বিশ্বের
সেরা পুলিশ বিভাগ বলে পরিচিত এনওয়াইপিডির
ডেপুটি ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পেয়েছেন
বাংলাদেশি-আমেরিকান খন্দকার আব্দুল্লাহ। খন্দকার আব্দুল্লাহই প্রথম বাংলাদেশি- আমেরিকান, যিনি নিউইয়র্ক পুলিশের
এমন উচ্চপদে আসীন হলেন। ডেপুটি
ইন্সপেক্টর খন্দকার আব্দুল্লাহ নিউইয়র্ক সিটির ৬৯ প্রিসেক্টে কমান্ডিং
অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত
২৩ ডিসেম্বর এনওয়াইপিডি’র পুলিশ একাডেমিতে
জমকালো এক অনুষ্ঠানে পদোন্নতি
প্রাপ্তদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে
দেন পুলিশ কমিশনার।
বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিবাসী হয়ে ১৯৯৩ সালে
খন্দকার আব্দুল্লাহ আমেরিকায় আসেন। ক্রিমিন্যাল জাস্টিসে স্নাতক করা খন্দকার আবদুল্লাহ
তাঁর কর্মের জন্য এর মধ্যে
পুলিশের অনেকগুলো মেডেল লাভ করেছেন। সিলেটের
বালাগঞ্জ থানার তালতলা গ্রাামের প্রয়াত খন্দকার মদব্বির আলী ও মুহিবুন্নেসা
চৌধুরীর ছেলে খন্দকার আবদুল্লাহ
শিশুকালে আমেরিকায় আসলোও সাবলীল বাংলায় কথা বলেন। পরিবার
নিয়ে তিনি নিউইয়র্কের লংআইল্যান্ড
এলাকায় বসবাস করেন। ২০০৫ সালের সামারে
নিউইয়র্কের পুলিশ বিভাগে যোগ দেন খন্দকার
আব্দুল্লাহ। তিনি কলেজে পড়ার
সময় জব ফেয়ারে দেখেন
এনওয়াইপিডিতে লোক নেয়া হচ্ছে।
প্রথমে অনেকটা খেয়ালের বশে তিনি খন্ডকালীন
ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দেন পুলিশ
বিভাগে। ইউনিভার্সিটিতে পড়া অবস্থায় সিদ্ধান্ত
নেন পুলিশ ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেওয়ার। অভিবাসী
পরিবারের সন্তান হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীতে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার স্বপ্ন
তাঁকে পেয়ে বসে সেই
সময়েই। ২০০৭ সালে পুলিশ
অফিসার হিসেবে শপথ নেন খন্দকার
আব্দুল্লাহ।
মনজুর
এলাহী হলেন এনওয়াইডি’র
লেফটেন্যান্ট
মনজুর
এলাহী ৯০ এর দশকের
শুরুতে তার বাবা-মায়ের
সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। তিনি
জনজে কলেজ অফ ক্রিমিনাল
জাস্টিস থেকে ক্রিমিনাল জাস্টিস
বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। জনজে
কলেজে পড়ার আগে তিনি
নিউ ইয়র্কের সিটি কলেজে ইলেকটিক্যাল
ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও পড়াশোনা করেছেন। লেফটেন্যাটে পদোন্নতির আগে তিনি ম্যানহাটনের
২৫ তম থানায় সার্জেন্ট
হিসাবে এবং ব্রঙ্কসের ৪২
তম থানায় পুলিশ অফিসার হিসাবে কাজ করেছিলেন। তার
১৪ বছরের সফল কর্মজীবনে, তিনি
পেট্রোল সার্ভিস ব্যুরো এবং কাউন্টার টেরোরিজম
ব্যুরোসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্টে
কাজ করেছেন। এক সাক্ষাত্কারে মনজুর
এলাহি বলেছেন তিনি নিউইয়র্ক শহর
এবং নিউ ইয়র্কের জনগণের
সেবা করতে পেরে খুব
গর্বিত। তিনি একজন পুলিশ
লেফটেন্যান্ট হিসাবে নিউ ইয়র্কারদের সেবা
চালিয়ে যেতে চান। তিনি
স্থায়ীভাবে তার মেয়ে লিয়া
এলাহি এবং পরিবারের সাথে
নিউ ইয়র্কে থাকেন। মনজুর এলাহী সকলের আশীর্বাদ চান যাতে তিনি
নিউইয়র্ক সিটির সেবা চালিয়ে যেতে
পারেন। মনজুর এলাহী বাংলাদেশী আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন ট্রাস্টি এবং বর্তমানে তিনি
বাংলাদেশী আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের একজন সক্রিয় সদস্য।
মেহেদী মামুন হলেন এনওয়াইপিডি’র
একজন সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সার্জেন্ট
যশোরের
পদ্মবিলা নিবাসী রোকসানা বেগম এবং মো
রবিউল ইসলামের ছেলে । তিন
ভাইবোনের মধ্যে তিনি পরিবারের বড়
সন্তান। যশোর এম এম
কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি
শেষ করার পর ভাগ্য
বদলাতে ২০০৫ সালে পাড়ি
জমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০০৬ সাল থেকেই
কর্মরত আছেন নিউইয়র্ক সিটি
পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সাথে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত
ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট হিসেবে নিউইয়র্ক শহরকে সেবা দেয়ার পর
তিনি পুলিশ অফিসার হিসেবে পদোন্নতি গ্রহণ করেন। দায়িত্বে ছিলেন ৪৩ প্রিসেন্টে। ২০১৭
সাল থেকে তিনি সফলভাবে
নিষ্ঠার সাথে কাউন্টার টেররিজমে
দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
২৩ সে ডিসেম্বর তিনি
সার্জেন্ট হিসেবে নিউইয়র্ক সিটি পুলিস ডিপার্টমেন্টে
সততার সাথে কাজ করার
শপথ গ্রহণ করলেন। মেহেদী মামুন বর্তমানে বাংলাদেশী আমেরিকান পুলিশ এ্যাসোসিয়েশনে কো-ট্রেজারার হিসেবে
দায়িত্বপালন করছেন।
এ ছাড়াও গৌতম কে কুন্ডু,
জিনাত ফাতেমা, এমডি এ রহমান
অ্যাসোসিয়েট ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট (ট্রাফিক সুপারভাইজার) পদে উন্নীত পদোন্নতি
পান। বাংলাদেশি সহকর্মীদের পেশাগত উন্নয়ন ছাড়াও বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য নিরলসভাবে কাজ
করছে বাপা। যা ইতিমধ্যে ব্যাপক
প্রশংসিত হয়েছে। পদোন্নতি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশন এর কর্মকর্তারাসহ অনেক
বাংলাদেশী পুলিশ অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। বাপার প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন কারাম চৌধুরী, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এরশাদ
সিদ্দিকী এবং সেক্রেটারি লেফটেন্যান্ট
একেএম আলম (প্রিন্স) পদোন্নতিপ্রাপ্তদের
অভিনন্দন জানিয়েছেন।