২০ মে ২০১২, সোমবার, ০৬:০০:৪৮ পূর্বাহ্ন


সিন্ডিকেটের কারসাজিতে জনদুর্ভোগ ঘনীভূত
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১১-২০২৩
সিন্ডিকেটের কারসাজিতে জনদুর্ভোগ ঘনীভূত


গভীর সংযোগ থেকেই জানি বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়। অযথা ঝামেলা পছন্দ করে না। মিডিয়ার কল্যাণে নানা সময়ে বিভ্রান্তি ছড়ালেও সবাই মোটামুটি জানে বিশ্ব পরিস্থিতি, বাংলাদেশ নিয়ে বিশেষ বিশেষ দেশের অতি আগ্রহ। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উৎবেগ, উৎকণ্ঠা আছে সাধারণ মানুষের মনে অনিশ্চতা নিয়ে। তবে সাধারণভাবে সব কিছুই যেন গা সহা হয়ে গাছে। ঢাকার যান জটে কিছুটা হলেও স্বস্তি আস্তে শুরু করেছে এলিভেটেড এক্সপ্রেস এবং মেট্রোরেল। তবে এগুলোর সঙ্গে সমন্বিত করে ঢাকার চার পাশে বৃত্তাকার সড়ক এবং জলপথ যোগাযোগ উন্নত করা সম্ভব হলে পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি সহনীয় আছে। গ্যাস সঙ্কট আছে থাকবে। গৃহস্থালী গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে এলপিজি নেটওয়ার্ক বিন্যস্ত করা জরুরি। ধীরে ধীরে যতটা সম্ভব গৃহস্থালী এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকদের গ্যাস ব্যবহার সংকুচিত করতে হবে। আগামী দিনে শিল্পকে গ্যাস সরবরাহ সর্বাধিক গুরুত্ব দিকে হবে না হয় কোনোভাবেই বাংলাদেশ দীর্ঘস্থায়ী জ্বালানি নিরাপত্তা স্থিতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারবে না। 

যে কথা বলছিলাম, স্বল্প আলোচনায় এবং ইতিমধ্যেই আমার বাংলাদেশের বিশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে জেনে গেছি সরকার বিরোধী আন্দোলনে এখনো জন সংযুক্তি ঘটেনি। সাধারণ মানুষ সরকারি এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা নেত্রীদের প্রতি বৃতশ্রদ্ধ। ডলার সংকটে বাণিজ্য, শিল্পগুলো সংকটে। সকল ক্ষেত্রেই সরকারি দল ঘনিষ্ট সিন্ডিকেটের কারসাজিতে জন দুর্ভোগ ঘনীভূত হচ্ছে। সরকার প্রধানের সাহস এবং দৃঢ়চেতা কারণে তৃণ মূলে সরকারি দল এখনো জনপ্রিয়। কিন্তু কিছু মন্ত্রী সাংসদের জন বিচ্ছিন্নতার কারণে জনগণ বিভ্রান্ত। জনগণ বিএনপি এবং অন্যান্য দলের নেতা নেত্রীদের সততা বা দক্ষতার বিষয়েও সন্ধিহান। এমতা বস্তায় সরকারি দল দ্রুত তৃণমূলে জনঘনিষ্ট মানুষদের মনোনয়ন দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে পুনরায় সরকার গঠন করতে পারবে। কোন আশায় কোন ভরসায় বিরোধী দল সরকারের পতন ঘটাতে চায় বোধগম্য নয়।

সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে সন্দেহ নেই। কিন্তু আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বর্তমান সরকার প্রধানের বিকল্প খোদ সরকারি দলেই কেউ আছে বলে মনে হয় না। সরকার প্রধানের বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাঘ ছাগলে এক ঘাটে পানি খাচ্ছে বাংলাদেশে। এই সহজ সমীকরণ মেধাবী প্রজন্ম বুঝতে পারলেও হটকারিতা করছে কিছু একশ্রেণীর এলিট গোষ্ঠী। অথচ ব্যাবসায়ী সমাজ, পেশাদার গোষ্ঠী কোনোভাবে ব্যাবসা বান্ধব সরকারের পরিবর্তন চাইছে না। যেভাবে বর্তমান সরকার প্রধান বিশ্ব সংকটে নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন, প্রভাবশালী পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে চোখে চোখ রেখে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন সেটি অন্য কারো পক্ষেই সম্ভব হবে না। 

আমি মনে করি, সর্বাধিক স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেও সরকারি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। একটি  গৃহ পালিত বিরোধী দলের পরিবর্তে শক্তিশালী বিরোধী দল সংসদে আসলে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সুশাসনের জন্য প্রধান বাঁধা সেটি বাংলাদেশের বাস্তবতায় প্রতিষ্ঠিত। বর্তমান অবস্থায় সরকারি দলের  উচিত  রাজনৈতিক সংঘর্ষে না জড়িয়ে নির্বাচন কমিশনকে স্বচ্ছ নির্বাচন পথ নকশা ঘোষণায় সহায়তা করা। নির্বাচন তফসিল ঘোষিত হলে অস্তিত্বের স্বার্থে  নির্বাচনে না এসে বিকল্প থাকবে না বিরোধী দলগুলোর। 

তবে ঢাকার প্রতিটা মুহূর্ত আমাকে বেশ টানে। পরবাসে থেকে এ টান এখন মনে হচ্ছে বেড়ে গেছে বহুঅংশে। একটি দিনের কথা বলছি- হেমন্তের শেষে প্রকৃতিতে শীতের আমেজ। রাজধানী ঢাকা উত্তরায় সকালে প্রাত ভ্রমণ তথা উত্তরা পার্কে কয়েক জন বন্ধু, পিঠে, সব্জি, মাছ বিক্রেতার সঙ্গে আমারস্বভাবজাত আলোচনা করলাম। উত্তরা থেকে বনানী বন্ধুর অফিস যাওয়ার সময় প্রথমবারের মত এলিভেটেড এক্সপ্রেস ব্যবহার করলাম। টোল প্লাজার আশপাশটা আরো একটু নান্দনিক হতে পারে, টোল আরো একটু কমালে ব্যবহার আরো বাড়বে। ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শ্রীলংকা গুরুত্বপূর্ণ খেলা। চ্যানেল আই সহযোগী রেডিও ভূমিতে আমি সময় পেলেই খেলা নিয়ে বিশ্লেষণ করি। কাল ব্যাতিক্রম হয়নি। নতুন প্রজন্মের কিছু তরুণ তরুণীদের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলাধুলো থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিরতিতে নানা উপাদেয় খাবার খেলাম। বিশেষত বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রত্যাশিত জয় ছিল উপভোগের। আমার উপস্থিতি জেনে কিছু পরিচিত জন দেখা করতে এসেছিলো। অনুসন্ধিসু মন কৌতহল নিয়ে অনেক কিছু জানলাম, শুনলাম। স্বল্প আলাপে যা বুঝলাম বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কিছু এলিট শ্রেণী আগ্রহ থাকলেও সাধারণ মানুষ খুব কিছু ভাবছে না। যত দিন যাবে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণের সময় ব্যাপক আলোচনা করবো। বাংলাদেশের মেধাবী নতুন প্রজন্ম সব কিছুই জানে বুঝে। আর তাই আর দীর্ঘ দিন অধিকাংশ মানুষকে বিভ্রান্তিতে রেখে অধিকার বঞ্চিত রাখা যাবে না।

শেয়ার করুন