১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, রবিবার, ০৭:২১:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘সহিংসতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসার একমাত্র উত্তর ভালোবাসা’ বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে- ড. ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ৩-দিনব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব’ সুন্দরবন দিবসের বিষয়ে তরুণ প্রজন্ম কিছুই জানে না! ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন দুবাই পৌঁছেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়া প্রতিষ্ঠা করে গেছে- ড. ইউনূস মানবাধিকার লঙ্ঘনে শেখ হাসিনা সরাসরি জড়িত- ভলকার টার্ক হজযাত্রীদের সঙ্গে শিশুদের নিতে সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞা


শিক্ষাব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০১-২০২৫
শিক্ষাব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর


দেশের বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থার ‘কার্যকারিতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ‘গ্রন্থ আড্ডা’র অনুষ্ঠানে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এই প্রশ্ন করেন।

তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট কালকে বেরিয়েছে, এতোগুলো ছেলে-মেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে তার মধ্যে মনে হয় সাড়ে পাঁচ হাজার ভর্তির সুযোগ পেয়েছে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজগুলোতে- বাকিরা কি করবে? সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, হাইস্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়। আমি একটা উদাহরণ দিচ্ছি, ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুল সেখানে লটারি করে ঠাকুরগাঁওয়ের ছেলেরা পরীক্ষা দিয়েছে, ক্লাস থ্রিতে যে ছেলেটা ভর্তি হবে তাকে যেতে হচ্ছে গাইবান্ধা স্কুলে। এটা কোন ব্যবস্থা? কি লাভ এটাতে? কি তৈরি হচ্ছে আমি কিচ্ছু বুঝতে পারি না। আমি বলবো উন্মাদনা চলছে শিক্ষার ক্ষেত্রে। এদিকে কেউ দৃষ্টিও দিচ্ছে না, কথাও বলছে না, বিষয়গুলো পরিবর্তন করার জন্য কোনো চেষ্টা করা হচ্ছে না।

শিক্ষাক্ষেত্রে হযবরল অবস্থা

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বাংলাদেশের অনেক সমস্যা তার মধ্যে লেখাপড়াটা একেবারে শেষ হয়ে গেছে, শিক্ষা এবং শিক্ষাব্যবস্থা এটা একদম শেষ। এটার মধ্যে কিছু অবশিষ্ট আছে বলে আমার মনে হয় না। আপনি প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করেন একেবারে ইউনির্ভাসিটি- সব জায়গায় মান এতো নিচু চলে গেছে তা বলে বুঝানো যাবে না। ক্যাডেট কলেজ সেটাতে সরকার অনেক অর্থ ব্যয় করে, এটা তো মোস্ট প্রিভিলাইজড, বাট ওয়াট এভার দ্যা প্রাইমারি স্কুলস। একেবারে কুড়িগ্রামের রৌমারি চরের সেই প্রাইমারি স্কুলে সেখানে কি শিক্ষা পাচ্ছে, কি সুবিধা পাচ্ছে সেটা কিন্তু আমরা একেবারেই জানি না। অসংখ্য স্কুল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন এমপিও ভুক্তি করে, অনেক কলেজ তৈরি হয়েছে উইথ অনার্স এন্ড মাস্টার্স যেখানে আপনার কোনো শিক্ষক নেই সেখানেও অনার্স খুলে বসে আছে।

উদাহরণ টেনে সাবেক শিক্ষক ফখরুল বলেন, দিনাজপুর গর্ভমেন্ট কলেজে কিছুদিন আগে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো, আমার চাকুরি জীবনের শুরুতে আমি দিনাজপুর গভমেন্ট কলেজে অধ্যাপনা করেছিলাম। সেখানে একটা ডিপার্টমেন্ট আছে একাউট্যান্সি ডিপার্টমেন্ট। যেখান একজন শিক্ষক.. অনার্স আছে মাস্টার্স আছে। এখন আপনারা বলুন এই বিভাগগুলোর কিংবা এই কলেজগুলো কি প্রয়োজন আছে? সবাই আর্টস পড়ে বিএ-আটর্স, কর্মাস খুব কম ছাত্র পড়ে, সাইন্স পড়ে না প্রায়... তাহলে এই যে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিএন পাস করাচ্ছেন এদেরকে দিয়ে কি আপনি করাবেন, সমাজে তার প্রয়োজন কি? কোনো প্রয়োজন নেই। যার ফলে সমাজে দেখা যায়, বৃদ্ধ মা তার ছেলেটাকে পড়ালেখার জন্য তার শেষ জমিটুকু বিক্রি করে ছেলেকে ঢাকায় পাঠায়... সেই ছেলে একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি নিয়ে দেখা যায় সে কোনো চাকুরি পায় না। তাহলে সারাদেশে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার এটা বড় সমস্যা এটা নিয়ে কেউ চিন্তা করছি না।

শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার হওয়া দরকার

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকার অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন কিন্তু শিক্ষা বিষয়ক কোনো সংস্কার কমিশন হয়নি। যেটা আপনার আগে প্রয়োজন ছিলো যেটা আগে দরকার ছিলো বলে আমি মনে করি। গোটা সমস্যার মূলে ওই জায়গাটা। আমার যদি শিক্ষাটা ঠিক না হয়, পরিকল্পনা যদি আমার না থাকে তা হলে আমি কি দিতে পারব বা সমাজে কি পরিবর্তন আমি আনতে পারব, আমি নিজে পরিবারের জন্য কি পরিবর্তন আনতে পারব....। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে হাই স্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়।

জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্র নেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, পলিসি গবেষক মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আফরোজা খানম রীতা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, সোশ্যাল এক্টিভিস্ট সাইয়িদ আবদুল্লাহ, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের জহির দিপ্তী, মঞ্জুর এলাহী, কাজী জহিরুল ইসলাম বুলবুল, হাসান আল আরিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন