২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৭:৩৫:২১ অপরাহ্ন


বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন
রশীদ আহমদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৯-২০২২
বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়া হচ্ছে


নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের বায়তুল মামুর মসজিদ অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের সামার প্রোগ্রামের  সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ গত ২৫ আগস্ট বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বিকেল চারটায় সেন্টারের হলরুমে অনুষ্ঠিত গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের প্রিন্সিপাল মওলানা রশীদ আহমদ। ইসলামিক স্কুলের কোরআনিক ক্লাসের ছাত্র ইয়াহইয়া মিক্বদাদের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্কুলের শিক্ষক হাফেজ তাওহিদুর রহমান তালহ ও হাফেজ মোছাব্বীহ হোসাইনের যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও বায়তুল মামুর মসজিদ অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারের ইমাম ও খতিব মওলানা দেলোয়ার হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএমএমসিসির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাইয়াজ ফয়সল ও বর্তমান সেক্রেটারি মোশাররাফুল মাওলা সুজন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের প্রিন্সিপাল মওলানা রশীদ আহমদ। একই সময়ে পৃথকভাবে গার্লস বিভাগের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানটিও প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় তলায় অনুষ্ঠিত হয়। গার্লস সেকশনের অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ফিরোজা আক্তার পলি ও সুফিয়া খানম ইমু।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাফেজ মিজান উল্লাহ, হাফেজ আলী আকবর, হাফেজ কাজী  ফজলে রাব্বী, হাফেজ মওলানা আবু তাহের, হাফেজ জসীম উদ্দিন, হাফেজ ফাহমিদ আবদুল্লাহ রাইয়ান, আলেয়া বেগম সুমী, হাফেজা ফাতেমা বেররী, কানিজ ফাতিমা, মাসুমা ইয়াসমীন ও হাবীবা আহমদ।

অন্যদের মধ্যে বিএমএমসিসির সানী ইমাম মওলানা আব্দুল মান্নান, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট আবদুস সাত্তার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ নাসির রহমানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বেশ সংখ্যক অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ক্লাস ভিত্তিক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান সফলতার সাথে সামার প্রোগ্রাম শেষ করায় ক্লাস ভিত্তিক ১ম থেকে ১০ম গ্রেড পর্যন্ত এবং হিফজ শাখার দুটি গ্রুপ, উইকেন্ড শাখার ৬টি ক্লাসের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী ৪৮ জন ছাত্রছাত্রীদের মাঝে সনদ ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্রছাত্রীদের রিপোর্ট কার্ড প্রদান করা হয়। প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য  অতিথিরা শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার ও সনদপত্র তুলে দেন। এবারে ২৮৫ জন ছাত্রছাত্রী উক্ত সামার সেশনে অংশগ্রহণ করে এবং পাঠ দান করেছেন অভিজ্ঞ ১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।

প্রধান অতিথি  ইমাম মওলানা দেলোয়ার হোসাইন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি তোমরা সর্বত্র সালামের প্রচলন করতে পারো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায় করতে পারো, হাসিমুখে কথা বলতে পারো, ধৈর্য ও খুলুসিয়াতের সাথে প্রতিটি কাজ সম্পাদন করতে পারো, তাহলে তোমাদের জীবনে সফলতা আসবেই। পাশাপাশি আখেরাতেও কামিয়াবি হাসিল করা সম্ভব হবে। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রবাসে ইসলামকে বোঝা বা শেখার জন্য আমাদের সন্তানদের জন্য ইসলামিক স্কুলের বিকল্প নেই। একইসঙ্গে পারিবারিকভাবেও কোরআন ও হাদিসের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিতে হবে। সামার স্কুল থেকে শিক্ষা নেয়ার পর ইসলামের মৌলিক বিষয়ের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের খাওয়ারের ব্যপারে হালাল হারাম শিখানো হয়েছে তা তাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে। মা-বাবাদেরও হারাম হালালের জ্ঞান থাকতে হবে, সে অনুযায়ী বাচ্চাদের খাবার পরিবেশন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, নতুন প্রজন্মকে আরো বেশি বেশি কোরআন-সুন্নাহর মৌলিক জ্ঞান অর্জনে মনোনিবেশ করতে হবে। কেননা ওই কোরআনিক জ্ঞানই পারে মানুষকে সঠিক ও সত্য পথের পথ দেখাতে।

বিশেষ অতিথি বিএমএমসিসির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাইয়াজ ফয়সল উপস্থিত অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সকলের আরো সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে বিএমএমসিসি একদিন নিউইয়র্কের নামকরা বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুল এই সামারের এই অল্প সময়ে শিক্ষার্থীদের সবকিছু শিক্ষা দেয়া সম্ভব নয়, তাই আগামীদিনে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠানোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিএমএমসিসির সেক্রেটারি জেনারেল মোশাররাফুল মাওলা সুজন তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের সন্তানদের শিশু বয়স থেকে ইসলাম শিক্ষা দেয়া  জরুরি। বাসার পাশে ইসলামিক স্কুল হওয়ায় আমাদের জন্য তা অনেক সহজ হয়েছে। সামার স্কুল নিয়ে তিনি আরো বেশি প্রচারের ওপর গুরুত্তারোপ করেন, যাতে করে সামার সেশনে মুসলিম কমিউনিটির সকল শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে সক্ষম হয়।

প্রিন্সিপাল মওলানা  রশীদ আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, প্রতি বছরই ভর্তুকি দিয়ে  ইসলামিক  স্কুল পরিচালনা করতে হয়। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, যেন আগামী প্রজন্ম আমেরিকায় থেকেও ইসলামের আলোকে জীবন গঠন করতে পারে। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্য বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে নিয়ে আসা এবং ক্লাস শেষে সঠিক সময়ে বাসায় নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন এবং বাচ্চাদের হোম ওয়ার্কে ঠিকমতো দেখভাল করা, তাতে স্কুলের শৃঙ্খলা রক্ষা হয় সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুলের অপর প্রোগ্রাম উইকেন্ড স্কুল শুরু হচ্ছে। ইসলামের মৌলিক শিক্ষাগ্রহণের জন্য পাবলিক স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের উইকেন্ড ক্লাসে ভর্তি করার আহŸান জানান তিনি।

শেয়ার করুন