ইমিগ্রেশন সমস্যা সমাধানের মূল বাধা হচ্ছে সরকারের হাতে তা নিরসনের কোনো আইনি হাতিয়ার নেই বা যা আছে তা অপ্রতুল। গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক টাইমস সম্পাদকীয় বোর্ড এক সম্পাদকীয়তে এই সমস্যা সমাধানে গত বছর কংগ্রেসে উভয় দলের পক্ষ থেকে পেশকৃত ‘দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত সমাধান আইন’ বা BIPARTISAN BORDER SOLUTION ACT. পাস করার কথা উত্থাপন করেছে। ইমিগ্রেশনসংক্রান্ত এই বিল ইমিগ্রেশন সিস্টেমের ক্যাপাসিটি বাড়ানোর জন্য সহায়ক হবে বলে বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এই বিলে দক্ষিণ সীমান্তে চারটি নতুন প্রসেসিং সেন্টারে অর্থায়নের ব্যবস্থা করবে। এতে যারা এসাইলাম চান, তাদের ৭২ ঘণ্টা আটকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। ব্যাকগ্র্যাউন্ড চেক করা হবে এবং প্রাথমিকভাবে দেখা হবে তারা স্বদেশে নির্যাতিত কিনা? সেসব ব্যক্তি তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণ করতে পারবে না, তাদের ডিপোর্ট করা হবে। তাদেরকে আপিল করার জন্য সীমিত সুযোগ দেয়া হবে।
এই বিল নিয়ে এখন অনেক বেশি আলোচনা হচ্ছে। সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, আমেরিকায় উন্নত জীবনের জন্য আসা ইমিগ্র্যান্টদের ভারে এখানে ইমিগ্রেশন অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে। অনেক লোককে কোনো মূল্যায়ন ছাড়া এখানে কাজের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া এমন অনেককেই আবার বের করে দেয়া হচ্ছে তাদের মূল্যায়ন না করে। কিন্তু ইমিগ্রেশন হচ্ছে আমেরিকার জন্য সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের অন্যতম শক্তি সঞ্চয়ের মাধ্যম।
আমেরিকায় এসাইলাম ব্যবস্থা, অর্থাৎ যারা স্বদেশে সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে এ দেশে আশ্রয় নিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আজ ভেঙে পড়েছে। এই ব্যবস্থা পুনর্গঠনে এবং এসাইলাম যারা চায়, তাদের দাবিকে মানবিকভাবে বিবেচনার জন্য পুরো ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। এ জন্য তাদের দাবি বা আবেদনকে সুষ্ঠুভাবে বিবেচনা করা হবে।
অনেক কষ্ট করে অনেক পরিবার রিওগ্র্যান্ড থেকে টেক্সাসে আসে, তাদের দুর্দশা অত্যন্ত সঙ্গীণ। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত দেড় লাখেরও বেশি লোক এসাইলামের আবেদন করেছে সীমান্তে। এদের অধিকাংশ ল্যাটিন আমেরিকার হলেও অন্যান্য দেশেরও সেখানে লোক রয়েছে। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ লোক আমেরিকায় সরকারের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অপেক্ষা করে আছেন। তারা দেড়শ দিন অবস্থান করলে ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করতে পারে।
২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কাস্টমস বর্ডার প্রটেকশন ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯০০ মাইগ্র্যান্টকে মুক্তি দিয়েছে। তাদেরকে ইমিগ্রেশন অফিসে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ রিপোর্ট করতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে স্বাস্থ্যগত কারণে সরকার ল্যাটিন আমেরিকা থেকে বহু লোককে প্রবেশ করতে দেয়নি। এরপর ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত ফেডারেল সরকার সেই টাইটেল ৪২-এর মাধ্যমে সর্বমোট একজনকে একাধিকবার করে ৮৫৩ হাজার বার বহিষ্কার করেছে। তারপরও এই সমস্যার সমাধান সুদূর পরাহত। বর্তমানের ব্যবস্থা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দ্বিপাক্ষিক বর্ডার সলিউশন অ্যাক্ট প্রণয়ন করা বাঞ্ছনীয়।