চিত্রনায়িকা পপি
চিত্রনায়িকা পপি দীর্ঘদিন ধরেই ব্যক্তিগত জীবন, সংসার, অন্তর্ধান, আবার ফিরে আসা বহু বিষয় নিয়ে আলোচনায় রয়েছেন। তবে সবচেয়ে বড় সংকট এখন তার পরিবার ও স্বজনদের প্রতারণা এবং নিজের সম্পত্তি উদ্ধার নিয়ে। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে একান্ত আলাপে তিনি জানালেন, কীভাবে নিজের উপার্জিত সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এবং সাহায্যের আশায় কোথায় কোথায় গিয়েও সহায়তা পাননি। সাক্ষৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির
প্রশ্ন : আপনি সিনেমার মানুষ। কিন্তু ইদানিং আপনার ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। আপনার বর্তমান সবচেয়ে বড় সংকট কোনটি?
পপি: আমার সবচেয়ে বড় সংকট হলো আমি নিজেই আমার উপার্জিত সম্পত্তির দখল পাচ্ছি না। পরিবার ও কিছু আত্মীয় মিলেই আমাকে প্রতারণার জালে ফেলেছে।
প্রশ্ন : এই পরিস্থিতিতে আপনি সবচেয়ে বেশি কী নিয়ে উদ্বিগ্ন?
পপি: আমার ছোট বাচ্চাটিকে নিয়ে থানাবাহাদুরি, আদালত এসব করতে হচ্ছে। সে অল্প বয়সেই এগুলো দেখছে। এটা আমাকে ভীষণ কষ্ট দেয়।
প্রশ্ন: আপনি যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন, বিষয়টি একটু বিস্তারিত বলবেন?
পপি: আমার চাচাতো বোনের স্বামী তারেক আগে আমাদের বাড়িতে লজিং থাকত। পরে সে আমার চাচাতো বোনকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে সংসার শুরু করে এবং এরপর ধীরে ধীরে আমার সম্পত্তি দখলে নেয়। আমি যখন আমার জমি ফেরত চাই, তখন সে কোনোভাবেই তা দিতে চায় না। শুধু আমার জমিই নয় সে নানা দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। একটা ব্যাংকে চাকরি করে কীভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ করল? কারণ সে পুলিশের বেনজীর-তারেক সিদ্দিকী গ্রুপের সঙ্গে যোগসাজশ করে চলেছে। আগে ছাত্রলীগ করত, এখন বিএনপির নাম ভাঙায় এরকম ক্ষমতা দেখিয়ে চলে।
প্রশ্ন: আপনি বলছেন প্রতারণার শুরু পরিবার থেকেই, সেটা কীভাবে?
পপি: আমার মা-বাবাই শুরুতে আমাকে প্রভাবিত করতেন জমি কিনতে। আমি সিনেমা করে যেটুকু আয় করেছি, সবই খুলনায় বিনিয়োগ করেছি তাদের কথায়। অনেক আত্মীয়ও জমি বিক্রি করার প্রলোভন দেখিয়েছে। আমি কিনেছি কিন্তু এখন সেই জমির দখল আমার নেই। আমার উপার্জনে আত্মীয়দের সংসার চলে, বাড়ি-ঘর বানানো হয়, বিয়ে-শাদি হয়। অথচ আমি যখন বাড়ি যাই, দেখি সবার থাকার জায়গা আছে শুধু আমার নেই। আমার করা সব উপকারের পরও আজ তারাই আমাকে প্রতারণা করছে।
প্রশ্ন: ঢাকায় সম্পত্তি নেই এটি কি আপনাকে আরও বিপদে ফেলেছে?
পপি: হ্যাঁ। ঢাকায় আমার কোনো জমি বা ফ্ল্যাট নেই। সব বিনিয়োগ খুলনাতেই। চলচ্চিত্রের বর্তমান পরিস্থিতিতে আবার কাজ শুরু করলেও আগামী ১০ বছরে ঢাকায় সামান্য একটা ফ্ল্যাটও কিনতে পারব না। এখন আমার সম্বল বলতে ওই খুলনার জমিগুলোই কিন্তু সেগুলিও তারা লুটে খাচ্ছে। আমাকে ফেরত দিচ্ছে না।
প্রশ্ন: থানায় বা প্রশাসনের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন? কী সাড়া পেয়েছেন?
পপি: বিগত আমল থেকে এখন পর্যন্ত খুলনার থানায় বহুবার গিয়েছি। কিন্তু কোনো সহায়তাই পাইনি। বারবার দরজায় কড়া নাড়ছি, কিন্তু ন্যায্য সাহায্য কেউ দিচ্ছে না।
প্রশ্ন: আপনি এখন কী করতে চান? কোথায় গেলে প্রকৃত সহায়তা পাবেন মনে হয়?
পপি: এটাই আমার বড় প্রশ্ন আমি কোথায় গেলে ন্যায়বিচার পাব? আমার জমি ফেরত চাই। ছোট বাচ্চাকে নিয়ে আমি আদালতে যাচ্ছি, থানায় যাচ্ছি কিন্তু কেউ পাশে নেই। এ কারণে সংসারেও শান্তি নেই। আমি শুধু চাই, আমার নিজের জমি আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।