জারির। জনমনের একাংশের মনে প্রশ্ন মার্কিন ঝড় কেন আসতে হবে বাংলাদেশে? ঝড়টি কি? দেশের সমস্যা সংকট কি সরকারি দল এবং বিরোধীদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে আপস রফায় সমাধান করা যায় না? হামাস ইসরায়েলে ঝড় তোলার প্রতিক্রিয়ায় প্যালেস্টাইনে নির্দয় গণহত্যা শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। সেই ঝড় সামাল দিতেই ব্যতিব্যাস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তি। আবারো বিশ্বে জ্বালানি বাজার অস্থির হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনীতি প্রচ- চাপে পড়বে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ঝড় তুলে কি অর্জন করবে মার্কিন সরকার? 

১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭ম নৌবহর পাঠিয়েও বাংলাদেশের অভ্যুদয় রুদ্ধ করা যায়নি। অক্টোবরে কিছু হওয়ার নেই। নভেম্বরেও কিছু হবে না। ডিসেম্বরের শেষে অথবা ২০২৪ জানুয়ারির শুরুতে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হবে নতুন সরকার। সেই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক করার জন্য নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনার বিষয়টি এখন গুরুত্বপূর্ণ। ঝড় কিছু হবে না। ভারত মহাসাগরে নিয়মিত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। কয়টি ঝড় উপকূলে আঘাত হানে? 

বাংলাদেশ ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। দেশের আছে গঠনতন্ত্র।  নানা সমস্যা সংকট এড়িয়ে দেশটি অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলছে উন্নয়নের পথে। আছে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ, মানুষ সৃষ্ট নানা সংকট। ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থপাচার। এই দেশে এযাবৎ কোনো নির্বাচন কখনো ১০০ ভাগ নিরপেক্ষ হয়নি। মেনে নিতে দ্বিধা নেই ২০১৪ ও ২০১৮ নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ আছে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে মুক্ত বিশ্ববিবেকের সামনে একপেশে নির্বাচন করে পার পাবে না সরকার। তাই বলে বিরোধীদলের দাবির মুখে সরকার প্রধানকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিয়ে অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে ১৯৯০ অথবা ১৯৯৬ মত সেই ধরনের জনসম্পৃক্ত আন্দোলন কিন্তু দেশে গড়ে ওঠেনি। শত বাধাবিপত্তি পেরিয়েও বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল আছে। বিশাল উন্নয়নযজ্ঞের আড়ালে অনেক দুর্নীতি হলেও দেশের অর্থনীতি বিকাশমান। বর্তমান বহুধা বিভক্ত বিশ্বে বর্তমান সরকার কিন্তু বন্ধুহীন নয়।

তবে বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি সংকট পথে। দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়। রফতানি বাড়লেও মুদ্রাস্ফীতির কারণে এবং বৈধপথে রেমিট্যান্স-প্রবাহ কমে যাওয়ায় বাড়ছে না বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়। এরই মধ্যে অদূরদর্শী পরিকল্পনার কারণে আমদানিকৃত জ্বালানি নির্ভর জ্বালানি নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আগামী সরকারের জন্য তৈরি হয়ে আছে নানা চ্যালেঞ্জ। দেশ থেকে বিপুল বিদেশি মুদ্রা পাচার হয়ে গেছে।  ঠুটো জগন্নাথ দুর্নীতি দমন কমিশনকে অনেকেই বলছেন দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। 

বাস্তবতা স্বীকার করে এবং জনগণের কাছে ভুল স্বীকার করে সৎ, তৃণমূল জনগণের  কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের মনোয়ন দিয়ে নির্বাচনে আসলে সরকারি দলের নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভয় পাবার কারণ নেই। এতে ঝড়ের ভয় বা জরুরি আইনের জুজুর ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। তবে ঝড় উঠুক, ঝড় আসুক, সে ঝড় বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়ার। বন্ধুপ্রতিম পশ্চিমাশক্তি এ বিষয়টা নিশ্চিত করতে পারে একটা ঝড়ের মধ্য দিয়ে। যে ঝড়ের প্রত্যশা বাংলাদেশের আপামর মানুষের। বাংলাদেশের মানুষ এমন ঝড়ের প্রত্যাশাও করে। কারণ এমন অর্থপাচারকারীরা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে খাদের কিনারায় নিয়ে গেছে। রিজার্ভে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে দিয়েছে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশগুলোতে অর্থপাচারকরি দুর্নীতিপরায়ণ গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচন হোক এটি সচেতন দেশবাসী সবাই চায়। এদের শাস্তি নিশ্চিতকরণটাও চায়।  তাই বলে এর বাইরে অন্য কোনো ঝড়ে বাংলাদেশ কোনো বিদেশিদের কাছে নত হবে এমনটা ভাবার সম্ভবত কোনো কারণ নেই।

শেয়ার করুন