০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০১:৬:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
‘অনেকে বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষকে ক্ষমতায় আনার জন্য কাজ করছে’
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১২-২০২৩
‘অনেকে বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষকে ক্ষমতায় আনার জন্য কাজ করছে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ ছবি সংগৃহীত


আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয় দলকে ক্ষমতায় আনতে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিলের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে দেশবাসী।


তিনি বলেন, “নির্বাচন বাতিলের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অনেকে আন্তর্জাতিকভাবেও জড়িত। তারা বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষকে ক্ষমতায় আনার জন্য কাজ করছে। আমরা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেব।” আজ সকালে টুঙ্গিপাড়ায় সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, “আগামী ৭ জানুয়ারি আমাদের নির্বাচন। নৌকা মার্কায় আমরা ভোট করবো। আপনারা সকালে সকলে সশরীরে এসে ভোট দিয়ে এই বিশ^কে দেখাবেন যে এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং আমরা তা করতে জানি ও করতে পারি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আমরা করতে পারি।”


তিনি বলেন, আমি ৩ শ’ আসন দেখি। আর আমাকে দেখেন আপনারা। কাজেই এটাই হচ্ছে আমার সব থেকে বড় পাওয়া, আমার মত একজন সৌভাগ্যবান প্রার্থী বাংলাদেশে আর নেই। এটা হলো বাস্তবতা। তার কারণ আপনারা। আপনারাই আমার দায়িত্ব নেন। আপনারা আমাকে দায়মুক্ত করে রেখেছেন বলেই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করতে পারছি।


“আমি একজন প্রার্থী হিসেবে নৌকা মার্কায় ভোট চাই, ভোট দেবেন তো?”


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই প্রশ্নের উত্তরে সমস্বরে চিৎকার করে জনতা দুই হাত তুলে ভোট প্রদানের সম্মতি জানায়। “আমি জানি আপনারা দেবেন,” প্রতিউত্তর দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সোয়া ১১টায় সমাবেশস্থলে পৌঁছান এবং সমাবেশে জাতীয় পতাকা নেড়ে জনতাকে শুভেচ্ছা জানান। সমাবেশটি একটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে বোমা মেরে ফিলিস্তিনে নারী শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে (এখানে বাংলাদেশে) একই কাজ করেছে তারেক জিয়া। বাংলাদেশে এ সমস্ত দুর্বৃত্তায়ন চলবে না। আল্লাহ যদি দিন দেয় আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে পারলে-ওই লন্ডনে বসে হুকুম দেবে আর দেশের মানুষের ক্ষতি করবে, দেশের মানুষ মারবে সেটা হতে পারে না। দরকার হলে ওটাকে ওখান থেকে ধরে এনে শাস্তি দেওয়া হবে, ধরে এনে শাস্তি দেব।


নির্বাচন বানচাল করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তৃতীয় পক্ষ কী করতে পারে? দেশের কোনো উন্নতি করতে পারে না। ২০০৭-এ আপনারা দেখেছেন কী করেছে। তার আগে তো জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া, এরাই তো ছিল, মানুষের তো কোনো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি! মানুষ তো যে অন্ধকার-অন্ধকারেই ছিল। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। দেশের মানুষ নিরাপদ থাকুক। দেশের উন্নতি তরান্বিত হোক। আর তারা বারবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কিন্তু এটা করেও তারা সফল হতে পারছে না।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ২০২৬ সালে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে জানিয়ে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই এই যাত্রা সফল করতে পারে। আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ পারবে না। কারণ, বিএনপি-জামায়াতের সে যোগ্যতাই নাই। কারণ, বিএনপি হচ্ছে খুনিদের পার্টি আর জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের পার্টি।

বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখনো বিদেশে কয়েকজন রয়ে গেছে। নূর, রশিদ, ডালিম, মুসলেহ উদ্দিন, রাশেদ এখনো ফেরারি। তাদের আনার জন্য বিদেশের সঙ্গে আমরা আলোচনা চালাচ্ছি, আইনগত ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।


তিনি বলেন, আমি জানি না কেন আমেরিকা সেই খুনি রাশেদকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। কানাডা নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। ডালিম আর রশিদ পাকিস্তান আর লিবিয়াতে যাতায়াত করে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা আছে ওই খুনিদের ধরে এনে আমরা রায় কার্যকর করবো। জাতির পিতার হত্যাকারীদের রায় আমরা কার্যকর করব। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে আমরা নিয়ে এসেছি। ওদের রায় আমরা কার্যকর করেছি।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার জনসভা শেষে কোটালিপাড়ায় যান শেখ হাসিনা। সেখানে একটি নির্বাচনী জনসভায় যোগদান শেষে মাদারীপুরে আরেকটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন তিনি।


এর আগে দুই দিনের সফরে গতকাল শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সড়ক পথে বরিশাল যান শেখ হাসিনা। বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভায় যোগদান শেষে সন্ধ্যায় নিজের পিতৃভূমিতে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। নির্বাচনী এ সফরে শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে তার ছোট বোন শেখ রেহানা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা।


এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর  সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহ পরান (রহ.) এর মাজার জিয়ারত এবং  এরপর সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নির্বাচনী জনসভার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন আওয়ামী লীগ প্রধান। টুঙ্গিপাড়ার জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, রেড ক্রিসেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন, অভিনেতা মীর সাব্বির, অভিনেত্রী তারিন জাহান প্রমুখ। তথ্যসূত্র বাসস।

শেয়ার করুন