৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৮:০৫:৫১ অপরাহ্ন


জ্বালানি চাহিদা পূরণের চ্যালেঞ্জ তরুণদেরই নিতে হবে
বিশেষ প্রতনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৮-২০২৫
জ্বালানি চাহিদা পূরণের চ্যালেঞ্জ তরুণদেরই নিতে হবে সেমিনারে তরুণ জলবায়ু নেতা ও কর্মী, শিক্ষার্থী ও গবেষক, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, সিভিল সোসাইটি সংগঠন এবং নীতিনির্ধারকরা


জ্বালানিসম্পদ থেকে জ্বালানি চাহিদায় রূপান্তরের জন্য ভৌত অবকাঠামো, মানবসম্পদ, কারিগরি প্রযুক্তি ও নীতি থাকা দরকার। তা না হলে জ্বালানি চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। জ্বালানি অন্যান্য সম্পদের মতো সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। আবার সব জ্বালানি সব ক্ষেত্রে সমানভাবে ব্যবহার করা যায় না। গ্যাস থাকার কারণে আমাদের দেশ গ্যাস জ্বালানিনির্ভর। পরিবেশ ধ্বংস না করে জ্বালানি চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ তরুণদেরই নিতে হবে।

গত ২৩ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অডিটোরিয়াম, ঢাকায় একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন ‘জ্বালানি সম্প্রসারণ : বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ ও ন্যায়সংগত রূপান্তরের সঙ্গে সংঘাত’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব বিষয় উঠে আসে। ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ব্রাইটার্স, ক্লাইমেট ফ্রন্টিয়ার, গ্লোবাল ল থিংকার্স সোসাইটি, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, ওএবি ফাউন্ডেশন, সচেতন ফাউন্ডেশন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, যুব পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা এবং ইয়ং ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।

আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশ এখন জ্বালানি সম্প্রসারণ কৌশলের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। সরকার বৃহৎ পরিসরের জ্বালানি প্রকল্প-বিশেষ করে কয়লা, এলএনজি এবং আমদানি করা, জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং নবায়ণযোগ্য জ্বালানি উদ্যোগকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে, যেখানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন অপরিহার্য, তবে তাৎক্ষণিক অর্থনৈতিক লক্ষ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত ও সামাজিক স্থায়িত্বের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছে। উন্নয়নকে পরিবেশগত ন্যায়বিচার এবং অর্থনীতি ও পরিবেশের দ্বন্দ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হলে একটি দ্রুত অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং পরিবেশ-সচেতন জ্বালানি রূপান্তর এখন অত্যন্ত জরুরি। এ রূপান্তরের কেন্দ্রে থাকতে হবে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি, বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ। দ্রুত জ্বালানি রূপান্তরের জন্য যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করতে, তাদের এ বিষয়ে শিক্ষিত করে তাদের কণ্ঠস্বরকে জোরদার করতে, তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে ও তাদের জন্য বর্তমান ও ভবিষ্যতের পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি), হারজিত সিং, কৌশলগত উপদেষ্টা, ফসিল ফুয়েল নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি ও শরীফ জামিল, সদস্য সচিব, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)। ওনারা বাংলাদেশের জ্বালানি সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দ্বন্দ্ব এবং ন্যায়সংগত রূপান্তর সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এতে অংশগ্রহণ করেন তরুণ জলবায়ু নেতা ও কর্মী, শিক্ষার্থী ও গবেষক, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, সিভিল সোসাইটি সংগঠন এবং নীতিনির্ধারকরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন ফারিয়া অমি এবং সূচনা বক্তব্য দেন সাইদূর রহমান সিয়াম। সূচনা বক্তব্যে সাইদূর রহমান সিয়াম বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস না করে জ্বালানি চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ তরুণদেরকেই নিতে হবে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম তার বক্তব্যে বলেন জ্বালানি সম্পদ এবং জ্বালানি উপকরণ এই দুই বিষয়ের সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকতে হবে। জ্বালানি নিয়ে চিন্তা করতে হলে সাপ্লাই চেইনকে বিবেচনায় আনতে হবে। সাপ্লাই চেইনের আওতায় জ্বালানি সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহন ব্যবস্থা, জ্বালানির ব্যবহার, রুপান্তরকরণ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে। একেক ধরনের জ্বালানির একেক রূপ আছে। কোন জ্বালানি কোন রূপে আছে তা বুঝতে হবে। জ্বালানি সম্পদ থেকে জ্বালানি চাহিদায় রূপান্তরের জন্য ভৌত অবকাঠামো, মানবসম্পদ, কারিগরি প্রযুক্তি ও নীতি থাকা দরকার।

শেয়ার করুন