০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ৬:০২:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


৯ বছরে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১৭ মিলিয়ন বাংলাদেশী
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৬-২০২৫
৯ বছরে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১৭ মিলিয়ন বাংলাদেশী উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তুলে দিচ্ছেন পুরস্কার


জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি আজ বৈশ্বিক সংকটে রূপ নিয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের সদস্য দেশসমূহের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনার জন্য কৌশলগত নমুনা রূপরেখা প্রণয়ন করে রেফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে গত ২৩ জুন সোমবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই নমুনা রূপরেখা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন,বাস্তুচ্যুতি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, ৬৯টি দেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের সদস্য দেশসমূহ কোন না কোনভাবে বাস্তুচ্যুতি সমস্যা মোকাবিলা করছে। বস্তুতই জলবায়ু পরিবর্তনে একক বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর অভিযোজন নিশ্চিত করা।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের রাষ্ট্রসমূহের বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের জাতীয় কৌশলপত্রের আলোকে সৃষ্ট এই নমুনা রূপরেখা কপ৩০-এ উপস্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা হবে। অন্যান্য দেশগুলি বাংলাদেশের মডেল অনুসরণ করে তাঁদের নিজ নিজ বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম হাতে নিলে আমাদের জন্য এটি হবে ভীষণ সম্মানের।

বিশেষ অতিথি উপদেষ্টা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মোঃ ফারুক-ই-আজম তার মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান যে, কীভাবে ‘শিকস্তি পয়স্তি’ আইনে বাস্তুচ্যুতদের জমি পুনরায় জেগে উঠলে দুষ্টচক্র জোরপূর্বক ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে দলিলাদি নামমাত্র মূল্যে কিনে নেয় এবং জমির মালিক হয়ে দাঁড়ায়। তিনি আরও বলেন,“অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বাংলাদেশের জাতীয় কৌশলপত্রটি সরকারের বিভিন্ন বিভাগকে বাস্তুচ্যুতদের অধিকার আদায়ে পথ দেখাবে।”

বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্র, কর্মপরিকল্পনা এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের বাস্তুচ্যুতি টেম্পলেট রচনায় নেতৃত্ব দানকারী রামরুর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, “শুধু ২০২৪ সালেই বাংলাদেশে ২.৪ মিলিয়ন মানুষ সাময়িকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত হয়েছে মোট ১৭ মিলিয়ন বাংলাদেশী। এডিবি ও আইডিএমসি বাংলাদেশের কৌশলপত্রটিকে সেরা চর্চা হিসেবে ২০২৪ সালের বাস্তুচ্যুতি অর্থায়ন রিপোর্টে তুলে ধরেছে।” তিনি যোগ করেন, “আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের জাতীয় কৌশলপত্রটি সমাদৃত হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব স্বীকৃতি পেয়েছে- জাতিসংঘ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস জিপি ২০১৯ ও ২০২০, ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত ২০২৪ ও অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০২২ সালের এশিয়া-প্যাসিফিক মিনিস্ট্রেরিয়াল দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সম্মেলনগুলোতে।”

প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর মি. ল্যান্স বোনো বলেন,“আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশী বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনায় আইওএম ভূমিকা রাখবে।” সমাপনী বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই ধরনের টেমপ্লেটগুলো ভাইটাল ফ্রেমওয়ার্ক। আন্তর্জাতিক ফলাফল সৃষ্টিকারী গবেষণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাধুবাদ জানাই এবং এই ধরনের কার্যক্রম চালু রাখায় আমার সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।

ড. তৈয়েবুর রহমান, ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ বক্তব্য প্রদান করেন।

দিনব্যাপী আয়োজিত এই কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও প্রতিনিধি এবং গবেষকগণ অংশগ্রহণ করেন এবং টেমপ্লেটটি নিয়ে তাঁদের সুচিন্তিত মতামত তুলে ধরেন।

শেয়ার করুন