২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৮:৩৪:০১ অপরাহ্ন


অ্যালামনাইদের নিয়ে ঐক্যের আহ্বান
সবাইকে নিয়ে দেশের সেবা করতে চাই : আবু জাফর মাহমুদ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-১০-২০২২
সবাইকে নিয়ে দেশের সেবা করতে চাই : আবু জাফর মাহমুদ বক্তব্য রাখছেন আবু জাফর মাহমুদ


ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকা ছিলো। ছাত্ররা আন্দোলন করেছে বলেই প্রতিটি আন্দোলন সফল হয়েছে। ছাত্রসমাজ দেশকে ভালোবেসেই এসব আন্দোলন করেছিলেন। এখানো আমরা যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছি, তারা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেন। তাদের দেশপ্রেম নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন থাকতে পারে না। সেই সব দেশপ্রেমিক অ্যালামনাইদের নিয়ে আমি দেশের সেবা করতে চাই। সেই জন্য আমি আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই। গত ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় উডসাইডের গুলশান টেরেসে নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বিভিন্ন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং সাবেক ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ঐক্যের আহ্বান জানান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, কলামিস্ট, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাংলা সিডিপ্যাপের প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ। সেই চমৎকার অনুষ্ঠানে আবু জাফর মাহমুদ এই আহ্বান জানান। বাংলাদেশ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নামে তিনি একটি সংগঠন করতে চান। অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক আবু জাফর মাহমুদের স্বপ্ন বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইদের নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ সংগঠন। সেই লক্ষ্যেই অনুষ্ঠানের আয়োজন। অনুষ্ঠানে যারা গিয়েছেন তারাই বিচলিত হয়েছেন, তাদের হৃদয় স্পর্শ করেছে অপরাজেয় বাংলার ম্যূলার দেখে, স্বাধীনতার সময়ের পতাকা দেখে, ৬ দফা আন্দোলনের পোস্টার দেখে। সেই সাথে ছিলো স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন চিত্র। এসব চিত্র দেখে অনেকেই আপ্লুত হয়েছেন, অতীতে ফিরে গেছেন, ক্যাম্পাসে চলে গিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন করেছেন। কিন্তু দেশকে এখনো সারাক্ষণ হৃদয়ে লালন করেন। দেশপ্রেম যে ইবাদত তা অন্তরে লালন করেন। তারাই বহিঃপ্রকাশ ছিলো পুরো অনুষ্ঠান।

অ্যালামনাই গোলাম মোস্তফা এবং কবি রওশদ হাসানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আবু জাফর মাহমুদ। আবু জাফর মাহমুদকে উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীর ডিকেন্স। তিনি আবু জাফর মাহমুদের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন। আবু জাফর মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, আপনারা যারা আজকে এখানে এসেছেন তারা স্বদেশে প্রেমের কারণেই এসেছেন। এখানে স্টেজে যে ছবিগুলো ব্যবহার করা হয়েছে তা আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। তিনি বলেন, আমরা অ্যালামনাই যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছি তাদের দেশ প্রেম নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না। কারণ তারা দেশকে নিঃশর্তে ভালোবাসেন। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। এখনো দেশের ভবিষ্যৎ গঠতে ভূমিকা রাখতে চাই। আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সুখময় ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ রেখে যেতে চাই। আমরা এখনো যে যেখানেই আছি সেখানে আমরা সুনাম অর্জন করতে চাই। সামাজিক সংগঠন করতে চাই, তবে আমরা ঐক্যবদ্ধ নই। তিনি বলেন, আমেরিকা হচ্ছে বিশ্বের নেতা। আমরা আমেরিকান হিসাবে আমরাও বিশ্বনেতা। তিনি বলেন, আমরা আমাদের পরিবার, সমাজ, স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যা শিখে এসেছি- তা আমরা আমেরিকায় নিয়ে এসেছি। কিন্তু আমাদের হৃদয়ে বাংলাদেশ। মনে রাখতে হবে আমাদের দেশ ১টা, পতাকা ১টা এবং প্রধানমন্ত্রীও ১ জন। তিনি বলেন, ৫২ তে ছাত্র সমাজ আন্দোলন করেছে, ৬ তে আন্দোলন করেছে, ৬৯ এর আন্দোলন করেছে, ৭০ সালে নির্বাচন করেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি পতাকাকে পদদলিত করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছে। ছাত্রসমাজ সব আন্দোল করেছিলো দেশ ও জাতির জন্য। এখনো আমাদের যুদ্ধ চলছে, দারিদ্রতার বিরুদ্ধে, সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে, ন্যায় প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে এই রাষ্ট্র রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। আমরা জানি, কীভাবে রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে হবে। প্রবাসে অ্যালামনাইদের মধ্যে অনেক জ্ঞানী-গুণীজন রয়েছেন, অরেক বিজ্ঞানী রয়েছেন, অনেক গবেষক রয়েছেন, অনেক ডাক্তার রয়েছেন, ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে এক্সপার্ট রয়েছেন, তাদের আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তাদের হাতেই রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের সুযোগ করে দিতে হবে। বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে হলে তাদের সক্রিয় করতে হবে। তাদের সহযোগিতা নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে অ্যালামনাইরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। তাদের সংগঠনিত করা প্রয়োজন। সবাইকে নিয়ে আমি দেশের জন্য কাজ করতে চাই। আপনারাই হচ্ছে আমাদের জ্ঞানের লাঠি। মনে রাখতে হবে আমাদের গোটা জাতি সংকটে। সুতরাং আমাদের ঐক্য প্রয়োজন এবং জ্ঞানের লাঠি প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সাঈদ তারেক, সাপ্তাহিক বাংলাদেশের সম্পাদক ডাক্তার ওয়াজেদ এ খান, সাপ্তাহিক বাঙালির সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, সপ্তাহিক আজকালের সম্পাদক মনজুর আহমদ, অভিনেত্রী রেখা আহমেদ, ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, চবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ফারুক, জাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি কবির কিরণ, সাংবাদিক মনোয়ারুল ইসলাম, মূলধারার রাজনীতিবিদ মুর্শেদ আলম এবং ডা. আক্তার হাসান।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাউল সম্রাট কালা মিয়া, চন্দন চৌধুরী, চন্দ্র রায়, শশী ও হাসান।

শেয়ার করুন