২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৫:১৯:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


৮ নভেম্বর মধ্যবর্তী নির্বাচন : গভর্নর পদে হোকুল-জেলডিন
ডেমোক্র্যাট না রিপাবলিকান কোন দলের নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে কংগ্রেস
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১১-২০২২
ডেমোক্র্যাট না রিপাবলিকান কোন দলের নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে কংগ্রেস


অর্থনীতি ও মুদ্রাস্ফীতি আমেরিকার আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোটারদের সামনে প্রধান ইস্যু হিসেবে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির ফলে একদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের রেকর্ড পরিমাণ মূল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে দেশের বর্তমান অর্থনীতির গতিধারা অবধারিত বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মত পোষণ করেছেন। বাইডেন প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয় দুটি জনগণের আকাঙ্খা অনুযায়ী সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলে অর্ধেক আমেরিকান মত প্রকাশ করেছে। তাদের ধারণা রিপাবলিকানরা ইস্যু দুটি সমাধান ভাল করতে পারবেন। এই সমীকরণে রিপাবলিকানরা ডেমোক্র্যাটদের তুলনায় এগিয়ে আছে বলে নানা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে।

আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে এবরশন, গান কন্ট্রোল ও গ্যাসের উর্ধ্ব মূল্যের মত ইস্যুগুলি ভোটারদের প্রভাবিত করতে যাচ্ছে। এবরশন ইস্যুতে ডেমোক্র্যাটরা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকানদের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে  রয়েছেন। দেখা যাচ্ছে প্রতি পাঁচজন ভোটারের মধ্যে তিন  জনই চান এবরশন লিগ্যাল হোক। শতকরা ৬১ ভাগ আমেরিকানের সমর্থক রিপাবলিকানরা এবরশন বিষয়ে রক্ষণশীল মনোভাব পোষণ করেন। এবিসি আইপিএস ও এস সর্বশেষ যে সমীক্ষা প্রকাশ করেছে তাতে আরো দেখা যায় শতকরা ২৬ ভাগ অর্থনীতি ও শতকরা ২৪ ভাগ ভোটার মুদ্রাস্ফীত নিয়ে তাদের উদ্বেগ জানিয়েছে। 

কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে নানা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে। সিনেটের সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেতে পেনসেলভানিয়া, এরিজোনা, জর্জিয়া আসনের দিকে সবার চোখ। পেনসেলভানিয়ায় ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী বর্তমান স্টেট লে. গভর্নর জন ফেটারম্যান। তার সাথে লড়ছেন খ্যাতনামা চিকিৎসক ও টিভি ডাক্তার মেহমেত অজ। এরিজোনা স্টিটে ডেমোক্র্যাট মার্কক্যালী ও রিপাবলিকান প্রার্থী ব্লেক মাস্টার্স। আসনটি ছিল সাবেক রিপাবলিকান সিনেটর ম্যাক কেইনের। এই আসনে জাতীয় ইস্যু ছাড়াও বর্ডার দিয়ে প্রবেশকারী নন ইমিগ্র্যান্ট বিষয়টিও প্রাধান্য পাচ্ছে। জর্জিয়ায় বর্তমান ডেমোক্র্যাট সিনেটর র‌্যাফেল ওয়ারনক মোকাবেলা করছেন রিপাবলিকান হেরশেল ওয়াকারকে। উল্লেখ্য ২০০৫ সালের পর ২১ সালের স্পেশাল নির্বাচনে  প্রথম ডেমোক্র্যাট হিসেবে ওয়ারনক ইউএস সিনেটর নির্বাচিত হন। এর আগে রিপাবলিকান সিনেটর জনি আইজ্যকসন স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।

নিউইয়র্ক স্টেট ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত হিসেবে পরিচিত। এখানে বর্তমানে সিনেট মেজরিটি লিডার চাকশুমার (ডেমোক্র্যাট) এর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান জো পিনিয়ন। শুমার বিজয়ী হবেন সেরকম আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নিউ ইয়র্ক স্টেট গভর্নর পদে বর্তমান গভর্নর ক্যাথি হোকুলের বিরুদ্ধে লড়ছেন রিপাবলিকান লি জেলডীন। আইন শৃঙ্খলা ইস্যুটি প্রচারণায় তুলে ধরেছেন জেলডীন। যত দিন ঘনিয়ে আসছে তত গভর্নর হোকুলের সাথে ভোটারের ব্যবধান কমছে বলে সমীক্ষাগুলো বলছে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্যাথি হোকুলই জয়ী হবেন। 

নিজ নিজ দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রেসিডেন্ট বাইডেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ হেভিওয়েট নেতারা। চলছে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ। বারাক ওবামা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমেরিকার গণতন্ত্র আজ হুমকির সম্মুখীন। 

বর্তমান কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ডেমোক্র্যাটদের দখলে তাদের রয়েছে ২২০ আসন, অন্যদিকে রিপাবলিকানদের আসন সংখ্যা ২১২। কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সিনেটে রিপাবলিকান দলের আসন সংখ্যা ৫০। ডেমোক্র্যাট দলের ৪৮ বাকি দু’জন ইন্ডিপেনডেন্ট হলেও তারা ককাসের মাধ্যমে ডেমোক্র্যাট দলের সাথে যুক্ত। 

এদিকে নির্বাচনে গোলযোগের আশঙ্খা করছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোটার ভোট কেন্দ্র এবং ভোট পরিচালনাকারী পোলিং কর্মকর্তাদের উপর হামলা হতে পারে বলে বলা হয়েছে। সানফ্রানসিসকোর নিজ বাড়িতে স্পীকার ন্যান্সি পেলোসির স্বামীর উপর দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনায় আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।

ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদানের আর বাকি রয়েছে মাত্রা সাত দিন। কিন্তু সপ্তাহ দুয়েক আগে এরিজোনা, জর্জিয়া ও পেনসিলভানিয়াসহ বিভিন্ন স্টেটে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ২২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ আগাম অথবা মেইলের মাধ্যমে ভোট দিয়েছে। গত রোববার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নাতনীকে সাথে নিয়ে ডেলওয়ারে তার ভোট প্রদান করেছেন। নিউ ইয়র্ক স্টেটে এই দিন থেকে আগাম ভোট প্রদান শুরু হয়েছে। গত তিন দিনে এই রাজ্যে ১২৭,০০০ ভোটার ভোট দিয়েছেন। ক্যাথি হোকুল সহজে জিতবেন এমনটাই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রমশ: তা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠছে। ফলে দুদলের হেভিওয়েট নেতারা প্রচারণায় নেমেছেন তাদের প্রার্থীদের বিজয়ের লক্ষ্যে। ইতোমধ্যে ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন, মেয়র এডামস মাঠে নেমেছেন। তাদের সাথে যুক্ত হচ্ছেন বারাক ওবামা ও হিলারী ক্লিনটন। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী লি জেলডীনের পক্ষে প্রচারণায় সরব হয়েছেন। ফ্লোরিডা স্টেট গভর্নর রন ডি স্যনটিস, ভার্জিয়া গভর্নর গেন ইয়ংকিন এবং নিউইয়র্কের সাবেক রিপাবলিকান গভর্নর জর্জ ই প্যাটাবী।

শেয়ার করুন