চলতি এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তারা পৃথকভাবে যাবেন ও পৃথক দুটি দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের এই সফরে বাংলাদেশের সংস্কার এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তা, মিয়ানমারের পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা সংকটসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।
ঢাকা ও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১৫ এপ্রিল চারদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের। পরদিন ১৬ এপ্রিল যাওয়ার কথা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপের। বাংলাদেশে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পর এটি হতে যাচ্ছে দেশটির উচ্চপর্যায়ের কোনো প্রতিনিধিদলের প্রথম বাংলাদেশ সফর। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সফরের সময় নিকোল চুলিক অন্তর্র্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংস্কার প্রক্রিয়া বিশেষ করে গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন। চলমান সংস্কার নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার সময় যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তা জানতে চাইবেন। তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করতে পারেন।
অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি গুরুত্ব পাবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা জানান, মিয়ানমারের পরিস্থিতি যেভাবে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে, যেটাকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) বাস্তবায়নে বাধা হিসেবে দেখছে।
কারণ মিয়ানমারের কিছু এলাকা ছাড়া দেশটির বাকি অংশে জান্তা সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। মিয়ানমার মাদক চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অপহরণ করে আটকে রাখা, নারী ও শিশুসহ মানব পাচারের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তো রয়েছেই। ফলে পুরো পরিস্থিতিই আলোচনায় আসবে অ্যান্ড্রু হেরাপের ঢাকা সফরে।