২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১১:২৩:৫১ পূর্বাহ্ন


প্রধানমন্ত্রী কেন দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন!
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১২-২০২৩
প্রধানমন্ত্রী কেন দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


বাংলাদেশের একটি প্রধান দৈনিক, প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, বিএনপি নাকি ফেব্রুয়ারি-মার্চ ২০২৪ সময়ে দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। জানি না গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজের দলের কর্মীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে কি না। জানুয়ারি ৭, ২০২৪ অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে কোনো দৈব দুর্বিপাক না হলে বর্তমান শাসক দল সহজেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হবে। আর শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকবে ফেব্রুয়ারি মার্চ ২০২৪ তখন অর্থনৈতিক সংকট হলে বা দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে দায়-দায়িত্ব কোনোভাবেই বিএনপি বা সরকার বিরোধীদের ওপর বর্তানো যাবে না। তবে কথাটা যখন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সংবাদে এসেছে তখন সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট বিষয় নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। 

নানা বৈষয়িক কারণ ছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্রান্ত পরিকল্পনা, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন কৌশল, দেশের প্রাথমিক জ্বালানি উত্তোলন অবজ্ঞা করে বিদেশি জ্বালানি নির্ভরতার কারণে অর্থনীতি সংকট পথে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত কমছে। রফতানিমুখী শিল্পগুলো জ্বালানি সংকটে দিশেহারা, ডলার সংকটে কাঁচামাল ও মেশিনারি আমদানি বাধাগ্রস্ত। দেনার দায়ে জ্বালানি বিদ্যুৎ খাতের অনেক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার পথে। দীর্ঘ ১৫ বছর সরকারে থাকা শাসক দল আওয়ামী লীগ কিছুতেই দায় দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। এই সংকটের জন্য কোনোভাবেই বিএনপি অথবা বিরোধী দলগুলোকে দায়ী করার সুযোগ নেই। 

দেশের কৃষক সমাজ সুযোগ পেলেই বাম্পার ফসল ফলাচ্ছে। ঢাকাসহ দেশের আনাচে-কানাচে প্রচুর শাকসবজি, মাছ-মাংস পাওয়া যাচ্ছে। শুধু সমস্যা আমদানিকৃত পেঁয়াজে। এছাড়া ইদানীং অন্যসব কিছুর দাম কমের দিকে। সরকার ঘনিষ্ঠ কিছু সিন্ডিকেটের কারসাজিতে মাঝেমধ্যে কিছু পণ্যের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হলেও সেটি নিয়ন্ত্রণ যোগ্য। তবে ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ বিদ্যুৎ চাহিদা সেচ মৌসুম, রোজা এবং গরমের কারণে বেড়ে যাবে। দেশের গ্যাস উৎপাদন কমছে, এলএনজি সরবরাহ বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বিশ্ববাজারে উচ্চমূল্য এবং দলের সংকটে জ্বালানি আমদানি ব্যাহত হবার কারণে লোড শেডিং বাড়তে পারে। শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হয়ে রফতানি আয় কমে যেতে পারে। এই সময়ে আবার ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হতে পারে। হয়তো সরকারের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনো কৌশল আছে। আর না থাকলে তার সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। 

সরকার এবং বিরোধীদলে অনেক দেশপ্রেমিক ব্যক্তিত্ব আছে। তারা বিশ্ব পরিস্থিতি বিষয়ে অবহিত। দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো হঠকারী কার্যক্রম কেউ গ্রহণ করবে না। জানি না, হয়তো নিজ দলের তৃণমূলকে চাঙ্গা করার জন্য রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, নয় তো আর কী।

শেয়ার করুন