২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ১১:১৪:১৭ পূর্বাহ্ন


বাংলাদেশ ক্লাব : আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের উৎসব
পদ্মাপাড়ের উচ্ছ্বাস আটলান্টিকের এ পাড়ে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৭-২০২২
পদ্মাপাড়ের উচ্ছ্বাস আটলান্টিকের এ পাড়ে বাংলাদেশ ক্লাবের র‌্যালি


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন। এই পদ্মা সেতুর কৃতিত্ব পুরোটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। অনেক ষড়যন্ত্র এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিশ্বের বিস্ময় পদ্মা সেতু তিনি উদ্বোধন করেছেন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ছিলো বর্ণিল আয়োজন। পদ্মার দু’পাড়ে জড়ো হয়েছিলো সারা দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। যেখানেই বাঙালি ছিলো সেখানেই পদ্মার উচ্ছ¡াস ছিলো। পদ্মাপাড়ের উচ্ছ¡াস পুরো বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। সেই ঢেউ এসে লাগে আটালান্টিকের এ পাড়ে। পদ্মা সেতুর উপলক্ষে বাংলাদেশ কাব, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী, ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাস, জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকলীগ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এসব অনুষ্ঠান সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে। বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসসহ অন্যান্য স্থানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ কাব

‘আমাদের টাকায় আমাদের সেতু, স্বপ্নের পদ্মা সেতু’ সেøাগানকে ধারণ করেই বাংলাদেশ কাব যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিস্ময় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আনন্দ শোভা যাত্রা, বিজয় উল্লাস এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানে শুধু বাংলাদেশ কাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন না, ছিলেন সর্বস্তরের মানুষ। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশ কাবের বিশেষত্ব। বাংলাদেশ কাবের অনুষ্ঠানেই সর্বজনীনতা, যার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষেও সম্ভব নয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বিভক্ত। কিন্তু বাংলাদেশ কাব মানেই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ঐক্যের প্রতীক, যা সম্ভব হয়েছে সভাপতি নূরুল আমিন বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক হায়দারসহ তরুণ নেতৃত্বের কারণে। যাদের সাথে রয়েছেন এম উদ্দিন আলমগীর, শিবলী ছাদেক শিবলুসহ উদ্যোমী তরুণদের কারণেই।

বাংলাদেশ কাব গত ২৪ জুন সন্ধ্যায় বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় এই বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্টেটে সোজা পাচ্ছিলো তাদের হাতে তৈরি পদ্মা সেতুর সিম্বল। সংগঠনের সভাপতি নূরুল আমিন বাবুর সভাপতিত্বে এবং অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব শিবলী ছাদেক শিবলুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আহ্বায়ক এম উদ্দিন আলমগীর, প্রধান সমন্বয়কারী ইসতিয়াক রূপ, বিশিষ্ট ছড়াকার মঞ্জুর কাদের, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক হায়দার, গোপাল স্যান্যাল, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মাওলা চৌধুরী, যুগ্ম সদস্য সচিব হেলাল মিয়া, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, কবি মিশুক সেলিম, আব্দুল হামিদ, গোলাম হাসান, সুমন মাহমুদ, কবি খালেদ সরফুদ্দিন, সৈয়দ কিবরিয়া জামান, কবি হাসান আল আব্দুল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জয়, আমিনুল ইসলাম, খন্দকার জাহিদুল ইসলাম, তুহিন আজাদ রোজি, সাইকুল ইসলাম, সোনিয়া সুলতানা প্রমুখ।

নূরুল আমিন বাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতীক। আমাদের অহংকারের প্রতীক। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই বাংলাদেশের মানুষ পদ্মা সেতু পেয়েছেন। অনেকেই পদ্মা সেতু নিয়ে নানা কথা বলেছেন, দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করেছেন। সেই সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই শেখ হাসিনা আমাদের বিশ্বের বিস্ময় উপহার দিয়েছেন। তিনি আমাদের গর্বিত করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন। পদ্মা সেতু জাতিকে উপহার দেয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সকল প্রবাসী বাংলাদেশির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।

মাহফুজুল হক হায়দার প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রের দিন শেষ। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছেন তারা মুখ কালো করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। অহেতুক ষড়যন্ত্র করবেন না। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ষড়যন্ত্র করে দেশের ক্ষতি করবেন না। আসুন, নির্বাচন করুন, নির্বাচনে জয়লাভ করলে আমরা আপনাদের অভিনন্দন জানানো, কিন্তু ষড়যন্ত্র করলে বাংলাদেশে আপনাদের জায়গা হবে না। বক্তব্য শেষ তারা ঢাকঢোল পিটিয়ে জ্যাকসন হাইটসে আনন্দ র‌্যালি বের করেন। আনন্দ র‌্যালিটি জ্যাকসন হাইটসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন এবং কেক কেটে তা সকলের মাঝে বিতরণ করেন।

ওয়াশিংন বাংলাদেশ দূতবাস

ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতির দীর্ঘ প্রতীতি স্বপ্নের পদ্মা সেতুর জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধন উদযাপন করেছে। এ উপলে গত ২৪ জুন রাতে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার এবং এটি আমাদের গৌরব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে সেতুর কাজ সম্পন্ন করে দেশের ১৮ কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ করেছেন। রাষ্ট্রদূত ইসলাম বলেন, দেশ-বিদেশে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বিচণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের পাশাপাশি দৃঢ় সংকল্প ও মনোবলের কারণে দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সেতুটি নির্মাণ করে সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন, এমন একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সমতা ও সামর্থ্য বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের রয়েছে।

এর আগে ডেপুটি চিফ অব মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ কামাল আহমেদ এবং নর্থ ক্যারোলিনা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. এবিএম নাসির।

বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ আহমেদ বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ দেশের জন্য বিশাল গৌরবের ব্যাপার। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে দেশের যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং পদ্মা সেতু এই খাতকে আরো শক্তিশালী করেছে। জুনায়েদ আহমেদ আশা প্রকাশ করেন যে পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করার েেত্র গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ককে গভীর আখ্যায়িত করে বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।

অধ্যাপক নাসির তার বক্তব্যে যোগাযোগ খাতকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে পদ্মা সেতুর বিভিন্ন ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে নির্মিত পদ্মা সেতুর কারণে কোটি কোটি বাঙালির স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এর আগে এ উপলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় এবং পদ্মা সেতুর ওপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলে বাংলাদেশ চ্যান্সেরী আলোকসজ্জিত করা হয়।

বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন

জাতীয় উদযাপনের অংশ হিসেবে গত ২৫ জুন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে নিয়ে অত্যন্ত উৎসবমূখর পরিবেশে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পদ্মা সেতু উদ্বোধন’ উদযাপন করল নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন। স্থানীয় সময় বেলা ১২টায় মিশনস্থ বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পদ্মা সেতুর সাফল্য এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে একটি বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে শুরু করা হয় এ উদযাপন অনুষ্ঠান। অত:পর পদ্মা সেতু উদ্বোধন উদ্বোধন উপলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। 

আনন্দমুখর এ অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের স্বাগত জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য আজ অত্যন্ত আনন্দের দিন। বাংলাদেশ সময় ২৫ জুন সকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বহুল আকাক্সিক্ষত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের বিস্ময়। আমাদের জাতীয় জীবনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা আরো বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার, গৌরব ও সমতার প্রতীক। কারণ এটি নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে। এটি বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় এক অনন্য মাইলফলক। এ অর্জনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অগ্রযাত্রায় আমরা আরো একধাপ এগিয়ে গেলাম। আর এর সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে। প্রদত্ত বক্তব্যে পদ্মা সেতুকে ঘিরে গড়ে ওঠা বিনিয়োগ, শিল্পায়ন, দেশের দণিাঞ্চলের ২১টি জেলার সাথে রাজধানীর সংযোগ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগসহ এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নানা দিক তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। প্রবাসের সকল বাংলাদেশি নাগরিককে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

যুক্তরাষ্ট আওয়ামী লীগসহ, নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ পদ্মা সেতুর মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্থাপনা সফলভাবে নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তাঁরা আগামী নির্বাচনে আবারো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

পদ্মা সেতুর ওপর নির্মিত ভিডিও ডকুমেন্টারিসহ প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ভিডিও কিপস প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানটিতে।

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট

‘পদ্মা সেতু’র উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত যথাযথভাবে উদযাপনের জন্য নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে বাংলাদেশ সময়ের সাথে সঙ্গতি রেখে গত ২৫ জুন এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নিউইয়র্কে বসবাসকারী বীর মুক্তযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মিডিয়া নেতৃবৃন্দ ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে কনস্যুলেটে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। উপস্থিত সকলে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পদ্মা সেতু’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার উপভোগ করেন। এ ঐতিহাসিক মুহূর্ত সকলে মিলে একযোগে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দের সাথে উদযাপন করেন। 

পরবর্তীতে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপনে উপস্থিত সকল প্রবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। পদ্মা সেতুকে আত্মবিশ্বাস ও প্রেরণার প্রতীক হিসাবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন জাতি হিসেবে আমাদের এক অনন্য অর্জন, যা শুধুমাত্র আমাদের অর্থনৈতিক সমতার পরিচয়ই বহন করে না, তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করেছে। পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক নতুন গতি সঞ্চার করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। রাজধানীর সঙ্গে দণি ও দণি-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় এ অঞ্চলের বহুমুখী উন্নয়নে এ সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়ন ও পর্যটনশিল্পে অগ্রগতিসহ অন্যান্য েেত্র এ সকল জেলার উন্নয়নের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচিত করার পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে পদ্মা সেতু অগ্রণী ভ‚মিকা রাখবে বলে কনসাল জেনারেল যোগ করেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে এ সেতু ইতিবাচক অবদান রাখবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কনসাল জেনারেল এই পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রবাসীদের ভ‚মিকা, বিশেষ করে এ উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রবাসীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ রূপকল্প এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে তিনি প্রবাসীদের ভ‚মিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বর্ণনা করে তাদেরকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার উদাত্ত আহ্বান জানান।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের একসাথে এ ঐতিহাসিক মুহূর্তটি উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ ও আয়োজনের জন্য উপস্থিত অতিথিবৃন্দ কনস্যুলেটের প্রতি বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের আনন্দ-সমাবেশ

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাহেন্দ্রণকে ব্যাপক আনন্দ-উল্লাসের সাথে উদযাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকলীগ। নিউইয়র্ক সময় ২৪ জুন রাতে জ্যাকসন হাইটসে ঢোল-বাদ্য বাজিয়ে ’আমার টাকায় আমার সেতু বাংলাদেশের পদ্মা সেতু’ ও ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ সেøাগানে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাবার কথা তুলে ধরে আনন্দ সমাবেশে।

যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকলীগ আয়োজন করলেও সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ নানা শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরা যোগ দেন। যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকলীগের সভাপতি আজিজুল হক খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আনন্দ সমাবেশটি সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ। সভায় যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লুৎফুল করিম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক সোলেমান আলী, সহ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল মালেক, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডেজ জয় প্রমুখ। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি হোসেন সোহেল রানা, এম এ আলম বিপ্লব ও খান শওকক। যুগ্ম সম্পাদক লস্কর মজুমদার প্রমুখ।

আনন্দ সমাবেশকে সফল করতে বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি হোসেন সোহেল রানা। সমাবেশে শেষে রাতের খাবার ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

গোপালগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশন

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাহেন্দ্রণকে ব্যাপক আনন্দ-উল্লাসের সাথে উদযাপন গোপালগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি মোল্লা এম মাসুদের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক এস এম আবুল হাসান, সদস্য সচিব হাসান জিলানী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাখাওয়াত বিশ্বাস, শিল্পী সবিতা দাস প্রমুখ। জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্টের সামনে এই আনন্দ-উৎসবের আয়োজন করা হয়। সভাপতি মোল্লা এম এ মাসুদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেশ দিয়েছেন, আর তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের গর্বের পদ্মা সেতু দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতায় রাখতে হবে।

আহ্বায়ক আবুল হাসান বলেন, পদ্মা সেতু করে শেখ হাসিনা আমাদের গর্বিত করেছেন। তিনি বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশও পারে।

সদস্য সচিব হাসান জিলানী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ছিলেন বলেই পদ্মা সেতু হয়েছে। তার দৃঢ় মনোবলের কারণেই সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের লোকজনের মধ্যে মিষ্টি ও খাবার বিতরণ করা হয়।

শেয়ার করুন