২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৮:০০:৫৫ পূর্বাহ্ন


৭৬ এ পা রাখলেন মির্জা ফখরুল
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০১-২০২৩
৭৬ এ পা রাখলেন মির্জা ফখরুল


ফোনে প্রবাসী মেয়ে শামারুহ মির্জার কাছ থেকে শুভাশিস পেয়ে শুরু হলো বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। ২৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ৭৫ বছর পূর্ণ করে ৭৬ এ পা রাখলেন মির্জা ফখরুল। ১৯৪৮ সালের এদিনে ঠাকুরগাঁওয়ে জন্মগ্রহন করেন তিনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ জন্মদিন মানে আরো একটি বছর চলে যাওয়া। বৃদ্ধ থেকে বৃদ্ধের পথে যাচ্ছি। সকালে দুই মেয়ের টেলিফোনে ঘুম ভেঙেছে আমার। দুই মেয়ে আর আপনাদের ভাবী(সহধর্মিনী রাহাত আরা বেগম)এর শুভেচ্ছায় দিন শুরু করেছি।”

‘‘ আমার বড় মেয়েই প্রথম ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ বলল।”


 বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ আমার কাছে এখনকার জন্মদিন নিরুদারুন কষ্টের। কারণ আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী গণতন্ত্রের মাতা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি, এখন গৃহে অন্তরীন হয়ে আছেন। নিদারুন কষ্ট-যন্ত্রণায় দিনযাপন করছেন। এরকম একটা অবস্থায় জন্মদিন নিয়ে কি বলার আছে? পা রাখলাম ৭৬ এ।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্ত্রী রাহাত আরা বেগমকে নিয়ে উত্তরার ভাড়া বাসায় থাকেন। সকালে তার সহধর্মিনী ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ জানিয়েছেন। একসাথে তারা সকালে ব্রেকফাস্ট করেছেন, চা খেয়েছেন।

পরে বাসা থেকে নিজের প্রাইভেট কারে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন বিএনপি মহাসচিব। পথে অনেক নেতারা টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে জানান।


নয়া পল্টনে আসার পর দলের নেতা-কর্মীরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। জন্মদিনের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো আগেই বারণ করে দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।

‘আমার সময় শেষের দিকে’

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালযে সংবাদ সম্মেলনে শুরুতে সাংবাদিকরা তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ ধন্যবাদ আমাকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য যে, আমার সময় প্রায় শেষের দিকে।”

একটা ছোট গোলাপ দিলে ভালো হতো –এরকম বলেন পাশে বসা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক আবদুস সালাম।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ না, না- প্লিজ এটা করবেন না।”

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন,‘‘ওয়ান হান্ড্রেড দুই নট আউট। দেখছেন ছবিটা। এই ছবিটা সকলকে দেখতে বলব। ইটস এ ওয়ান্ডারফুল মাস্টার পিস পিকচার। আমাদের মতো মানুষদের এই জীবনকে পজেটিভলি নেওয়া –এটা এতো চমতকারভাবে এই ছবি উঠে এেেস্ছ। অনেকে আছেন না বৃদ্ধ হয়ে যায়, মরার আগে মরে যান্। তো ওটাকে নেগেট করে ১০২ বছরের বৃদ্ধ সে জীবনকে উপভোগ করেতেছে এটা দেখার মতো। সকলেরই এই ছবি দেখা উচিত।”


 


বড মেয়ে শামারুহ মির্জা স্বামী-সন্তান নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। সিডনির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্টডক্টরাল ফেলো হিসেবে কাজ করছেন তিনি।

ছোট মেয়ে সাফারুহ মির্জা ঢাকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষকতা করেন। মির্জা ফখরুলের বাবা প্রয়াত মির্জা রুহুল আমিন মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন, মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ফখরুল ছাত্র জীবনে বাম রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন তিনি।

ঢাকা কলেজসহ কয়েকটি সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেছেন ফখরুল। সরকারি চাকরি ছেড়ে আশির দশকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি।

২০০১ সালে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চার দলীয় জোট সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল ও কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব হওয়ার আগে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন ফখরুল। এই পদটি সৃষ্টি করা হয়েছিল তারেক রহমানের জন্য। তিনি দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পর ওই পদে মির্জা ফখরুলকে আনেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর ২০১১ সালে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হন মির্জা ফখরুল। ২০১৬ সালে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে মহাসচিব তিনি।


শেয়ার করুন