৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন


গণঅভ্যুত্থানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৫৮১ জন
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১০-২০২৪
গণঅভ্যুত্থানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৫৮১ জন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির নেতৃবৃন্দ


ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সারা দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে মোট ১ হাজার ৫৮১ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটি। এ কমিটির সংগৃহীত প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এ কথা জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি (২৮ সেপ্টেম্বর, শনিবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্যসচিব তরিকুল ইসলাম জানান, আমরা প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ১ হাজার ৫৮১ জন নিহতের তালিকা তৈরি করেছি, যা পরবর্তীতে চূড়ান্ত করা হবে এবং জেলা প্রশাসকদের নেতৃত্বাধীন জেলা কমিটির চূড়ান্ত যাচাইয়ের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে শহিদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি জানান, এ তালিকা ইতিমধ্যেই জেলা পর্যায়ের কমিটিতে পাঠানো হয়েছে এবং তিনদিনের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষ করতে বলা হয়েছে।

তরিকুল বলেন, চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে, শহিদের সংখ্যা বাড়তে বা কমতে পারে। কারণ মন্ত্রণালয় এবং উপকমিটি উভয় তালিকায় কিছু ভুয়া নাম থাকার পাশাপাশি আন্দোলনে নিহত হয়নি এমন কিছু ব্যক্তির নাম রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্তৃক স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটি এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথভাবে আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি, রেড জুলাই এবং আরো অনেক সংস্থাও তালিকা তৈরিতে সহায়তা করেছে বলেও জানান তরিকুল ইসলাম।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে যেগুলোর আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে এখনো বিভ্রান্তি রয়েছে। তাই কোনো উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে তাদের নাম শহিদ হিসেবে প্রকাশ করার আগে আমরা আরো তদন্ত করছি। সম্ভাব্য সব উপায়ে যাচাই করার আগে কাউকে শহিদ হিসেবে ঘোষণা করা হোক আমরা তা চাই না। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কিছু নীতির সঙ্গে তথ্যের ভিত্তিতে বেশকিছু বিষয় আলোচিত হওয়ায় শহিদ বা নিহতদের সব তথ্য প্রকাশ করা হবে না। শহিদদের তথ্যের রাজনীতিকরণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নাসির বলেন, ‘আমরা জেনেছি, কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা পাবলিক প্ল্যাটফর্ম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে, তাদের দলীয় লোক ঘোষণা করার জন্য ভুক্তভোগীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন।’ 

তিনি বলেন, অনেক গ্রুপ আছে, যারা নিজেদের স্বার্থে নিহত ও শহিদদের তথ্য অপব্যবহার করার চেষ্টা করছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য, বিশেষ করে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে শিগগিরই একটি বিশেষ টিম তৈরি করা হবে। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীদের বিদেশে পাঠানোর জন্যও টিমটি কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন নাসির।

আহতদের তালিকার বিষয়ে জানানো হয়, শিগগিরই তা-ও চূড়ান্ত করা হবে। শহিদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের তালিকা বা চিকিৎসাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে যে কোনো প্রশ্নের জন্য প্রতিটি জেলার ইউএনও, সিভিল সার্জন বা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফরহাদ আলম ভূঁইয়া, স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির আহ্বায়ক ডা. মাহমুদা আলম মিতু, রেড জুলাইয়ের প্রতিনিধি শেখ মোহাম্মদ সবুজ ও মানবাধিকার সহায়তা সমিতির প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল বোখারী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির প্রতিবেদনে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪২৩ জনের মৃত্যু দেখানো হয়েছিল।

শেয়ার করুন