০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ০৪:২৯:০৭ অপরাহ্ন


ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বললেন
ভৌগোলিক বাস্তবতাকে অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় রূপান্তর করতে হবে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৫-২০২৩
ভৌগোলিক বাস্তবতাকে অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় রূপান্তর করতে হবে সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা


বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য, ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং ভৌগোলিক নৈকট্যের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে রূপ দিতে হবে। গত ২ মে মঙ্গলবার উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে ‘মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি বিটউইন ইন্ডিয়া অ্যান্ড বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই দুই দেশের সরকার ও অন্যান্য অংশীজনেরা পারস্পরিক বাণিজ্য বেগবান করতে সংযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে মনযোগি হয়েছি। এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এক্ষেত্রে বেশ কিছু সাফল্য এসেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।

ঢাকায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এই সেমিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিডি-এর ডিস্টিংগুইশড ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সিইও আহসান খান চৌধুরী, ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট শোয়েব চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-এর অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার।

ড. আতিউর রহমান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ একে অপরের বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগি হলেও পরস্পরের সঙ্গে যতোটা বাণিজ্য হওয়া সম্ভব তাদের মধ্যে তা দেখা যাচ্ছে না। এ জন্য পারস্পরিক সংযোগ বৃদ্ধির বিকল্প নেই। তবে, তাঁর মতে- দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের জন্য এককভাবে সড়ক বা রেল বা জলপথে পণ্য পরিবহনের দিকে না গিয়ে মিশ্র পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহন করা গেলে তা বিশেষ সুফল দিবে। তিনি আরও বলেন যে, যোগাযোগ অবকাঠামো ও লজিস্টিকস-এর ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা গেলে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ১৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। 

এদিকে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে স্বাধীনতার পর ৪৭ বছর কেটে গেলেও পরের মাত্র ৩ বছরেই এই পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান ড. মুস্তাফিজুর রহমান। তবে এক্ষেত্রে পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে বন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নকে আরও গতিশীল করা দরকার বলে তিনি মনে করেন। 

ভারতের অন্যান্য অংশের তুলনায় উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর সাথে বাণিজ্য সংযোগ বৃদ্ধির দিকে বাংলাদেশের বিশেষ মনযোগ দেয়া দরকার বলে মনে করেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সিইও আহসান চৌধুরী। তার মতে ভারতের ত্রিপুরার ব্যবসায়িদেরকে সহজে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার ব্যবস্থা দ্রুততম সময়ের মধ্যে করে দেয়া গেলে উভয় দেশের জনগণই এর সুফল ভোগ করবেন। এছাড়াও বক্তারা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে জ্বালানি বাণিজ্য, তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগে পারস্পরিক সহযোগিতা, পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে সাধারণ নীতিমালা নিশ্চিতকরণের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

শেয়ার করুন