বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, দেশ সংস্কার করতে হলে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। তরুণদের চিন্তাক্ষমতা প্রবীণদের থেকে বেশি। তারা এখন নতুন করে চিন্তা করছে। আগামী দিনের রাষ্ট্রক্ষমতা তরুণদের হাতে তুলে দিতে হবে। যেটা তারেক রহমান বারবার বলছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯ দফা দিয়েছেন আর তারেক রহমান রাষ্ট্র গঠনে ৩১ দফা দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। বারবার তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ১/১১-এর সরকার তাকে দেশত্যাগ করতে বলেছিলেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বিদেশে যাবেন না, এটাই তার দেশ। দেশের মানুষ তার পরিবার। মৃত্যু হলে এখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করবেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনা বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার কারণেই শেখ হাসিনা দেশে ফিরতে এসেছিলেন। আর সমঝোতা করে ক্ষমতায় এসে বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জেলে নিয়েছিলেন এবং তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। গত ৪ মে সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির ডাটা গ্রুপের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান আরো বলেন, রাষ্ট্র কাঠামোকে জনবান্ধব, ন্যায়ভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে গড়ে তুলতেই ৩১ দফার রূপরেখা ঘোষণা করা হয়েছে। এটি কোনো দলীয় স্বার্থ নয়, বরং জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে গৃহীত একটি যুগান্তকারী পরিকল্পনা। এই জাতি এই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হলে ক্ষেত্রবিশেষে সংস্কারের প্রয়োজন আছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন হাজার হাজার গায়েবি মামলায় জর্জরিত, লাখ লাখ নেতাকর্মী জেলখানায় বন্দি, ঠিক তখনই তারেক রহমান শেখ হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংস্কারের প্রস্তাব করেছিলেন। বিএনপি সব সময় রাজপথে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, আন্দোলন করছে, আরেক দিকে দেশ গঠনের চিন্তা করেছে। তিনি আরো বলেন, বিএনপির সরকারে থাকে অথবা বিরোধীদলে থাকে বিএনপির সব সময় জনগণের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং সব সময় চেষ্টা করে জনগণের সঙ্গে থাকতে, জনগণকে সঙ্গে রাখতে। দেশের মানুষের স্বার্থরক্ষায় ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রবাসের নেতাকর্মীদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে। স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনে প্রবাসী নেতাকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্মরণ করে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সভাপতি প্রকৌশলী হাফিজ খান সোহায়েল বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রের কোনো পন্থা নেই। নির্বাচন ছাড়া গতানুগতিক রাজনৈতিক নেতারা দুর্নীতির সুযোগ পাচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় বসার জন্য নির্বাচন চায় না। বিএনপি নির্বাচন চায় জণগণের ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য।
অনুষ্ঠানে ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন ও বেগম মেহেরুন্নেসা।
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিএনপির সভাপতি জহির খান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তোফায়েল, ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রহমান, সহ-সভাপতি মজনু মিয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আলোচনা সভায় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।