২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৩:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


উন্নয়নশীল হতে চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-১১-২০২২
উন্নয়নশীল হতে চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে সংকটে বাংলাদেশের রেসিটেন্স খাত।


করোনার অভিঘাত আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবশ্যই বিশ্বজুড়ে মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকট সৃষ্টি করেছে। এরই মাঝে বৈষয়িক উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে না আশায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পদহানি ঘটিয়ে সংকট বৃদ্ধি করেই চলছে। অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। সরকার প্রধান ইতিমধ্যেই সর্বস্তরে কৃচ্ছ্রতা সাধন করার আহ্বান করা ছাড়াও সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনার কথা বলেছেন।

বাংলাদেশ কিন্তু ২০২৬ থেকে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরের স্বীকৃতি পেয়েছে। স্বীকৃতির সহজ ব্যাখ্যা হলো ২০২৬ থেকে বাংলাদেশের রফতানি পণ্যসমূহ বিশ্ববাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে না। দাতা সংস্থাসমূহ বাংলাদেশকে স্বল্পসুদে ঋত প্রদান করবে না। এমতাবস্থায় বাংলাদেশকে মূলত নিজস্ব সম্পদ থেকেই উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সরকারপ্রধান নিজে বলেছেন বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশ এখন বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার করে সরকার পরিচালনা করছে। শঙ্কার কারণ হলো রফতানি কমছে, রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে ফলশ্রুতিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মেগাপ্রকল্পগুলোর জন্য গ্রহণ করা সুদসহ ঋত পরিশোধ শুরু হলে দ্রুত সঞ্চয় কমে যেতে পারে। পরিস্থিতি সংকট জনক অবস্থায় পৌঁছানোর আগেই সরকারকে কিছু বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

রফতানি খাতকে অন্তত বর্তমান পর্যায়ে ধরে রাখতে হলে রফতানিমুখী শিল্প খাতগুলোর জ্বালানি বিদ্যুৎ সরবরাহও সংকট মেটাতে হবে, ব্যাংকঋণের সুদ, ভ্যাট, ট্যাক্স সমন্বয়ের বিষয়গুলো দেখতে হবে। কেন কি কারণে মূল রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক খাত, বস্ত্র বা চামড়াশিল্প রফতানি নিম্নমুখী সেগুলো সংশ্লিষ্ট সবার জানা এগুলোর বাস্তব মুখ কি সমাধান জরুরি। 

দেখা গেছে, বাংলাদেশ স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি স্থগিত করে গত কয়েক মাসে গ্যাস আমদানি কারকদের বিদ্যুৎ সংকটের কারণে অনেক রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান আমদানিকারকদের সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারেনি। উৎপাদন ১৫-২০ শতাংশ কমে গেছে। পেট্রোবাংলা বিদ্যুৎ, সার, সিএনজি খাতে গ্যাস সরবরাহ সঙ্কুচিত করেও চাহিদামতো শিল্পে গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। 

তড়িৎ সমাধান বলতে এখন কিছু সরবরাহকারীর অন্যতম প্রধান রফতানি খাত প্রস্তাবিত ২৫-৩০ মার্কিন ডলার/এমএমবিটিইউ মূল্যে এলএনজি ক্রয়ের অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি করার বিকল্প দৃশ্যমান নয়। পাশাপাশি যুদ্ধ ঘোষণা করে গ্যাস চুরি বন্ধ করতে হবে, অপচয় রোধ করে শিল্পে চাহিদামাফিক গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, রফতানিমুখী শিল্প মুখ থুবড়ে পড়লে শুধু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সঙ্কুচিত হবে না বিপুলসংখক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়তে পারে। সরকারকে তাই জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিতে হবে।  ইতিমধ্যে রুগ্ণ হয়ে পড়া তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে টিকে থাকতে সহায়তা করতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি প্রণোদনা দিয়ে রফতানি বাস্কেটের পরিধি বাড়াতে হবে চারটি খাত তৈরি পোশাক, জাহাজ নির্মাণশিল্প, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং মৎস্য ও পশুসম্পদ ইতিমধ্যে সম্ভাব্য খাত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণশিল্প এখন বিকাশমান।

দেশে বিদেশে প্রচার বাড়াতে হবে। এই খাত সমর্থন পেলে অচিরে অন্যতম প্রধান রফতানি খাতে পরিণত হতে পারে। বাংলাদেশ মূলত কাঁচা কৃষিপণ্য রফতানি করে থাকে। অনেক দেশ মূল্য সংযোজন করে সেকেন্ডারি, টারশিয়ারি প্রোডাক্ট রফতানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছে। বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানীরাও প্রবাসে এই ধরনের কাজে নিয়োজিত আছে। পাশাপাশি সম্ভাবনা আছে মৎস্য আর পশুসম্পদ  উন্নত করে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা  অর্জনের। শুনেছি চারটি খাতকে উন্নয়নের রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত প্রবাসীদের বিশেষত প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিপুল চাহিদা রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে বাংলাদেশের এই খাতে সংকট রয়েছে।

অনেক ক্ষেত্রে দূতাবাসের কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে জড়িত আছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যসহ কিছু কিছু দেশে নতুন সম্ভাবনা স্মৃতি হলেও সিন্ডিকেট সেসব দেশেও সক্রিয়। বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে অভিজ্ঞ করে পাঠালে আরো বেশি অর্থ উপার্জন করতে পাবে। রেমিট্যান্স কমে গেলে বিপদে পড়বে  বাংলাদেশ। 

সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। রফতানি যায় ধরে রাখার পাশাপাশি বাণিজ্য বহুমুখী করুন, শ্রমবাজার প্রসার করে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে ২০২৬ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয় পিছিয়ে যেতে পারে।

শেয়ার করুন