আমাদের এক ডাক্তার বন্ধু আছেন। সদা করোনায় ভীত একজন মানুষ। নভোচারীরা চাঁদের দেশে যাওয়ার জন্য যে পোশাক পরেন, তিনিও তাই। সুরা পেতে পিপিইসহ নভোচারীর পোশাকে বাইরে বের হোন।
তাতেও ডাক্তার বাবুর উশখুশ। শুনেছিলেন, রাজধানীতে সংক্রমণ বেড়েছে, তাই একমাস হলো গ্রামের বাড়ি মতলবে গিয়ে বাস করছেন। ঢেঁকি যেমন স্বর্গে গেলে ধানভানে, তিনিও তেমন! মতলবে অস্থায়ী কিনিক খুলে বসেছেন।
কিনিকের বাইরে ‘ফেরদৌস আর্ট’কে দিয়ে একটি সাইনবোর্ড লিখিয়ে টানিয়েছেন। সেখানে লেখা ‘৫০ টাকায় চিকিত্সা করুন/ ভালো না হলে ৫০০ টাকা ফেরত’। সহজ বাংলায়- ‘বিফলে মূল্য ফেরত’।
আমাদের পরিচিত মতলবের এক প্রকৌশলী আছেন, অতিশয় চালাক। প্রকৌশলী কাম পলিটিশিয়ান। চিন্তা করলেন ৫০০ টাকার ধান্ধা করার এই সুযোগ।
তিনি গিয়ে ডাক্তারকে বললেন, ‘জিহ্বায় কোনো কিছুর স্বাদ পাই না, কোনো স্বাদ পরখও করতে পারি না, আমার চিকিত্সা করুন’।
ডাক্তার তার অ্যাসিস্ট্যান্টকে হাঁক দিয়ে বললেন, ওনাকে ৪২০ নম্বর ডিব্বা থেকে তিন ফোঁটা খাইয়ে দাও।
ঔষধ খাওয়ানোর পর প্রকৌশলী চেঁচিয়ে বললেন, এটা তো কেরোসিন!
ডাক্তার বললেন- গুড, আপনার জিহ্বা কাজ করা শুরু করেছে, ৫০ টাকা দিন।
৫০ টাকা হারিয়ে অনেক ভেবেচিন্তে প্রকৌশলী দ্বিতীয় দিন আবার গেলেন ডাক্তারের কাছে।
প্রকৌশলী: ‘আমার স্মৃতি কাজ করছে না, আপনি চিকিত্সা করুন’।
ডাক্তার আবার তার অ্যাসিস্ট্যান্টকে হাঁক দিয়ে বললেন, ওনাকে ৪২০ নম্বর ডিব্বা থেকে তিন ফোঁটা খাইয়ে দাও।
খাওয়ানোর পর প্রকৌশলী রেগে একাকার। বললেন, এই কেরোসিন তো জিহ্বায় স্বাদ ফেরানোর জন্য খাইয়েছিলেন গতকাল!
ডাক্তার: এই তো স্মৃতি ফিরে এসেছে। ৫০ টাকা দিন।
টাকা উদ্ধার এবং প্রতিশোধের নেশায়, পরের সপ্তাহে আবার প্রকৌশলী গেলেন ডাক্তারের কিনিকে। এবার চোখে কালো চশমা, হাতে সাদা ছড়ি।
প্রকৌশলী: ‘কিছু দেখতে পাচ্ছি না, আমার চোখ ভালো করে দিন’।
ডাক্তার: ‘এই চিকিত্সা আমার আওতার বাইরে, এই নিন টাকা- বলে একটা নতুন কচকচে নোট বাড়িয়ে দিলেন’।
প্রকৌশলী খেয়াল করে দেখলেন, সেটা ৫০০ টাকার নোট। দেখেই চেঁচিয়ে বললেন: এটা তো ৫০০ টাকার নোট!
ডাক্তার নোটখানা ফিরিয়ে নিয়ে বললেন: আপনার দৃষ্টি ফিরে এসেছে ৫০ টাকা দিন।
পুনশ্চ: গল্পের বীজ বা চারাটা প্রয়াত মহানায়ক বুলবুল আহমেদের ছেলে আমাদের ঢাকা কলেজের সহপাঠী অনুজ ওয়াসিফ আহমেদ শুভ’র কাছ থেকে নেয়া। আমি শুধু ডালপালা ছড়িয়েছি, এই যা...