২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৪:৪১:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


ঐক্য পরিষদ ও সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’র মহাসমাবেশ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৯-২০২৩
ঐক্য পরিষদ ও সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’র মহাসমাবেশ


সরকারি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ৮ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পৃথক পৃথক দিনে সারাদেশের সকল জেলা-মহানগর এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গণঅনশন ও গণঅবস্থান এবং ৬ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাশ করবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বাধীন ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্যমোর্চা। গত ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মোর্চার প্রধান সমন্বয়ক ও ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এঅ্যাডভেবেট  রাণা দাশগুপ্ত এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে দাশগুপ্ত বলেন, ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে অর্থে সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র চার মাস বাকি। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ পরাশক্তিসমূহের কূটনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র হিসাবে পরিণত হওয়ায় আমরা এদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। আমরা এ ব্যাপারে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণের সচেতন দৃষ্টি কামনা করছি। আমরা আশা করি, আমাদের দেশের সকল রাজনৈতিক দল দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য অধিকতর দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসবেন। 

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয় আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে এ সংক্রান্ত্র লক্ষ্য ও পরিকল্পনা হিসাবে যা বিধৃত রয়েছে, তা হলো অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইন দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকৃত স্বত্বাধিকারীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। বলা হয় জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা হবে। সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হবে। বলা হয় ৩. সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জমি, জলাধার ও বন এলাকায় অধিকার সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ভূমি কমিশনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। অনগ্রসর ও অনুন্নত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত ও চা বাগান শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা এবং সুযোগ সুবিধা অব্যাহত থাকবে। আরো বলা হয়  সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক সকল প্রকার আইন ও অন্যান্য অন্যায় ব্যবস্থার অবসান করা 

হবে। ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের অধিকারের স্বীকৃতি এবং তাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনধারার  স্বাতন্ত্র সংরক্ষণ ও তাদের সুষম উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময়ে নির্বাচনী প্রতিশ্রতি পূরণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, ২০২১ সালের মধ্যে এইসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকার কার্যকর পদক্ষে গ্রহণে এগিয়ে আসবে। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশন এবং সামনের অধিবেশনে প্রতিশ্রুতিসমূহ বিল আকারে উপস্থাপন করে আইনে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্যমোর্চার প্রধান সমন্বয়ক এ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত। এছাড়াও নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিবাস মাঝির সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভোলানন্দ গিরি আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি এ্যাড. সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক ডা. গজেন্দ্র নাথ মাহাতো, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, মতুয়া মহাসংঘের মহাসচিব সাগর সাধু ঠাকুর, ভক্ত সংঘ বাংলাদেশের সিনিয়র সহ সভাপতি শ্যামল রঞ্জন মন্ডল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত, রঞ্জন কর্মকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শ্যামল কুমার রায়, রবীন্দ্রনাথ বসু, দপ্তর সম্পাদক মিহির কান্তি হাওলাদার, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক প্রাণতোষ আচার্য্য শিবু, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক তপো গোপাল ঘোষ, সহ-পেশাজীবী বিষয়ক সম্পাদক সুবীর দত্ত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শম্ভু নাথ রায়, বাপ্পাদিত্য বসু, সহ-দপ্তর সম্পাদক সঞ্জয় কুমার দাস, মহিলা ঐক্য পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অলকা ঘোষ, যুব ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সরকার, একলব্য সরকার, ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুদীপ্ত সরকার সূর্য প্রমুখ।

ঘোষিত কর্মসূচি

ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ১৮টি জেলা ও ২টি মহানগর; ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১২টি জেলা ও ২টি মহানগর; ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা ও ১টি মহানগর; ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার চট্টগ্রাম বিভাগের ১২টি জেলা ও ১টি মহানগর; ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলা ও ২টি মহানগরে ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার গণঅনশন ও গণসমাবেশ এবং ২২ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কেন্দ্রীয় গণঅনশন ও গণঅবস্থান। এছাড়া আগামী ৬ অক্টোবর ২০২৩ শুক্রবার বেলা ২টায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এই মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন