২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৮:৩৫:২৩ পূর্বাহ্ন


বাংলা সিডিপ্যাপ অ্যান্ড অ্যালেগ্রা বাংলা মেলা বাংলাদেশিদের ঐক্যের দৃষ্টান্ত : আবু জাফর মাহমুদ
বাঙালি পোশাকে মেয়র এরিক অ্যাডমস
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৩
বাঙালি পোশাকে মেয়র এরিক অ্যাডমস বাঙালি পোশাকে মেয়র এরিক অ্যাডমস


গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর ড.স্যার আবু জাফর মাহমুদ বলেছেন, দেশপ্রেম ছাড়া মানুষের নিজস্ব কোনো সৌন্দর্য নেই। দেশপ্রেমের শিক্ষা থেকেই আমাদের জাতিগত নিজস্বতা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি এক ব্রঙ্কসের ওয়াটার অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইনক আয়োজিত অস্টম বাংলা সিডিপ্যাপ অ্যান্ড অ্যালেগ্রা বাংলা মেলার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। তিনি বলেন, ব্রঙ্কসে বাংলাদেশিদের অসাধারণ ঐক্যের দৃষ্টান্ত গড়ে উঠেছে। সংগঠনের বিদায়ী সভাপতি আহবাব চৌধুরীর সভাপতিত্বে মেলায় বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামস। তিনি মেলায় এসে সবাইকে চমকে দিয়েছেন এবং সম্পূর্ণ বাঙালিয়ানা সাজে সজ্জিত হয়েছেন। তাকে বাঙালির ঐতিহ্যের পোশাক পাঞ্জাবি পরিয়ে দিয়েছেন মেলার আয়োজকরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল হাসিব হাসনু, নবনির্বাচিত সভাপতি সারওয়ার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শাহ বদরুজ্জামান রুহেল, সাদী মিন্টু, শাহ গ্রুপের প্রেসিডেন্ট শাজ জে চৌধুরী, মেয়র অফিসের কর্মকর্তা মীর বাশার, বাংলা ডিপিপ্যাপ ও আলেগ্রা হোম কেয়ারের কর্মকর্তা সাঈদ আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ডারসেল ক্লার্ক, অ্যাটর্নি অ্যাট ল ব্রুশ এইচ ফিসার, অ্যাটর্নি অ্যাট ল পেরি ডি সিলভার, বাংলাদেশ সোসাইটি ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও বাকার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল হাসিম হাসনু, বাংলাদেশ সোসাইটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, বিসিসি সভাপতি মোহাম্মদ এন মজুমদার, বাংলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খলিল গ্রুপের খলিলুর রহমান, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম, সিপিএ আহাদ আলী, শাহ গ্রুপের সিইও শাহ জে চৌধুরী, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট মইনুজ্জামান চৌধুরী, আব্দুর রহিম বাদশা, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, গোলাপগঞ্জ সোসাইটির সভাপতি এবাদ চৌধুরী, জামাল হোসেন, খবির উদ্দিন।

মেয়র এরিক এডামস প্রায় পনের হাজার মানুষের আড়ম্বরপূর্ণ মেলায় উপস্থিত হয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক শহরের অনেক জায়গাতেই বাংলাদেশি কমিউনিটির উপস্থিতি দেখেছি, কিন্তু ব্রুকলিনে বাংলাদেশি কমিউনিটির এই বিপুল উপস্থিতি দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এখানে এসে দেখলাম ব্রঙ্কসেও অনেক বাংলাদেশি রয়েছেন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক এক অসাধারণ শহর। আমাদের আছে বিপুলসংখ্যক অসাধারণ মানুষ আর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য। এই শহরের অন্যতম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কমিউনিটি হচ্ছে বাংলাদেশি কমিউনিটি। আমার খুব ভালো লাগে বাংলাদেশি কমিউনিটি ব্যবসা, পরিবার, মানুষের নিরাপত্তার ব্যাপারে অনেক বেশি যত্নশীল, তারা নিউইয়র্ক পুলিশকেও সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশি কমিউনিটির ধর্মবিশ্বাসও দৃষ্টান্তমূলক। মেয়র বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটি নিউইয়র্ক শহরের পুলিশ বিভাগ থেকে শুরু করে সরকারি সব সেবা কার্যক্রমে ব্যবস্থার অন্যতম সহায়ক। মেয়র বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটির অগ্রগতিগুলো কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাই। এই ব্রঙ্কসে এসে বাংলাদেশের একঝাঁক মানুষের সঙ্গে আমার সাক্ষাতের সুযোগ হলো। একই রকম বাংলাদেশিদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়, কুইন্স থেকে শুরু করে অন্যান্য শহরেও। সবাই একসঙ্গে আমরা পৃথিবীর বিখ্যাত ও মহৎ শহর নিউইয়র্ককে গড়ে তুলছি।

নিউইয়র্কের বাংলাদেশি সমাজের প্রথম হোম কেয়ার বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার ইনকের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিইও, পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস ও আবু জাফর মাহমুদ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ তার ভার্চুয়াল বক্তব্যে বলেন, নিউইয়র্কে আমাদের দুটি পরিচয়। এক আমরা বাংলাদেশি। আরেকটি পরিচয় হচ্ছে আমরা বাংলাদেশি আমেরিকান। এই মেলা শুধু বিনোদনের নয়। এই মেলা আমাদের বাংলাদেশিদের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন অনেক দৃঢ় করতে পারে। এই মেলা আমাদের নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে পারে অনেকগুলো অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, ১৭ বছর আগে আমিই বাঙালি সমাজে হোম কেয়ার শব্দটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম। এটি আমার গর্বের বিষয়। আমার এই উদ্যোগের পেছনে মূল যে শিক্ষাটি কাজ করেছে সেটি আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমি বিশ্বাস করি, জন্মের পর আমি প্রতিবেশী ও পরিবারের কাছ থেকে যে যত্ন ও সেবা পেয়েছি সেটির কোনো তুলনা নেই। সেবার কোনো বিনিময় হয় না। সেটিই আমার প্রাকৃতিক প্রাপ্তি। সেবা যখন বাণিজ্য হয়ে যায়, তখন আর সেখানে মনুষ্যত্ব বলে কিছু থাকে না। আমরা যে ভালোবাসাভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন দেখি, সেখানে ভালোবাসা ও আন্তরিকতার বন্ধন বাড়াতে হবে। এই বিশ্বাস নিয়েই আমরা আমেরিকান। কিন্তু আমরা অন্য আমেরিকানদের মতো হারিয়ে যেতে চাই না। যেই স্রোত আমাদের নয়, সেই স্রোতে আমরা হারিয়ে যেতে চাই না।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, প্রতি মুহূর্তে আমরা যুদ্ধে আছি। এই যুদ্ধ হচ্ছে জীবন গড়ার। এই যুদ্ধ মানবতার। তিনি ব্রঙ্কস এ বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইনকের মেলার আয়োজনকে বাংলাদেশি সাংস্কৃতির মেলা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের যা কিছু ভালো, আমাদের যা কিছু নিজস্বতা তা এই মেলার মাধ্যমে আমরা তুলে ধরছি। আমরা এই মেলার মাধ্যমে আমাদের ভালোবাসা, উদারতার মেলবন্ধন গড়ে তুলছি। আমরা আমাদের সম্পর্কের সম্প্রসারণ করছি। এর অংশ হিসেবেই আমরা বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের কাচারিঘর গড়ে তুলছি এই নিউইয়র্কের শহরে শহরে। ব্রঙ্কসে মার্শালের শোরুমের পাশে আপনাদের কাচারিঘর গড়ে উঠছে। সেখানে আপনারা যাবেন, নাশতা করবেন, আলোচনা করবেন, নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতির অনুশীলন করবেন। এই কাচারিঘর হবে আপনাদের আপন ক্ষেত্র।

বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইনক আয়োজিত বর্ণাঢ্য মেলায় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর বহুসংখ্যক স্টল বসে। সকাল থেকে শুরু হওয়া মেলা বিকাল নাগাদ অগণন নারী-পুরুষ শিশুর এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। মঞ্চে চলতে থাকে একের পর এক অতিথিদের বক্তব্য ও বিশিষ্ট শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা। মেলায় সংগীত পরিবেশন করেন বাংলা সংগীতের জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভীন, বাউলশিল্পী কালা মিয়া ও সেলিম চৌধুরী, নৃত্য পরিবেশন করেন মায়া এঞ্জেলিকা।

মেলায় সর্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ডা. জন্নুন চৌধুরী, মোমেনুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিন কামরান, মামুন আহমদ, হাসান আলী, মখন মিয়া, মামুন রহমান, সৈয়দ গৌছুল হোসেন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সাদি মিন্টু ও সৈয়দ ইলিয়াস খছরু, বাকার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম ডি আলাউদ্দিন, সোহেল আহমদ, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ হোসেন, প্রচার ও গণসংযোগ সম্পাদক লিয়াকত আলী, স্কুল শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সালমা সুমি, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হান রানা জামান, আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক আব্দুর রহমান দুলাল, ক্রীড়া ও বিনোদন সম্পাদক শাহ ইকবাল রাজু, কার্যকরি সদস্য জে মোল্লা সানি ও চৌধুরী মোমিত তানিম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাম মেলা প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আহমদ ফয়ছল, বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব সোহেল আহমদ, যুগে সদস্য সচিব সালমা সুমি, প্রধান সমন্বয়কারী রায়হান জামান রানা, ইভেন্ট সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম ভূইয়া, মেলা প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাকসুদা আহমদ ও লিয়াকত আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম ডি আলাউদ্দিন, নবনির্বাচিত সাধারণ শাহ বদরুজ্জামান রুহেল, নব নির্বাচিত সভাপতি  সারওয়ার চৌধুরী। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন আশরাফুল হাসান বুলবুল।

শেয়ার করুন