২৬ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ০৫:৫২:০২ পূর্বাহ্ন


ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ঘুষের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে না
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১২-২০২৪
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ঘুষের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে না স্টার্মি ডানিয়েল ও ডোনাল্ড ট্রাম্প


পর্নো তারকা স্টর্মি ডানিয়েলকে ঘুষ দিয়ে তার মুখ বন্ধ রাখা সংক্রান্ত মামলা থেকে আপাতত রেহাই পাচ্ছেন না যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের আইনজীবীদের এই মামলা প্রত্যাহারের আবেদন গত ১৬ ডিসেম্বর সোমবার বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক। এ বছরের জুলাইতে আদালত রায় দেয় যে, প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় সরকারি দায়িত্বে কোনো রকম ফৌজদারি অপরাধ করলে প্রেসিডেন্ট সেক্ষেত্রে ব্যাপক হারে দায়মুক্তির সুবিধা পাবেন। কিন্তু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলার বিষয়বস্তুকে সরকারি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় করা হয়নি বলে সোমবার রায় দিয়েছেন ম্যানহাটানের বিচারক হুয়ান মারচান। এর আগে বসন্তের সময়ে তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারে সভাপতিত্ব করেছিলেন। আদালতের সর্বশেষ রায়কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদি শেষ পর্যন্ত এই রায় সমুন্নত থাকে তাহলে ফৌজদারি অপরাধের দায় কাঁধে নিয়ে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে হবে ট্রাম্পকে। ট্রাম্পের পক্ষের যুক্তিতর্ককে ৪২ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারক মারচান পিছনে ফেলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সরকারি পর্যায়ের যেসব মামলায় দায়মুক্তি পাওয়ার কথা বলা আছে, সেটা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকার সময়ে ঘটলে তবেই তিনি সেই সুবিধা পাবেন।

 তিনি রায়ে লিখেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার পুরোটাই ঘটেছে এমন এক সময়ে যখন তিনি প্রেসিডেন্ট নন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে দেখতে পেয়েছে যে, ট্রাম্প যা করেছেন তার সবটা প্রেসিডেন্ট হিসেবে করেননি। ওদিকে ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিফেন চেউঙ্গ মিডিয়ার কাছে এই রায়ের সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, দায়মুক্তির ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে বা রীতিকে সরাসরি লঙ্ঘন করা হয়েছে এই রায়ে। তিনি আরও বলেন, বেআইনি এই মামলাকে সামনে এগিয়ে নেয়া ঠিক নয়। সংবিধান বলে যে, এই মামলা অবিলম্বে খারিজ করে দিতে হবে। উল্লেখ্য, নিউ ইয়র্কের এক জুরি মে মাসে ব্যবসার বিষয়ে ভুয়া রেকর্ড দেয়ার জন্য ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করে। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে পর্নো তারকা স্টর্মি ডানিয়েলের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। 

নির্বাচনের আগে বা পরে স্টর্মি ডানিয়েল যেন এ বিষয়ে মুখ না খোলেন, সেজন্য তার মুখ বন্ধ করার জন্য ট্রাম্প তার তখনকার আইনজীবী মাইকেল কোহেনকে দায়িত্ব দেন। মাইকেল কোহেন এক লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিনিময়ে ডানিয়েলের মুখ বন্ধ করেন। এর মধ্য দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। কিন্তু বিষয়টি পরে ফাঁস করে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া। সঙ্গে সঙ্গে কোনো অন্যায় করার অভিযোগ অস্বীকার করেন ট্রাম্প। এখনও তিনি এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। এ নিয়ে মামলা হয়। ঘটনার ধারাবাহিকতায় মাইকেল কোহেনকে তলব করা হয় আদালতে। তিনি সাক্ষ্য দিয়ে সত্য স্বীকার করেন। ১২ই নভেম্বর তার বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত মুলতবি হয়। ট্রাম্প নতুন মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে মামলাটি কিভাবে এগিয়ে নেয়া যাবে সে সম্পর্কে প্রসিকিউটরদের মত জানতে চায় আদালত। ওই সময় থেকেই মামলাটি খারিজ করে দেয়ার জন্য একটি আবেদন করেন ট্রাম্প। এতে দাবি করা হয়, ট্রাম্প নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে হোয়াইট হাউসে ফিরতে হবে। এ জন্য এই মামলাটি তুলে নেয়া উচিত। কিন্তু বিচারক মারচান সব এলোমেলো করে দিলেন। এর ফলে ট্রাম্প টিম আপিল করবে।

শেয়ার করুন