২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:১৫:৩৪ পূর্বাহ্ন


বাম জোটের বক্তব্য
বিরোধী দল বিকাশে বাঁধা সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৪-২০২২
বিরোধী দল বিকাশে বাঁধা সরকারের  স্বৈরতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ: নিজস্ব ছবি


বাম গণতান্ত্রিক জোটের  নেতৃবৃন্দ  বলেছেন, দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিকাশের প্রধান বাঁধা সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক চরম কর্তৃত্ববাদী শাসন। জনম্যান্ডেটবিহীন সরকার ক্ষমতায়  টিকিয়ে থাকতে গিয়ে বিরোধী রাজনীতিকে তারা প্রবল ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

গত ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার  বিকেলে সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। তারা আরো বলেন, যে সরকার বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে ভয় পেয়ে হামলা-  আক্রমণ করে, বিরোধী দলকে দুর্বল ও ছত্রভঙ্গ করতে নির্যাতন- নিপীড়ন অব্যাহত রাখে, বিরোধী রাজনৈতিক দল নিয়ে তাদের হা-হুতাশ এক ধরনের রসিকতা ছাড়া আর কিছু নয়। 

উল্লেখ্য, সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নাম না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অপজিশন বলতে যারা আছে, তার মধ্যে দুটো পার্টি এখন যারা (বিএনপি, জাতীয় পার্টি), দুটোই হচ্ছে মিলিটারি ডিকটেটর- একেবারে সংবিধান লঙ্ঘন করে, আর্মির রুলস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তাদের হাতে গড়া। কাজেই তাদের ঠিক ওই মাটি ও মানুষের সঙ্গে যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্কটা তাদের মাঝে নেই। তাদের কাছে ক্ষমতাটা ছিল একটা ভোগের জায়গা। সেই ক্ষেত্রে আসলে অপজিশন তাহলে কোথায়? 

এখানে একটা পলিটিক্যাল সমস্যা কিন্তু আছে। কাজেই আমরা আমাদের শক্তিশালী বিরোধী দল আমরা পাচ্ছি না। তাদের অবস্থানটা মানুষের কাছে নেই। কারণ তারা তো এসেছেই একটা ভাসমান অবস্থায়। কাজেই তাদের ওই শিকড় তারা গড়তে পারেনি। সেই ক্ষেত্রে আমাদের ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড থেকে যখন শোনায় যে, এখানে ডেমোক্রেসি, পার্টিসিপেটরি ডেমোক্রেসি, ইলেকশন, হেনতেন; কিন্তু আসলে এখানে করবেটা কি? সেটাও তারা চিন্তা করে না।’ বাম নেতৃবৃন্দ মূলত প্রধানমন্ত্রীর অমন উক্তির পরিপেক্ষিতেই এমনটা বলেছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সম্পর্কে সরকার ও সরকারি দলের যদি ন্যূনতম কোন অঙ্গিকার থাকে তাহলে তারা তারা যে গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করেন বিরোধী রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের জন্যও একই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। 

সভায় দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে গারমেন্টসসহ সকল সেক্টরে শ্রমিকদের যাবতীয় বেতন ভাতা পরিশোধ করতে মালিক ও  সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে। 

বাম জোটের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে এই সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ-মার্কসবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, ওয়ার্কার্স পার্টি- মার্কসবাদীর সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আবদুল আলী, বাম জোটের কেন্দ্রীয় নেতা মোশাররফ হোসেন নান্নু, আকবর খান ,বাচ্চু ভূঁইয়া,শহীদুল ইসলাম সবুজ, মুনিরুদ্দিন পাপ্পু, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, রাশেদ শাহরিয়ার,  বিধান দাস প্রমুখ।


শেয়ার করুন