০৩ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ০৪:৩০:১০ পূর্বাহ্ন


মব সৃষ্টি করে হেনস্থা ন্যায্য বিচারের দৃষ্টান্ত নয় : সাকি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৬-২০২৫
মব সৃষ্টি করে হেনস্থা ন্যায্য বিচারের দৃষ্টান্ত নয় : সাকি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জোনায়েদ সাকি


মাসব্যাপী জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি এবং ১০,১১,১২ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সম্মেলন ঘোষণা করে গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বিচারের আগেই মব সৃষ্টি করে তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে অপরাধীর বিমানবিকীকরণের যে উদাহরণ সৃষ্টি হচ্ছে তা মোটেই ন্যায্য বিচার প্রতিষ্ঠার কোন দৃষ্টান্ত নয়। তিনি বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা ন্যায়বিচার দেখতে চাই, বিচারের নামে কোন প্রহসন কিংবা মব বিচার যাতে আর কোনোভাবেই চলতে না পারে সেজন্য সরকারকে অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

গত ২৪ জুন মঙ্গলবার হাতিরপুল দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা এবং দলের সদস্য নবায় ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, লিখিত বক্তব্যে তিনি দলের ৫ম জাতীয় সম্মেলন আগামী ১০,১১,১২ অক্টোবর তারিখ এবং জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৪ জুলাই- জুলাই যোদ্ধা এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের সম্মিলন। ৫ জুলাই- গণসংহতি আন্দোলনের তরুণ জুলাই যোদ্ধাদের নতুন বাংলাদেশ ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় ও বিশেষ জাতীয় বর্ধিত সভা। ১৬ জুলাই - শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিবিজড়িত রংপুর জেলায় জুলাই সমাবেশ। ২৫ জুলাই - ঢাকায় জুলাই গণসমাবেশ। ১ আগস্ট- শহীদ জুলফিকার শাকিলের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকার মিরপুরে জুলাই সমাবেশ। ৪ আগস্ট- জুলাই- আগস্টের শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। এছাড়াও বিভিন্ন বন্ধু প্রতীম গণসংগঠসমূহ মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি। 

এদিকে সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা গভীর পরিতাপ ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে দেশে এক ধরনের মব তৈরি করে হামলা, অবমাননা, নির্যাতনের সংস্কৃতি চালু হচ্ছে, এটা অত্যন্ত বিপদজনক। এর আগে সংখ্যায় কম এমন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপরে আক্রমন হয়েছে, মাজারে আক্রমণ হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উপরে আক্রমণ হয়েছে, বিভিন্ন ব্যক্তির উপরে আক্রমণ হয়েছে। অভ্যুত্থানের ১০ মাস অতিবাহিত হলেও এসব ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর কোন ভূমিকায় আমরা দেখতে পাইনি বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের উপস্থিতি থাকলেও নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। আমরা এরকম পরিস্থিতিতে সরকারের এবং আইনশৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিত সকল বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখতে চাই। শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারলে চলবে না অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। সম্প্রতি ১৮ সালের নৈশ নির্বাচনের হোতা শামসুল হুদাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে জুতার বারি দেওয়া বা জুতার মালা গলায় পরানোর ঘটনা আমরা দেখলাম। বাংলাদেশে ১৪, ১৮ ও ২৪ এর প্রহসনে নির্বাচনের পেছনে যারা ছিলেন তাদের প্রত্যেকেরই এসব নির্বাচনের ও গণতন্ত্র ধ্বংসের দায় আছে এবং তাদের সকলকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। কিন্তু বিচারের আগেই তাদের মব সৃষ্টি করে হেনস্থা করনের মাধ্যমে অপরাধীর বিমানবিকীকরণের যে উদাহরণ সৃষ্টি হচ্ছে তা মোটেই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কোন দৃষ্টান্ত নয়। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা ন্যায় বিচার দেখতে চাই বিচারের নামে কোন প্রসসন কিংবা মব বিচার যাতে আর কোনোভাবেই চলতে না পারে সেজন্য সরকারকে অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

এছাড়া ও তিনি গতকাল জাতীয় নাগরিক পার্টির অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে এ বিষয়ে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে আহ্বান জানান। তিনি সামগ্রিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দিপক কুমার রায়, কেন্দ্রীয় সদস্য আলিফ দেওয়ান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, জাতীয় পরিষদ সদস্য পপী রানী সরকার, তৌহিদুর রহমানসহ আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ।

শেয়ার করুন