২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৬:৪৫:৩৯ অপরাহ্ন


স্থায়ী মিশনের অনুষ্ঠানে স্পিকার
জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে তরুণ সমাজ বাংলাদেশ এগিয়ে নেবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৮-২০২২
জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে তরুণ সমাজ বাংলাদেশ এগিয়ে নেবে জাতির পিতার প্রতিকৃর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী/ছবি সংগৃহীত


জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে তরুণ সমাজ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিবে, আজকের দিনে এই হোক আমাদের প্রত্যয়। গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী পালন উপলক্ষে নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। উল্লেখ্য, তিনি সরকারি সফরে নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন।

সন্ধ্যা সাতটায় মিশনস্থ বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস পালন অনুষ্ঠান আয়োজন করে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন। এতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধারা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় দিবসটির কর্মসূচি। এরপর জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং তাঁদের শহিদ পরিবারসহ ১৫ আগস্টের সকল শহিদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় স্পিকারের সাথে ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিতসহ মিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। অতঃপর দিবসটি উপলক্ষে দেয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। জাতির পিতার জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা এ পর্বে। এরপর শুরু হয় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা। এতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধারা বক্তব্য প্রদান করেন। 

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতার শৈশব ও কৈশোরসহ তাঁর পরিবারের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের নানাদিক তুলে ধরেন। দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের প্রতি জাতির পিতার গভীর মমত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা ছিলেন বিশ্বের শোষিত বঞ্চিত মানুষের মুক্তির অগ্রনায়ক। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের ভগ্নস্ত‚পের ওপর দাঁড়িয়ে কীভাবে জাতির পিতা বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে চেয়েছিলেন তা তুলে ধরেন স্পিকার।

তিনি বলেন, জাতির পিতার সেই আদর্শ ধারণ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। আমরা আজ স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হয়েছি। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, দারিদ্র্য বিমোচন, বিদ্যুৎ, বৈদেশিক সম্পর্কসহ প্রতিটি সেক্টরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। পদ্মাসেতুসহ বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের উদাহরণ তুলে ধরে স্পিকার বলেন, জাতির সকল উন্নয়নে জাতির পিতা আছেন এবং চিরদিন থাকবেন। এসডিজি’র উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এর অনেকগুলো লক্ষ্য ও অভীষ্টের কথা জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে উল্লেখ করে গেছেন।

নিউইয়র্ক সফররত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশিদ আলম প্রদত্ত বক্তব্যে স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম বন্দর সচল করার ক্ষেত্রে জাতির পিতার দূরদর্শিতার কথা তুলে ধরেন।

জাতীয় শোক দিবসের তাৎপর্য এবং জাতির পিতার জীবনাদর্শ তুলে ধরে স্বাগত ভাষণ দেন রাষ্ট্রদূত মুহিত। তিনি ১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে দেয়া জাতির পিতার ভাষণের অংশবিশেষ-‘মানব জাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার। এই শান্তির মধ্যে সারা বিশ্বের সকল নর-নারীর গভীর আশা-আকাক্সক্ষা মূর্ত হয়ে রয়েছে। ন্যায়-নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত না হলে শান্তি কখনো স্থায়ী হতে পারে না’ উদ্ধৃত করেন। স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, জাতির পিতার কালজয়ী সেই ভাষণের মর্মবাণী এবং তাঁর নীতি-আদর্শ অনুসরণ করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বশীল ভ‚মিকা রেখে চলেছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা নেতারা দÐপ্রাপ্ত খুনিদের মধ্যে যারা এখনো বিদেশে অবস্থান করছেন, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশিকে এগিয়ে আসার আহŸান জানান। তারা বলেন, আমরা চাই জাতির পিতার কোনো খুনিই যেন বিচারের হাত থেকে পার না পায়। বক্তারা ১৫ আগস্টের এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার মাধ্যমে জাতির পিতা যে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন স্ব স্ব অবস্থান থেকে তা অর্জনের দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সবশেষে ১৫ আগস্টের শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

শেয়ার করুন