৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:৫৫:১৪ অপরাহ্ন


৩৩ বছর প্রবাস জীবনের অবসান
গোলাম মর্তুজাকে সম্মাননা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৪-২০২৫
গোলাম মর্তুজাকে সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিতির একাংশ


দীর্ঘ ৩৩ বছর প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে জন্মভূমি বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের বিয়ানীবাজার উপজেলার ছোট দেশ গ্রামের বাসিন্দা, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ব্যক্তি, লোভ লালসা বর্জিত, অধিকার বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানো মানুষ ও সিলেট জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি গোলাম মর্তুজা বাংলাদেশে ফেলে আসা পরিবারের সাথে মিলিত হতে যাচ্ছেন। স্বপ্ন পুরণের আশায় এক সময়ের টগবগে যুবক, কাগজপত্রহীন, শারীরিক অসুস্থ্যতা নিয়ে ভাঙ্গা মনে চলে যেতে হচ্ছে। জীবনে চলার পথে বন্ধু, স্বজন জোটে। এ ছাড়াও দেশে থাকাকালীন শিক্ষা কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে রাজনৈতিক সময়ে পরিচয়ের অনেকের সাথে এখানে এসে সাক্ষাত হয়। সম্পর্কের গভীরতা হয়। দীর্ঘদিনের পরিচিতজনরা তাদের অতি আপনজনের প্রবাস জীবনের অবসানকে সামনে রেখে হৃয়ের গহীন থেকে ভালবাসার অর্গল দিয়ে চাপা কান্না নয়নে রেদনা বিদুর পরিবেশে গত ২২ এপ্রিল ওজনপার্কের আব্দুল্লাহ বেঙ্কুট হলে প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসীর পক্ষে বিদায় সম্মানার আয়োজন করা হয়। ব্যাতিক্রমী আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বিয়ানীবাজার সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আলম অপু। পবিত্র কুরআন তেলওয়াত ও দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা রশিদ আহমদ। সম্মাননা অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত গোলাম মর্তুজা তার বক্তব্যে আয়োজকদের এবং সে সাথে যারা উপস্থিত হয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জনান। তিনি তার বক্তব্যে তার পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরেন। তিনি প্রবাসে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে মতানৈক্য থাকবে, দিন শেষে সবাই যেন ঐক্যবদ্ধ থাকি। প্রবাস জীবনের সংকটময় মুহূর্তের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। 

গোলাম মর্তুজা বলেন, দীর্ঘ দিনের একটা ইচ্ছে দেশের জন্য, মানুষের জন্য এলাকার জন্য কাজ করার। আগামীতে সুস্থ্য থাকলে সে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন এবং দেশে কোন ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজনে তিনি পাশে থাকার কথা উল্লেখ করেন। 

গোলাম মর্তুজার রাজনৈতিক জীবনের প্রেক্ষাপট, চারিত্রিক সততা, সামাজিক সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ, কঠিন সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারী সু স্বাস্থ্য দীর্ঘায়ু কামনা, সকল প্রকার সাহায্য ও সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের (একাংশের) সভাপতি বদরুল হোসেন খান, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, আজিমুর রহমান বুরহান, মোস্তফা কামাল, কলামিস্ট সুব্রত বিশ্বাস, প্রগ্রেসিভ ফোরামের সভাপতি হাফিজুল হক, বিয়ানীবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র ফারুকুল হক, কুইন্স বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি সাম্স উদ্দিন, সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য খছরুজ্জামান, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিছবাহ আহমদ, ইঞ্জিনিয়ার আলতাফ হোসেন, চৌধুরী ইসলাম, ডিএইচ হোমকেয়ার এর আব্দুল নুর, গোলাবশাহ সমাজ কল্যাণ সমিতির সহ সভাপতি হাফিজুর রহমান হীরা, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজমুল হক মাহবুব, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, জালালাবাদ এসোসিয়েশন (একাংশের) কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলীম, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, নিউইয়র্ক ফুড ইন্সপেক্টর শাহেদ আহমদ, আব্দুন কুদ্দুস টিটো, যুক্তরাজ্য বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি লুতফুর রহমান, সমিতির সাবেক সদস্য জামাল হোসেন, আব্দুল ফাত্তাহ, সাব্বির উদ্দীন, মাথিউরা সমিতির সাবেক সভাপতি কমর উদ্দীন, নিউইয়র্ক পুলিশে কর্মরত বেলাল উদ্দীন, ফজলে রাব্বি সেবুল।

রবীন্দ্রনাথের চৈতালী কবিতা আবৃত্তি করেন সোনার বাংলা মাল্টি সার্ভিসের কর্ণধার সারওয়ার হোসেন, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সহ সভাপতি গৌছ উদ্দিন খান ও আব্দুল নূর।

৫০ হাজার টাকার বৃত্তি ঘোষণা: অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনি নিজের প্রতিষ্ঠান ফাতেমা শিক্ষা ফাউন্ডেশন থেকে প্রতি বছর গোলাম মর্তুজার মেয়েকে শিক্ষার জন্য বাংলাদেশী টাকায় প্রতি বছর শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করবেন। প্রথম বৃত্তির অর্থ এপ্রিল মাসে যাবে। সম্মাননা অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত মর্তুজাকে প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট ও ফুল দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতি আব্দুল মান্নান সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার কাজ সম্পন্ন করেন।

সাহীন আহমদ ওরফে গোলাম মর্তুজা ১৯৯২ সালে কানাডা আসেন। সেখানে সাড়ে ৭বছর অবস্থান শেষে ১৯৯৯ সালে নিউইয়র্কে আসেন। ২০০৪ সালে দেশে ২ বার গিয়েছিলেন। প্রথম বার ৪ মাস থেকে বিয়ে করেন। ২য় বার ৭মাস দেশে ছিলেন। মর্তুজার ১ মেয়ে নাম অনিকা। বয়স ১৯। মেয়ের সাথে দেখা হয়নি। এবার বাবা মেয়ের সাক্ষাত হবে। ছাত্র জীবনে বিয়ানীবাজার কলেজে শিক্ষা নবীশ থাকাকালীন সময়ে কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন। ৮২ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে কলেজ শাখার প্রধান মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। বিয়ানীবাজার কলেজ থেকে সিলেট মদন মোহন কলেজে ভর্তি হন। সেখানে ৮৭ সালে ছাত্র ইউনিয়ন সাখার সহ সভাপতি, ৮৯ সালে জেলা সাখার সভাপতি মনোনীত হন। উদ্দিন বর্তমান সম্পাদক মন্ডলীতে রয়েছেন। এ ছাড়া নিউইয়র্কে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রগ্রেসিভ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম একজন।

শেয়ার করুন