০২ মে ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৭:২১:২১ অপরাহ্ন


বিএনপি-আ.লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, জনমনে আতঙ্ক
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০১-২০২৩
বিএনপি-আ.লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, জনমনে আতঙ্ক নয়াপল্টনে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচি


বিএনপির গণঅবস্থান আজ ১১ জানুয়ারি। পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটা বিভাগীয় সদরে একই সময় পালিত হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে গত সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, ‘গণতন্ত্র হরণকারী সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে ১১ জানুয়ারি ২০২৩ দেশব্যাপী বিভাগীয় সদরে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচি দেশব্যাপী বিভাগীয় সদর তথা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর, কুমিল্লা ও ফরিদপুরে ১১ জানুয়ারি ২০২৩, সকাল সকাল ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত গণঅবস্থান পালিত হবে।’

এতে আরো জানানো হয়, ‘বিএনপির শীর্ষনেতৃবৃন্দ বিভাগীয় পর্যায়ে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন। বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ জনসাধারণকে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’  

মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগও

বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগও এখন কর্মসূচি দিচ্ছে। এ কালচারটা আগে না থাকলেও গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের দিনে পাড়া-মহল্লা ও বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে সতর্ক পাহারা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। উদ্দেশ্য, বিএনপি যেন সমাবেশের নামে কোনো নাশকতা, নৈরাজ্য, সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড করতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা, সজাগ থাকা। ১০ ডিসেম্বরের দিনে সেটা ছিলও। রাজধানীতে আগের দিন থেকেই অলিখিত হরতাল হয়ে গিয়েছিল। যাত্রীবাহী বাস চলেনি। সংঘর্ষের ভয়ে কোনো প্রাইভেট যানবাহনও মানুষ বের করেছে তুলনামূলক খুবই কম। 

এরপর ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি ও সমমনা দলসমূহের ছিল গণমিছিল কর্মসূচি। ২৪ ডিসেম্বর ওই কর্মসূচি থাকলেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি ও সমমনাদের ওই কর্মসূচির দিন পিছিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানান, যেহেতু ২৪ ডিসেম্বর ছিল আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল। ফলে বিএনপি ঢাকার কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি যাতে করা যায়। কিন্তু ওই ৩০ ডিসেম্বরও আওয়ামী লীগ ১০ ডিসেম্বরের মতো ওয়ার্ড, মহল্লা ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে পাহাড়া বসায়। এতে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়। 

ঠিকই একইভাবে আজ বিএনপি ও সরকারবিরোধী বিএনপি সমমনাদের পূর্বঘোষিত অবস্থান ধর্মঘট। কিন্তু আওয়ামী লীগ এদিনেও তাদের পূর্বের মতো কর্মসূচি রেখেছে রাজপথে। অর্থাৎ অন্য দুইবারের ন্যায় এদিনও তারা থাকবে রাজপথে। এদিন  আওয়ামী লীগ রাজধানীতে শান্তি সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এছাড়া ও প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে সতর্কাবস্থানে থাকবে ক্ষমতাসীন দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান আগেই সাংবাদিকদের বলেন, ১১ জানুয়ারি আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। এছাড়াও ১১ জানুয়ারি ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের সামনে সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র জানান, ১১ জানুয়ারি আমাদের শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি রয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া কেউ যেন কোনো অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য ওইদিন প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবেন।

এদিকে বিএনপি ও সমমনাদের অবস্থান কর্মসূচির দিনে পাল্টা রাজপথে থাকার ঘোষণাকে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ বলছে তারা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিচ্ছে না। এবং পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্বাসীও না।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্বাসী নই। আমরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেই না, দিচ্ছিও না। তবে কেউ যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, দেশ ও জনগণের ক্ষতি করতে চায়, তাহলে তো জনগণের রাজনৈতিক দল হিসেবে বসে থাকার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া আছে। তারা সতর্ক থাকবেন। কেউ যেন কর্মসূচির নামে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, তারা সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন, রাজপথে থাকবেন।

শেয়ার করুন