২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৫:০৬:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


দেশকে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী
সরকার তো আমাদের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০২-২০২৪
সরকার তো আমাদের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী


গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, সরকার তো আমাদের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। এরা তো সারাক্ষণই মাঠের বিরোধী দলের বিরুদ্ধেই কথা বলা যাচ্ছে। দেশে যে একের পর এক কঠিন সমস্যা রয়েছে সেগুলো নিয়ে তো কথা বলতে চায় না, এড়িয়ে চলছে। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ

দেশ: আপনারা আবারো সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। আপনি কি মনে করেন একটি নির্বাচনের পর সরকার ক্ষমতায় আসীন হয়ে গেছে। আপনাদের দাবি-দাওয়া বা আন্দোলনের ব্যাপারে কোনো ধরনের বিচলিত এই সরকার? বা মনে করে সরকার আপনাদের আন্দোলন সংগ্রামকে তোয়াক্কা করে তারা?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : আরে না.....। সরকার তো আমাদের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। এরাতো সারাক্ষণই মাঠের বিরোধী দলের বিরুদ্ধেই কথা বলা যাচ্ছে। দেশে যে একের পর এক কঠিন সমস্যা রযেছে সেগুলো নিয়ে তো কথা বলতে চায় না, এড়িয়ে চলছে। তো কথা হচ্ছে, দেশের সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যদি শান্তি না থাকে তাহলে যেকোনো সরকারের পক্ষে কন্টিনিউ করা সম্ভব না। এ সরকার সব কিছু লেজে গোবরে করে ফেলেছে। এজন্য তার পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব না। তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণও করতে পারবে না। এরা সুশাসনও দিতে পারবে না। মানুষের ভোটাধিকারও দিতে পারবে না। এরা কোনো কিছুই দিতে পারবে না। 

দেশ: কিন্তু বর্তমান সরকারতো মাত্র ক্ষমতায় আসলো- এতে কিছু কিভাবে দেয়া সম্ভব?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : এটাকে তো ক্ষমতায় আসা বলে না ..(একটু হাসি দিয়ে) এটাকে তো ক্ষমতা রিনিউ করা হয়েছে বলা যায়। সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে ধবংস করে দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি রন্ধে রন্ধেও ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সক্ষমতা সরকারের নেই। নৈতিকভাবে সরকার পরাজিত, সব মিলিয়েই..। 

দেশ: আপনারা যে এসব অভাব অভিযোগ করেন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে তো একটা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছেন না। 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: আমরা তো অস্ত্র নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নামতে পারি না। তারা একটা জনসভা চক্রান্ত করে তছনছ করে দিলো। অবশ্য এটা একটা সাময়িক। কিন্তু এটা তো ঠিক এবং আমরাও বুঝলাম এসরকারের মধ্যে আস্থার সঙ্কট আছে। আমরা তো আহবান জানিয়েছে জনগণ ভোট দেবে না। আমরাও ভোট দেবো না। তারা কতগুলো ভোটার বানিয়ে। আরে এভাবে তো একটা রাষ্ট্র চলতে পারে না। 

দেশ: আপনারা বলছেন সরকারতো কিছু করতে..(প্রশ্ন করা শেষ হয়নি)..। 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: না না আগে তো সামরিক সরকাররা গায়ের জোড়ে সব কিছু করে ফেলতো। আর এরা তো সো কল্ড নির্বাচনের মাধ্যমে সব করে ফেলছে..এটাতো আরো ভয়ঙ্কর। এখনতো মনে হচ্ছে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করা অনেক সহজ ছিল। এভাবে সমস্ত নেতাদের আটক করে, হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে ..এ--তো ভয়াবহ পরিস্থিতি। 

দেশ: কিন্তু সরকার তো দাবি করছে তারা সারা বিশ্বের সমর্থন পেয়েছে। 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: আরো এগুলো কিছু না। প্রত্যেক দেশ সরকারের সাথে ব্যাবসা বাণিজ্যের একটা সম্পর্ক থাকে। জনগণ বিক্ষুদ্ধ। আমরা যদি সত্যিকার ভাবে লিডারশিপ দিতে পারি-জনগণইে তাদের ফেলে দেবে। 

দেশ: সে-ই লিডারশিপ কি মাঠে আছে বলে মনে করেন?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: হয়ে যাবে, হয়ে যাবে। একটু হয়তো গ্যাপ হবে। 

দেশ: বলা হচ্ছে বিএনপিসহ প্রায় অর্ধশত দল যারা একদফা দাবি নিয়ে মাঠে আন্দোলন করেছেন তারা কি এখন হতাশায় আছে?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: না না না কোনো ধরনের হতাশা নেই, কারো মধ্যেই হতাশা কাজ করছে না। আমরা তো আন্দোলনেই আছি। এধরনের একটা শক্তিকে মোকাবেলা করতে গেলে তো তারা পদে পদে কি ধরনের ঘটনা ঘটাবে-এগুলো আমরা জানি। আর এগুলো তো আমাদের মধ্যে এক নতুন অভিজ্ঞতা। এগুলো একেক শেখ হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) চমক। আর এই চমকের মধ্য দিয়েই জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এগুলো করে হয়তো সাময়িকভাবে বোকা বানানো চেষ্টা করা যাচ্ছে-কিন্তু শেষ মেষ এমন চমক দিয়ে বোকা বানানো যাবে না। 

দেশ: বিএনপিসহ সমমনা যাদের নিয়ে আপনারা মাঠে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তাদের জন্য আপনার মেসেজ কি?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: মেসেজ হচ্ছে আমরা আরো শক্তভাবে আন্দোলনে থাকবো। আমরা সরকারের সব ধরনের অনিয়ম-অনাচারের বিরুদ্ধে মাঠে থাকবো। 

দেশ: আপনারা কি একদফার আন্দোলন থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: একদম হারাইনি। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ এর আন্দোলন তো একিই। উনি একেক সময় একেকটা ম্যাজিক দেখাচ্ছে দেখাক। ম্যাজিক থেকে তিনি সাময়িক লাভবান হচ্ছেন। উনি তো আওয়ামী লীগকেও ফুটো করে দিয়েছেন। নৌকাও ফুটো হয়ে গেছে। এখন নাকি নৌকাও দেবেন না কাউকে। নিজেরাই নিজের পায়ে মতো কুড়াল মারার মতো অবস্থা করছেন। দেখা যাক..

দেশ: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য। 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: আপনাকেও ধন্যবাদ। 

শেয়ার করুন