০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:৪৪:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কহার নিয়ে তৃতীয় দফা আলোচনা শুরু
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৭-২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কহার নিয়ে তৃতীয় দফা আলোচনা শুরু


বাংলাদেশি পণ্যে আরোপ করা পাল্টা শুল্কের হার কমানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বাংলাদেশ দলের আলোচনা শুরু হয়েছে। ওয়াশিংটনে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে ২৯ জুলাই শুরু হওয়া এ আলোচনা ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা এ তথ্য জানিয়েছেন। গোলাম মোর্তোজা জানান, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান ঢাকা থেকে অনলাইনে যুক্ত হন।

তিন দিনব্যাপী এ আলোচনা ৩১ জুলাই শেষ হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দলে আরও আছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী। ৩ আগস্ট তাঁদের ঢাকায় ফিরে আসার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এ পর্যন্ত আলোচনায় যে অগ্রগতি হয়েছে, তার ভিত্তিতে বাংলাদেশ এ দফার আলোচনায় ইতিবাচক ফল আশা করছে। 

বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ১ আগস্ট এ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা। দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা বর্তমানে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে পণ্য রপ্তানি করেন, নতুন হার কার্যকর হলে তা ৫০ শতাংশ দাঁড়াবে।

বাড়তি শুল্কহার কমানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দুই দফা আনুষ্ঠানিক আলোচনা করলেও উভয় দেশ ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। তৃতীয় দফার আলোচনা করতে গত ২৮ জুলাই সোমবার রাতে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল।

 সরকারি প্রতিনিধিদলের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের একটি দলও যুক্তরাষ্ট্র গেছে। ব্যবসায়ীদের এ দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানির আলাদা বৈঠক হওয়ার কথা। সমঝোতা স্মারকও (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬০টি দেশের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের জন্য এ হার ছিল ৩৭ শতাংশ। পাঁচ দিনের মাথায় ৭ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ।

 পরে ৯ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক বজায় রেখে সব দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে। তিন মাসের শেষ সময় ছিল ৯ জুলাই। আগের দিন ৮ জুলাই ট্রাম্প নতুন করে ঘোষণা দিয়ে জানান, বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্কহার হবে ৩৫ শতাংশ।

 জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয়েছে প্রায় ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য। একই অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশ ৮৭৬ কোটি ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি ৬২৬ কোটি ডলার।

 যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারি পর্যায়ে গম, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), ২৫টি উড়োজাহাজ ইত্যাদি পণ্য আমদানির মাধ্যমে দেশটির বাণিজ্যঘাটতি কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি আমদানি আগে থেকেই চলছে। এলএনজির চাহিদা বাড়ছে, দামও কমছে। আমাদের আমদানি বাড়তে পারে। তবে দরপত্র ডেকেই তা হবে।’

 যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেসরকারি পর্যায়ে তুলা, সয়াবিনবীজ ইত্যাদি পণ্যও আমদানি করা হবে। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রণোদনা দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে কথা বলেন সাংবাদিকেরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কিনতে কত খরচ হবে- এমন প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।

 শুধু উড়োজাহাজ কিনে বাণিজ্যঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে না, আর কী ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরও আছে। ওই প্যাকেজ নিয়েই তো গেছেন (বাণিজ্য উপদেষ্টা), কী কী কিনতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনা হবে কি না, জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটা আমি বলব না। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনকে প্রশ্ন করুন।’

শেয়ার করুন