২০ সেপ্টেম্বর ২০১২, শুক্রবার, ০৫:১৬:৬ অপরাহ্ন


দেশকে কেয়া পায়েল
এ ধরনের ঘোষণা আমি কোথাও দিইনি
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৯-২০২৪
এ ধরনের ঘোষণা আমি কোথাও দিইনি কেয়া পায়েল


কেয়া পায়েল। তরুণ প্রজন্মের অভিনয়শিল্পী। এখন নাটকের কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। গতমাসে তার অভিনীত বাস ট্রিপ নাটকটি প্রেন্ডিংয়ে ছিল। এই মাসে টেলিভিশনে প্রচার শুরু হয়েছে নতুন ধারাবাহিক ‘শিউলি মালা’। এসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির 

প্রশ্ন: দেশের নাটকের নিয়মিত মুখ আপনি। সিনেমায় কাজ করছেন না কেন?

কেয়া পায়েল: কেন শব্দটির সহজ উত্তর হচ্ছে আমাকে কেউ সিনেমায় নিচ্ছেন না। মানে আমি যেরকম কাজ চাই সে রকম কাজ পাচ্ছি না। কিছু সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছিলাম। করা হয়নি। তাই আপাতত শুধু নাটক করছি। সিনেমা নিয়ে ভাবছি না। যদি ভালো গল্প পেয়ে যাই, আমার সবকিছু পছন্দ হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই করব। আমিও তাই অপেক্ষায় আছি।

প্রশ্ন: নতুন শিল্পীদের ধারাবাহিকে বেশি সময় দেওয়া উচিত। কিন্তু আপনাকে একক নাটকে বেশি দেখা যায়। এর কারণ কি? 

কেয়া পায়েল: ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ধারাবাহিকে কম অভিনয় করেছি। চেষ্টা করেছি, আগের তুলনায় কাজ কমিয়ে দিয়ে আরও ভালো কিছু করার। এখনও চেষ্টা চলছে। আমার কাজের ফর্দ ঘাটলেই এর প্রমাণ মিলবে। এই মাসে ‘শিউলি মালা’ নামে নতুন একটি ধারাবাহিক প্রচার শুরু হয়েছে দ্বীপ্ত টিভিতে। দুই বছর আগে এ নাটকে অভিনয় করেছিলাম। পারিবারিক গল্পের এ নাটকটি পছন্দ হয়েছে। খলিল জিবরান দারুণ লিখেছেন। গোলাম সোহরাব দোদুল একজন গুণী নির্মাতা। গল্প ও চরিত্রই আমাকে নাটকের কাজে আগ্রহী করে তুলেছে। বেশ ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজটি করেছি। 

প্রশ্ন: শিউলি মালা’র গল্প কী নিয়ে? 

কেয়া পায়েল: শিউলি আর মালা। দুই বোনের জীবনসংগ্রামের গল্প উঠে এসেছে ধারাবাহিকটিতে। মফস্বল শহরে তাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বাবা তমিজউদ্দিনকে সবাই চেনে একজন গুণী শিল্পী হিসেবে। এক বছর হলো প্যারালাইজড হয়ে ঘরে পড়ে আছেন। শিউলি মাস্টার্স শেষ করতে পারেনি, তার আগেই সংসার চালাতে নেমে গেছে টিউশনিতে। তবে মালা যথেষ্ট মেধাবী হওয়ায় সে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায় মেধাবৃত্তি নিয়ে। টানাপোড়েনের সংসারের গল্প নিয়ে এগিয়ে যাবে ধারাবাহিকটি। এখানে আমি অভিনয় করেছি মালা চরিত্রে। আর শিউলি চরিত্রে রয়েছেন মৌসুমী হামিদ। 

প্রশ্ন: জুলাই মাসে আপনার ‘বাস ট্রিপ’ নাটটি ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে ছিল। নাটকটি কেন জনপ্রিয়তা পেল বলে মনে করেন?

কেয়া পায়েল: নাটকের ভাবনাটাই তো দারুণ। আমরা কাজটা করার সময়েও বেশ মজা পেয়েছি। তখনই ভেবেছিলাম, ভিন্ন রকম কিছু একটা হবেই। আমার মনে হয়, এ ধরনের নাটক বাংলাদেশের দর্শকেরা পছন্দও করেন। তা না হলে তো ট্রেন্ডিংয়েও তো থাকত না। নাটকের ধরনটা পারিবারিক ড্রামানির্ভর, এন্টারটেইনিংও বটে। নাটকের পরিচালক মহিদুল মহিম এ ধরনের নাটক এর আগেও করেছেন। আমার মনে হয়, তিনি দর্শকের পালসটা ভালোই বুঝতে পারেন। সহশিল্পী জোভান ভাইও আমাকে এই নাটকের শুটিংয়ে দারুণ সহযোগিতা করেছেন। সব মিলিয়ে এটা চমৎকার একটা টিমওয়ার্কও বটে।

প্রশ্ন : যারা এখনো দেখেননি, নাটকটিতে আপনার চরিত্র সম্পর্কে তাদের যদি ধারণা দিতেন।

কেয়া পায়েল: নাটকের চরিত্রে আমাকে বেশ চটপটে, খুবই রোমান্টিক, স্বামীভক্ত হিসেবে দেখা যায়। যারা আমার কাজ দেখেন, তারা অন্য রকম একজন আমিকে খুঁজে পাবেন। দেখার পর তারা বুঝতে পারবেন। তাই বলব, আগে দেখুন।

প্রশ্ন: সম্প্রতি ইউটিউবে ‘ইচ্ছে পূরণ’ নামে আরেকটি নাটক দেখা যাচ্ছে। এই নাটকে দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন?

কেয়া পায়েল: বেশ ভালো। অনেকেই কাজটি দেখে তাদের ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন। নাটকটিতে আনন্দের বিপরীতে একটা দারুণ বার্তাও রয়েছে। যে জন্য নাটকটি দর্শক পছন্দ করছেন। মজুমদার শিমুলের পরিচালনায় এতে আমার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব।

প্রশ্ন: নতুন একটি সিনেমায় অভিনয়ে কথা শুনেছিলাম

কেয়া পায়েল: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরই জয় সরকার ‘আয়নাঘর’ নামে একটি ছবির ঘোষণা দিয়েছেন। এ সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছি-এ ধরনের ঘোষণা আমি কোথাও দিইনি। শুধু এ সিনেমাটি নয়, আপাতত আমি কোনো সিনেমায় অভিনয় করছি না। 

প্রশ্ন: ওটিটিতে কাজের আগ্রহ কেমন?

কেয়া পায়েল: অবশ্যই আছে। এখন তো অলনাইন প্ল্যাটফর্মের কাজ দর্শক পছন্দ করছেন। তরুণ-প্রবীণ নির্মাতারা এখানে কাজ করছেন। ভক্তদের জন্য সুখবর আছে। সম্প্রতি ওটিটিতে কাজ করেছি। এ বছরই দর্শক আমাকে ওটিটিতে পাবেন। কাজের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। আমি চাই দর্শক পর্দায় কাজটি দেখবেন। আমি ওটিটিতে কাজ করছি কিনা এটি নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ ছিল। অবশেষে দর্শকের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: নিজের অভিনয় নিয়ে উপলব্ধি কী?

কেয়া পায়েল: ছয় বছরের ক্যারিয়ার। সব সময় দর্শকের পছন্দ-অপছন্দের কথা মাথায় রেখেই অভিনয় করছি। কতটুকু পেরেছি, দর্শকই ভালো বলতে পারবেন। কোনো চ্যালেঞ্জিং মনে হলেও অভিনয় থেকে পিছিয়ে আসিনি। আমি মনে করি, অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নিজেকে ভাঙতে পারলেই প্রকৃত শিল্পী হয়ে ওঠা যায়। যে জন্য প্রতিটি কাজেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে করার চেষ্টা করি। কাজের মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করছি। 

প্রশ্ন : গত বছর বলেছিলেন, এখন বেছে বেছে কাজ করবেন। গত এক বছরে আপনার নাটকের বাছাই নিয়ে নিজে কতটা সন্তুষ্ট?

কেয়া পায়েল: চেষ্টা করেছি, আগের তুলনায় কমিয়ে দিয়ে আরও ভালো কিছু করার। এখনো চেষ্টা চলছে। যখন থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার কাজগুলো ভিন্নধর্মী হচ্ছে। পরিচালকেরা গতানুগতিকতার বাইরেও গল্পের প্রস্তাব দিচ্ছেন। আমিও মোটামুটি সন্তুষ্ট। আশা করি, যতই দিন যাবে, এই সন্তুষ্টিও বাড়বে।

শেয়ার করুন