২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৯:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


বৃষ্টি খাতুনের লাশ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টিকারীদের বিচার দাবি
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৩-২০২৪
বৃষ্টি খাতুনের লাশ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টিকারীদের বিচার দাবি বৃষ্টি খাতুন


এবার সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুনের বাবা-মা বিচার চাইলেন। নিজের মেয়ের মরদেহ নিতে যেসব লাঞ্ছনা-ভর্ৎসনার শিকার হতে হয়েছে, কে বা কাদের জন্য ওই পরিস্থিতির শিকার হতে হলো এটা খুঁজে বের করে তাদের শাস্তি দাবি করেছেন বৃষ্টির বাবা শাবলুল সবুজ। নিহত বৃষ্টির ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিললেও শুধু লিখিত এক অভিযোগের ভিত্তিতে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ তার বাবাকে না দেওয়ায় বাবা সবুজ আলী ও মা বিউটি বেগম বিচার দাবি করেছেন অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে। 

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বেইলি রোডের সাততলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীকে হিন্দু দাবি করেন, ঢাকা রমনা কালী মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা এবং থানায় অভিযোগ করেন। তার সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ১১ দিন পর গত ১১ মার্চ বিকেলে বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে তার বাবা-মার কাছে। পরে রাতেই গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার বেতাবাড়িয়া ইউনিয়নের বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

মরদেহ দাফনের আগে বৃষ্টির বাবা শাবলুল সবুজ আক্ষেপ করে জানান, মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করার পর তার ফিঙ্গার নেওয়া হয় এবং বৃষ্টির সঙ্গে ফিঙ্গার ম্যাচ করে। তারপর কে বা করা এসে লিখিত অভিযোগ দেয় যে তার মেয়ে হিন্দু। তারপর থেকেই শুরু হয় জটিলতা। আর সে জটিলতার খবর সবাই জানেন! তার মেয়ের মরদেহ নিয়ে নাটকীয়তা সৃষ্টি করার কারণে ১১ দিন পর মেয়ের মরদেহ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশে আইন আছে, আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হোক।’

স্থানীয় বেতবাড়িয়া চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির লাশ ১১ দিন পর বাড়িতে এনে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। দাফন নিয়ে কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়নি। খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ আন-নূর জায়েদ জানান, মৃত্যুর ১১ দিন পর বৃষ্টির মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এনে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক আছে। 

এর আগে গত ১০ মার্চ বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি একেএম নাহিদুল ইসলাম জানান যে বৃষ্টি খাতুনের ডিএনএ তার বাবা মার সঙ্গে মিলে গেছে। এতে করে দীর্ঘ জটিলতার অবসান ঘটে। আর ওই ডিএনএ টেষ্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় বৃষ্টি খাতুন শাবলুল আলম ও বিউটি খাতুনের সন্তান। একই সঙ্গে বৃষ্টি ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী সনাতন ধর্মালম্বী এবং তার বাড়ি ভারতে এবং ছোট্ট বেলায় এ অভিশ্রুতিকে দত্তক নিয়েছিল কোনো এক পরিবার বলে যে দাবি তুলে সনাতম ধর্ম অনুযায়ী লাশের সৎকার করার দাবি করেছিলেন রমনা কালী মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা, সেটা পুরোটাই মিথ্যা ও বানোয়াট প্রমাণিত হয়েছে। 

ফ্লাশ ব্যাক 

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যান বৃষ্টি খাতুন। বৃষ্টি তার বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি মূলত মুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু অভিশ্রুতি নামে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার কারণে তার লাশ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মৃত্যুর পর রমনা মন্দিরের পুরোহিত বৃষ্টিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুন নিজের সন্তান বলে দাবি করেন। এরপর মরদেহ শনাক্ত করতে নেওয়া হয় ডিএনএ নমুনা। নমুনা নেওয়ার ১১ দিন পর বৃষ্টির ডিএনএর সঙ্গে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ মিলেছে।

বৃষ্টি খাতুন বা অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর বিষয়ে জটিলতা প্রসঙ্গে এর আগে রমনা থানার এসআই হাবিবুর রহমান জানান, শুক্রবার (১ মার্চ) বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ কুষ্টিয়া থেকে হাসপাতালে এসে দাবি করেন- বৃষ্টি তার মেয়ে। পরে রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা রমনা থানায় লিখিতভাবে দাবি করেন- মেয়েটি সনাতন ধর্মের, তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার বাড়ি ভারতে। শাস্ত্রী বিভিন্ন সময় কালীমন্দিরে এসে পূজা করতো। ফলে ডিএনএর মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা প্রয়োজন। এ কারণে বৃষ্টির মরদেহ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি।

শেয়ার করুন