২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৭:৪২:১৮ পূর্বাহ্ন


দেশকে রোশান
সবসময় সবকিছু সমানভাবে যায় না
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৩-২০২৩
সবসময় সবকিছু সমানভাবে যায় না জিয়াউল রোশান


জিয়াউল রোশান। বর্তমানে ঢাকার ব্যস্ত নায়কদের একজন তিনি। কাজ করছেন ওপার বাংলাও। কলকাতার ‘মীর জাফর: চ্যাপ্টার টু’র প্রধান চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। গত বছরের শেষ দিকে এ সিনেমায় তার লুক প্রকাশ হয়েছিল। অভিনয় ও ব্যক্তিজীবনের নানা বিষয় নিয়ে রোশন কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির

প্রশ্ন: বাংলাদেশে-ভারত দুই জায়গায়ই কাজ করছেন। দর্শক প্রতিক্রিয়া কোন জায়গা থেকে বেশি পান?

জিয়াউল রোশান: আমি ছয় বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছি। তারপরও নিজেকে নতুন মনে হয়। অভিনয়ের জায়গাটায় প্রতিনিয়ত শিখি। এ কারণেই বোধয় এমনটা হয়। দর্শক প্রতিক্রিয়া দুই জায়গা থেকেই পাই। তবে ভালো লাগে বাংলাদেশের দর্শকদের আমার প্রতি আগ্রহ দেখলে। সব সময়ই মনে হয় দেশই আগে। যদি সংস্কৃতির সীমারেখা নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই। 

প্রশ্ন: কলকাতার নতুন আরো একটি সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন। বিষয়টি স্পষ্ট করবেন?

জিয়াউল রোশান: আমার তৃতীয় কাজ হতে যাচ্ছে কলকাতায়। তবে মুখ্য ভূমিকায় এটাই কলকাতায় প্রথম সিনেমা। সিনেমার নাম মীর জাফর। এ সিনেমার মূল বিষয় গল্প। এতে যারা অভিনয় করছেন আমার সঙ্গে, তারা সবাই কলকাতার সুপরিচিত তারকা। মীর জাফর শব্দটার সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। আর সিরাজউদ্দৌলা ও মীর জাফরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুর্শিদাবাদের ইতিহাস। জীবিকার তাগিদে ভারতে চলে যাওয়া এবং নানা সমস্যার সম্মুখীন হওয়া, এসব নিয়েই এ সিনেমা। খুব দারুণ একটি প্লাটফর্মে সিনেমাটা হতে যাচ্ছে। কলকাতার মুর্শিদাবাদেই এর শুটিং হবে।

প্রশ্ন: এখানে কি আমরা সিরাজউদ্দৌলার মীর জাফরের গল্প দেখতে পাব?

জিয়াউল রোশান: না, তবে সিনেমাটির মধ্য দিয়ে দর্শক এ সময়ের প্রেক্ষাপটে বর্তমানের মীর জাফরকে দেখতে পাবে। এ চরিত্রে আমিই থাকব। অন্য চরিত্রগুলোয় ফেরদৌস আহমেদ ভাই, শ্রাবন্তি, প্রিয়াংকা সরকার ও শ্রীলেখা মিত্রসহ আরো অনেককে দর্শক দেখতে পাবে। 

প্রশ্ন: কলকাতার নির্মাতারা আমাদের কনটেন্ট কীভাবে মূল্যায়ণ করেন?

জিয়াউল রোশান: বরাবরই আমাদের দেশে ভালো কাজ হয়। সম্প্রতি দেখছি, তারা আমাদের কাজগুলো নিয়ে অনেক প্রশংসা করছেন। আমাদের দেশের কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ আছে বলেই তারা মুখ্য চরিত্রে বাংলাদেশের তারকাদের কথা ভাবছেন। যেমন আমার সিনেমার কথাই বলা যায়, তারা আমার ওপর বিশ্বাস রেখেই এর মুখ্য চরিত্রে আমাকে নিয়েছেন। একটা সিনেমার মূল চরিত্রেই যখন একজন বাংলাদেশী থাকে, তার মানে আমাদের দেশের ইন্ডাস্ট্রিকে পিছিয়ে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের তারকা ও ইন্ডাস্ট্রি কলকাতায়ও গুরুত্ব পাচ্ছে।

প্রশ্ন: ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার উপলব্ধি কী? 

জিয়াউল রোশান: আমার বিশ্বাস, সামনে বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি আরো এগিয়ে যাবে। মাল্টিপ্লেক্সের সংখ্যা বাড়বে, সেই সঙ্গে হল নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। পরাণ, হাওয়া, অপারেশন সুন্দরবনের মতো সিনেমাগুলো খুব ভালো সাড়া পেয়েছে। আমার মনে হয়, এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং সামনে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আরো ভালো করবে। অন্যদিকে মীর জাফরের মাধ্যমে কলকাতায় আমার নতুনভাবে যাত্রা হচ্ছে। এর আগে অন্যান্য প্রডাকশন হাউজ থেকে সিনেমার পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। এমনকি বুম্বাদার প্রডাকশন থেকে এ প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে লম্বা একটা সময় কাজ করতে পারিনি। কলকাতার নির্মাতা ও তারকারাও ওই সময়ে বাংলাদেশে এসে কাজ করতে পারেননি। আমার মনে হয়, সম্ভবত মীর জাফরের মধ্য দিয়ে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়মিত কাজ করার একটা সূচনা হতে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: বর্তমান অবস্থান নিয়ে কি আপনি খুশি?

জিয়াউল রোশান: আমার মনে হয় যা-ই হয়ে যাক, ধৈর্য ধরতে হবে। সবসময় সবকিছু সমানভাবে যায় না। যেমন এখন ইন্ডাস্ট্রি ভালো যাচ্ছে। আমার একটা কাজও খুব ভালো সাড়া ফেলেছে। এখন ধৈর্য ধরছি, এমন এক সময় আসবে ব্যাক টু ব্যাক খুব ভালো যাবে এবং দর্শকও খুব ভালোভাবে নেবে।

প্রশ্ন: অভিনয় নিয়ে আপনার ভাবনা কী? 

জিয়াউল রোশান: একজন ভার্সাটাইল অভিনেতা হওয়া। আমার মূল বিষয় হচ্ছে অ্যাকশন মেইনস্ট্রিম কমার্শিয়াল। অ্যাকশন আমার পছন্দের বিষয়। আমি মনে করি, অন্যান্য বিষয় থেকে আমি এটায় একটু দক্ষ। তবে তার সঙ্গে ভার্সাটাইল বিষয়গুলো জড়িত থাকে। ভার্সাটাইল অভিনেতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চাই।

প্রশ্ন: এখন আর কোনো প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন? 

জিয়াউল রোশান: হ্যাঁ, কয়েকটি নতুন প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। নাম এখনই না বলি। দুটি ওয়েব সিরিজ করেছি। এর মধ্যে একটির নাম হারাধনের দুটি ছেলে। আরো কিছু রয়েছে, এগুলোর নাম পরে জানাব।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের ওটিটি ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আপনার ভাবনা?

জিয়াউল রোশান: আমাদের দেশের ওটিটি ইন্ডাস্ট্রিকে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখছি। কারণ আমাদের ওটিটিতে অনেক ভালো কাজ হচ্ছে। এর দর্শকও আলাদা। মানুষ ওটিটির ভিন্নধারার কাজ দেখতে চায়। আমি নিজেও এর ফ্যান। দেশ ও দেশের বাইরের ওটিটিগুলোয় বহু ভালো কনটেন্ট রয়েছে। যেগুলো মানুষ দেখছে, আমি নিজেও দেখি। আমার ১০টা সিনেমার কাজ থাকলে কমপক্ষে দুটি ওটিটির কাজ থাকবে। আর ওটিটির কাজ খুব ইন্টারেস্টিং। বিভিন্ন তারকার সঙ্গে দেখা হয়, ভালো কিছু হয় এর মধ্য দিয়ে। 

প্রশ্ন: শুনেছি, আপনাদের প্রায় পাঁচ বছরের প্রেম। বিয়ে কবে?

জিয়াউল রোশান: আমাদের সম্পর্কটা দুই পরিবারেই জানে। সুতরাং তাড়াহুড়ার কারণ নেই। সে এখন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী। কিছুদিনের মধ্যে পড়াশোনা শেষ হবে। বিয়ে করতে আরও এক বছর সময় নেব।

শেয়ার করুন