২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১০:১০:৪৪ পূর্বাহ্ন


দেশ’কে নাফিজা তুষি
‘হাওয়া’র অভিনয়ে প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি বেশি
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৮-২০২২
‘হাওয়া’র অভিনয়ে প্রত্যাশার  চেয়ে প্রাপ্তি বেশি নাফিজা তুষি /ফাইল ছবি


দেশের প্রেক্ষাগৃহে দারুণ ব্যবসা করছে ‘হাওয়া’। এবার ‘হাওয়া’ বইবে ভিনদেশেও। এই ছবির একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ নারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজিফা তুষি। সিনেমার অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে। 

প্রশ্ন: ‘হাওয়া’ সিনেমায় আপনার অভিনয় বেশ প্রশংসিত। আপনার প্রত্যাশা কেমন ছিল?

নাফিজা তুষি: ছবিটি তো আমরা সবাই খুব সততা আর পরিশ্রমের সঙ্গে করেছিলাম। তবে আমার মনে হতো এই ধরনের ছবি বোধহয় সব ধরনের মানুষের কাছে ভালো লাগবে না। ছবির ট্রেলার আর ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটি ভাইরাল হওয়ার পর আমি বেশ অবাকই হয়েছিলাম। কিন্তু তখনো বড় কোনো প্রত্যাশা হয়নি মনে। ছবি মুক্তির পর যত দিন গেছে, আমার ধারণা ততই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এভাবে সব ধরনের দর্শক ‘হাওয়া’কে আপন করে নেবে আমি ভাবতেই পারিনি। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রাপ্তির আনন্দ এবারই পেলাম।

প্রশ্ন: এই সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যাবে?

নাফিজা তুষি: ‘হাওয়া’ আমার কাছে এক কথায় অভিনয়ের স্কুলিং। অনেক দিন ধরে শোবিজে কাজ করছি ঠিক, কিন্তু আমি বলব অভিনেত্রী হিসেবে আমার যাত্রা শুরু মাত্র চার বছর। যখন থেকে ‘হাওয়া’র সঙ্গে যুক্ত হয়েছি তখন থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার স্বাদ উপভোগ করতে শুরু করি। এমন নয় যে আমি হুট করেই অভিনেত্রী হয়েছি। আমি নিজেকে দূরদর্শী চিন্তার মানুষ মনে করি। আমি যে এক সময় অভিনয় করব, সেটি একদম ছোটবেলা থেকেই স্থির করা। সেই জন্যই লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় আসি। একটি প্ল্যাটফর্ম পাই ঠিকই, কিন্তু কোন পথে নিজেকে খুঁজে পাব সেটি বুঝতে পারছিলাম না।

 ‘হাওয়া’ টিম আমাকে এক ধরনের গ্রুমিংয়ের মধ্যেই রেখেছিল। সেখান থেকেই আমি খুঁজে পাই আমার আগামীর পথ। এরপর অভিনয়চর্চার জন্য প্রাচ্যনাটে যোগদান, সৈয়দ জামিল আহমেদ স্যারের একাধিক কর্মশালা থেকে শুরু করে নানা ধরনের বইপত্র পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে। এখন সেই পথেই হাঁটছি। যেতে চাই বহুদূর। এটা নিজের সঙ্গেই নিজের এক ধরনের বোঝাপড়া বলতে পারেন। আমি জানি, এই পথে আমি সততার সঙ্গে হাঁটতে পারলে এক একটি সিঁড়ি বেয়ে উঠতে থাকব। তবে সেই পথের কোনো শেষ নেই। আমার নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যও স্থির করা নেই।

প্রশ্ন: ‘হাওয়া’ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে আপনার প্রত্যাশা কী?

নাফিজা তুষি: ‘হাওয়া’ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পাচ্ছে। আশা করছি বিভিন্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও যাবে। আমি যদি সুযোগ পাই নিজের ছবি নিয়ে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করার, অবশ্যই যাব। তবে আমার সিনেমা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যাবে, আমাকে রেড কার্পেটে হাটতে হবে, এসব বিষয় সিনেমা করার সময় মাথায় থাকে না। আমি খুব ধীরগতিতে চলতে চাই আর শুধু ভালো কাজ করতে চাই। সেই কাজই আমাকে নানা প্রাপ্তিতে ভরিয়ে দেবে বলে বিশ্বাস করি। হয়ত রেড কার্পেট সেটিরই একটি অংশ।

প্রশ্ন: সিনেমা মুক্তির পর আপনার একটি মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এটি আসলে কেন?

নাফিজা তুষি: সব কাজ সবার ভালো লাগবে না এটা সত্যি। এও সত্যি যে, এ জগতে যারাই সফল হয়েছেন তাদের পেছনে প্রশংসা যেমন আছে, সমালোচনা-বিতর্কও তেমন আছে। এসব আমি মেনেই নিয়েছি। তবে আমাকে নিয়ে সম্প্রতি অযথা যে বিতর্ক সেটি সত্যি কষ্ট দিয়েছে। তবে আমি মানুষ চিনেছি এই সুযোগে। আমি এমন শিক্ষা পাইনি যাতে কাউকে ছোট করতে পারি। আমি কোনো ভুল করিনি। সময়ই সবকিছুর উত্তর দিয়ে দেয়।

প্রশ্ন: ব্যক্তি তুষির প্রেম নিয়ে অনেক গল্প শোনা যায়। আসল ঘটনা কী?

নাফিজা তুষি: মানুষও এ ধরনের বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে আনন্দ পায়। এটা অনেকটাই কালচারে পরিণত হয়েছে। বিয়ের পর ছেলে-মেয়ের বয়সের ব্যবধান, কার বিয়ের আগে বাচ্চা হলো- এসব নিয়েও আলোচনা করতে, লিখতে কিছু মানুষ আনন্দ পান, মজা পান। যারা এসব নিয়ে মেতে থাকতে চায়, থাকুক, আমরা আমাদের মতো কাজ করতে থাকি। সবাই গল্প বলার সুযোগ করে দেওয়া দরকার।


শেয়ার করুন