৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০৬:৩৩:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


আর নয় প্রতিবাদ এখন থেকে প্রতিরোধ : গয়েশ্বর
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০২-২০২৪
আর নয় প্রতিবাদ এখন থেকে প্রতিরোধ : গয়েশ্বর বক্তব্য রাখছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়


নারী ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘‘আজকে সকল পেশার মানুষ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, শত নির্যাতনের মধ্যেও তারা প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেনি। এটাই আমাদের ভরসা, এটা দেখে আমরা আশাবাদী যে আমরা শেষ সংগ্রাম করতে পারবো। নারীর ওপরে এহেন নির্যাতনের ঘটনা- আমি বলি, আজ বাংলাদেশ ধর্ষিত, আজ দেশের স্বাধীনতা ধর্ষিত, আজ দেশের সার্বভৌমতত্ব ধর্ষিত। আমি বলতে চাই, আর নয় প্রতিবাদ এখন থেকে প্রতিশোধ।” 

ছাত্রলীগের ‘সোনার ছেলেদের’ অপকর্মের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকে ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) কি জবাব দেবেন? একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালিত হয় সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা লেখাপড়া করেন অথবা যারা শিক্ষকতা করেন তাদের মান-সম্মান কোথায় থাকবে? একটি নামকরা মহিলা কলেজের ঘটনা কয়েক বছর আগে শুনেছি। সেই কলেজের মেয়েদেরকে যদি বলা হয় তুমি কোন কলেজে পড়ো- সে (নারী শিক্ষার্থী) নাম বলতে লজ্জা পায়। মুক্তিযুদ্ধে মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করেছিলো করা? পাকিস্তানের বর্বরবাহিনী। আজকে যারা আমাদের মা-বোনের সম্ভ্রমহানি নষ্ট করছে তারা কোন বাহিনী? তারা কি কাদের বাহিনী না কি হাসিনা বাহিনী। এদেরকে ক্ষমতায় রাখলে এদেশের মানুষ নিরাপদ থাকবে না, এদেশটাও নিরাপদ থাকবে না। মান-সম্মান তো দূরের কথা অর্থাৎ জীবনে বেঁচে থাকার সুযোগ থাকবে না। 

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘নারী ও শিশু অধিকার ফোরামে’র উদ্যোগে ‘নারী সমাজের ওপর অপমানের শেষ কোথায়’ শীর্ষক এই মানববন্ধন হয়। এতে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ সম্বলিত ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে নারীরা দাঁড়িয়ে তাদের প্রতিবাদ জানায়। 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, আমরা এলাকায় ২০১৮ সালের ভোটে এক মহিলা (সুবর্ণচর) আমার জানাশুনা নেই, পরিচয় নেই, ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়ে গেছেন, ধানের শীষে ভোট দেয়ার কারণে তাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। সেই ঘটনার মামলার রায় হয়েছে। ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন। আমি জানি না নিম্ন আদালতের এই রায় শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে কাযর্কর হবে কিনা? কারণ এমন অনেক রায় কাযর্কর হয়নি। এই কারণে আমার সন্দেহ। যে দেশে স্বামীকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্ত্রীকে উপভোগ করতে চায় সে দেশে আর কি হবে? আসুন আমরা কে কি দল করি, কার কি পদ-পদবি আছে সব কিছু ভুলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আমার মনে হয়, আমাদেরকে আরেকটা যুদ্ধ করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে হটাতে হবে। 

ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, স্বাধীনতার পরেও দেশের এরকম অবস্থা ছিলো-গত কয়েক কয়েকদিনের ঘটনাবলী যদি আমরা দেখি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বডিফিল্ডার ফারুক সাহেব থেকে শুরু করে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালীর সূবর্ণচরে ২০১৮ সালে একজন মহিলা তাদের কথা মতো ভোট না দেয়াতে তাকে ধর্ষণ করেছিলো- এই অবৈধ সরকারের প্রধানতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে খুন-গুম, নির্যাতন-ধর্ষণ, মানুষের অধিকার হরণ, অর্থনীতি ধবংস করা, মানুষকে কষ্ট দেয়া। এদের একটাই কাজ এসব কর্মের মাধ্যমে আমাদের শান্তিপ্রিয় সমাজকে ধবংস করা। অতএব আমরা যতই মানববন্ধ করি, যতদিন এই সরকারের পতন না ঘটবে ততদিন আমাদের এই দাবিকে যেটা গুম, খুন, ধর্ষণ, নির্যাতনের হাত থেকে এই জাতিকে মুক্ত করতে পারব না। এদের পতন ঘটাতে হবে। আমি আশা করি, আমাদের নেতৃস্থানীয় নেতারা আছেন তারা অচিরেই এমন কর্মসূচি দেবেন, যেন এই সরকারের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশকে ঝঞ্জাটমুক্ত করতে পারি, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারি, বাংলাদেশে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি। 

সভাপতির বক্তব্যে সেলিমা রহমান বলেন, আজকের এই মানববন্ধন প্রতিবাদের মানববন্ধন নয়, এটা হলো প্রতিরোধের মানববন্ধন। আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব। কিছুদিন আগে আমি, ডামি দিয়ে ভুয়া নির্বাচন করে একটা অবৈধ সরকার যারা আজকে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তাদেরই সোনার ছেলেরা এই যে জাহাঙ্গীরনগর বিশববিদ্যালয়ে একজন নারীকে ধর্ষণ করেছে। শুধু একজন নারী নয়- এদের কীর্তি-কাহিনী অনেক। এই সোনার ছেলেদের হাতে তারা লাঠি তুলে দিয়েছে, এই সোনার ছেলেদের হাতে তারা হাতুড়ি-প্যারেগ তুলে দিয়েছে, এই সোনার ছেলেদের মাথায় হেলেমেট পরিয়ে তাদেরকে হেট বাহিনী বানিয়ে সাধারণ মানুষের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন করে আজকে তারা সোনা সোহাগা হয়ে একের পর এক অপকর্ম করছে। একজন বক্তা বলেছেন, ধর্ষিত বাংলাদেশ। যারা জোর করে দখল করে সেটাকে বলে ধর্ষণ। আজকে আমরা বিচার চাই না। কার কাছে বিচার চাইব? যেখানে প্রশ্রয় পায়, যেখানে বিক্রি হয়, যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ যারা সম্পূর্ণ রকমে আজকে দালালি করে চুপ করে বসে থাকে তাদের কাছে কিসের বিচার চাইব। বিচার হবে আমাদের জনগনের কাছে, বিচার করবে জনগণ। নারীদের ওপর ধর্ষণের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে জেগে উঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের তরুণ সমাজ, ছাত্রসমাজসহ সমগ্র জনগণকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। তানাহলে এই বাংলাদেশশকে আমরা রক্ষা করতে পারবো না। ‘মিয়ারমারের গোলা: কিসের আলামত’ 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকে মিয়ানমারের মতো দেশ গুলি করে সেই গুলি আমাদের দেশের সীমান্তে পড়ে। আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছে এবং মারা গেছে। এটা কিসের আলামত! চীনের সাথে এতো বন্ধুত্ব! মিয়ানমার চীনের লালিত দেশ। সেই দেশ থেকে গুলি আসে, রাখাইন থেকে সোলজাররা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়-এটা কিসের লক্ষণ? ভারতের বিএসএফ এই ধরনের ঘটনায় ৭শ’ লোককে হত্যা করলো-একটা প্রতিবাদ করেন না। কি কারণে বিজেবি রেখেছেন? কি কারণে বিজেপির জন্য অস্ত্র দেয়া হয়? আমি বলি, বার বার অপকর্ম করে পার পেয়ে গেলেও সকল অপকের্মর জবাব একদিন আপনাকে (সরকার) দিতে হবে, বার বার দেয়ার সুযোগ পাবেন না।

সংগঠনের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই মানববন্ধনে সাবেক সাংসদ শিরিন সুলতানা, রাশেদা বেগম হীরা, নিলোফার চৌধুরী মনি, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের রুহুল আমিন গাজী, কাদের গণি চৌধুরী, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের তাইফুল ইসলাম টিপু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আরিফা সুলতানা রুমা, নাদিয়া পাঠান পাপন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন