২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ৬:২৩:৫৩ অপরাহ্ন


যশোরে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১১-২০২২
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী


যশোরে আওয়ামী লীগের বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছেন।  বৃহস্পতিবার এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে যশোর স্টেডিয়ামে। মূলত আওয়ামী লীগ তাদের দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা শুরু অংশ হিসেবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাদেরকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই, আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সন্ত্রাস হত্যা রাহাজানি নির্যাতন আর জেল-জুলুম মামলা ব্যতীত জনগণকে কিছুই দিতে পারে নাই। আওয়ামী লীগ  সভাপতি বলেন, আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন কি না দুই হাত তুলে বলেন। জনতা দুই হাত তুলে চিৎকার করে তাতে সম্মতি দেয়। 

প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকে নিরাপত্তা ও রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি জামাত চক্রের ছড়ানো গুজবে কান দেবেন না সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই গুজবে কান দেবেন না। কারণ বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী  অবস্থানে রয়েছে। এবং ব্যাংকে কোন অর্থ সংকট নেই। যদিও বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকায় ব্যাংকে টাকা নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আর ব্যাংকে টাকা নেই এই কথাটা মিথ্যা।

গতকালকেও তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সহ মিটিং করে দেখেছেন টাকার কোন সমস্যা নাই। প্রত্যেকটা ব্যাংকে যথেষ্ট টাকা আছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, বিশ্ব, অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। আমাদের রেমিটেন্স আসছে বিদেশ থেকে। বিনিয়োগ আসছে। আমদানি রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্যাক্স কালেকশন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের অন্য দেশ যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী আছে। 

সমাবেশস্থল যশোর জেলা স্টেডিয়ামে এর আশপাশে গলিপথ এলাকার জনসমাগম এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা করে। আশপাশের জেলা থেকেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ ভোর থেকে জনসভাস্থলে জমায়েত হতে থাকে ব্যাপক জনসমাগমের সৃষ্টি হয়। সমগ্র এলাকা বেলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনসমুদ্রে রূপ নেয়। 

প্রধানমন্ত্রীর নিয়ে রিজার্ভ নিয়ে সমালোচনার জবাবে বলেন, রিজার্ভ নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা করা হচ্ছে। অথচ আমাদের সরকার রেকর্ড পরিমাণ রিজার্ভ বাড়িয়েছে। অনেক প্রশ্ন করেন রিজার্ভ গেল কোথায়? আমরা  রিজার্ভ অপচাপ করি নি। মানুষের কল্যাণে কাজে লাগিয়েছি।  

জ্বালানি তেল কিনতে হয়েছে, খাদ্যশস্য কিনেছি, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি, করোনার টিকা ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছি- এসব কাজের হিসাব থেকে খরচ করতে হয়েছে আমাদের। কারণ আমরা সবসময় মানুষের কথা চিন্তা করে উন্নয়ন কর্মকান্ড চালাচ্ছি।  দেশের মানুষ যেন কষ্ট না পায়। ভালো থাকে, সেজন্য খরচ করতে হয়েছে। এভাবে টাকা মানুষের কল্যাণের জন্যই ব্যয় হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জনগণকে কিছুই দিতে পারে নাই তারা শুধু মানুষের রক্ত চুষে খেতে পারতো এটাই হলো বাস্তবতা। 

প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন- অস্ত্র চোরাকারবারি করতে গিয়ে তারেক জিয়া ধরা খেয়েছিল দশ ট্রাক মামলা এবং সেখানেও তার সাজা হয়েছে আর খালেদা জিয়া জনগণের অর্থে শুধু মারেননি এতিমের টাকা মেরেছেন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা মেরে খেয়েছেন। তাই আজকে সাজাপ্রাপ্ত। কাজেই সাজাপ্রাপ্ত যে দলের নেতা জনগণকে তারা কি দেবে? সে প্রশ্নও তিনি করে। 

বিশ্বমন্দা মোকাবেলায় সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সব ধরনের চাষাবাদ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন কারও জমি যেন খালি না থাকে। অনাবাদি না থাকে। প্রত্যেকটা জমি আবাদ করতে হবে যাতে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তি চাই উন্নতি চাই। আমাদের যুব সমাজ আমাদের ভবিষ্যৎ ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে সবাইকে মিলে দেশকে গড়ে তুলতে হবে। সবাইকে এদেশকে উন্নতি করতে হবে। 

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে সবকিছু পাল্টে গেছে। প্রত্যেক এলাকায় সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বেড়েছে। 

বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়াই তাঁর কাজ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যতটুকু আমার সাধ্য আছে পাশে থেকে আমি আপনাদের সেবা করে যাব।’

বারবার হত্যাচেষ্টার মুখোমুখি হলো প্রাণে বেঁচে যাওয়ার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বারবার আঘাত থেকে বাঁচিয়েছেন বোধহয় আমার উপর দায়িত্ব¡ দিয়েছেন বাংলার জনগণকে ভাগ্য পরিবর্তন করার। ইনশাল্লাহ এই বাংলাদেশ গরীব থাকবে না। এই বাংলাদেশে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য। কৃষিমন্ত্রী ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাক। জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং শেখ হেলাল এমপি। 

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে পরিচালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি। তথ্য সুত্র বাসস। 

 


শেয়ার করুন