২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ৬:০৫:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


যতো দোষ নন্দ ঘোষ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০১-২০২৩
যতো দোষ নন্দ ঘোষ


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশন শেষে বাংলাদেশে ফিরে গেছেন। প্রতি বছরই জাতিসংঘের অধিবেশন শেষে বাংলাদেশে গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এবারো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাঙ্কশন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, র‌্যাবতো যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে সৃৃষ্টি করেছেন এবং র‌্যাবের ট্রেনিং যুক্তরাষ্ট্রই দিয়েছে। আপনারা যেভাবে ট্রেনিং দিয়েছেন র‌্যাব সেভাবেই কাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ট্রেনিং ভালো দিলে তারাও ভালো করতো। যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে শুধু র‌্যাব গঠন করা হয়নি। অস্ত্রও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি সিস্টেমও তারা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, এখন আমার কি করার আছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকাÐ নিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রেও পুলিশ মানুষকে গুলি করে মারে। দোষ হয় শুধু আমাদের। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি হত্যার একটির বিচার হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রায় প্রতিটি ঘটনার বিচার হয়।

অদ্ভুত সব তথ্য দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি কি জেনে-শুনে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন? তা না হলে এতোভাবে নির্জ্বলা মিথ্যাচার কী করে সম্ভব? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি ঘটনার বিচার হয়, কিন্তু বাংলাদেশে হয় না। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলে পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিচারালয় আওয়ামী লীগের বৈঠকখানায় পরিণত হয়েছে। শুধু ছোট্ট একটি উদাহরণ দিই। জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনায় পুরো আমেরিকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিলো। সেই ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার হয়েছে। আমেরিকার অনেক স্টেটে পুলিশ রিফর্ম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্টেটের লোক নিয়োগ দেয়া হয় না, পুরো যুক্তরাষ্ট্র থেকে লোক নিয়োগ করা হয়। পুলিশ নিয়োগের আগে তার ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা হয় না যে, সে কোন পার্টি করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে তো এখন প্রকাশ্যে লোকজন বলাবলি করছে গোপালি পুলিশ। আমেরিকার বিচারব্যবস্থায় বিচারপতি নিয়োগের স্বচ্ছ ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখন বিচারপতি নিয়োগের একমাত্র যোগ্যতা হচ্ছে দলীয় ক্যাডার। ছাত্রলীগ করলেই সে নিয়োগ পাচ্ছে। এমন কি দলীয় প্রীতির কারণে নিউইয়র্কের একসময় ট্যাক্সিচালকও এখন বাংলাদেশে বিচারপতি! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখানে শুধু দুটো উদাহরণ তুলে ধরা হলো। কার সাথে কী তুলনা করেন? যুক্তরাষ্ট্রের বহু প্রেসিডেন্টের বিচার হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে? নিশ্চয় আপনার স্মরণ আছে ১/১১-এর সরকারের সময় আপনার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র ৭টি মামলা ছিলো। সমঝোতা করে ক্ষমতায় আসার পর আপনি আপনার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা তুলে নিলেন। আর বেগম খালেদা জিয়ার মামলা রেখে দিয়ে ফরমায়েশি রায় দিয়ে তাকে এখনো জেলে বন্দি রেখেছেন। এই হলো বাংলাদেশ ও আমেরিকার পার্থক্য। আপনার সরকার ভোটচুরি এবং ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছেন, আমেরিকায় কোনো প্রেসিডেন্ট ভোটচুরি বা ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসেননি। তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের তুলনা করেন কীভাবে? আসলে আপনারা বাংলাদেশের মানুষকে আহম্মক মনে করেন। বাংলাদেশের মানুষ যদি আহম্মকই না হবে, তাহলে আপনার কথা কীভাবে বিশ্বাস করে? র‌্যাব মানুষ হত্যা করছে, মানুষকে গুম করছে। র‌্যাব আপনার সরকার দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করছেন- এটা দিবালোকের মতো সত্য। র‌্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তা যখন রাজনীতি নিয়ে কথা বলেন, তখন কারো বুঝতে বাকি থাকে না যে, র‌্যাব কার স্বার্থে কাজ করছে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা এবং ভেজাল কথা বলে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যাবে না। একদিন না একদিন সত্য প্রকাশিত হবেই। দলীয় সাংবাদিক দিয়ে যতোই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন না কেন সত্য বেরিয়ে আসবেই। আর আরেকটি কথা যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে র‌্যাব সৃষ্টি করা হয়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রই র‌্যাবের সমালোচনা করছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে। সুতরাং আপনার উচিত র‌্যাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার। আপনি বলেছেন, আমার করার কিছু নেই। তার অর্থ কী? র‌্যাব কী আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যে র‌্যাব আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে সেই র‌্যাব বাহিনী তাহলে বাদ দিচ্ছেন না কেন? বাংলাদেশের মানুষের সাথে ছলচাতুরি না করে গণতান্ত্রিক পরিবেশন তৈরি করুন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলের বন্ধু না বানিয়ে মানুষের বন্ধুতে পরিণত করুন। নিজের দোষ অন্যের ওপর চাপানো বন্ধ করুন। আর যতো দোষ নন্দ ঘোষ এই পলিসি থেকে বেরিয়ে আসুন।

শেয়ার করুন