০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ০৪:২৩:২১ অপরাহ্ন


ফুটবলে নারী, পুরুষদের সমান বেতন প্রদানের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৫-২০২২
ফুটবলে নারী, পুরুষদের সমান বেতন প্রদানের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের জাপানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতে নেবার পর নিউইয়র্কের সিটি হলে ইউএস মহিলা বিশ্বকাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে খেলোয়াড়দের উদযাপনের দৃশ্য


যুক্তরাষ্ট্র সকার (ফুটবল) ফেডারেশন তার পুরুষ এবং নারীদের দলকে সমানভাবে অর্থ প্রদানের জন্য একটি মাইলফলক চুক্তিতে পৌঁছেছে। এই চুক্তির আওতায় আমেরিকান জাতীয় গভর্নিং বডি নারী-পুরুষ উভয়দলের খেলোয়াড়দের এই প্রথম একই পরিমাণ পারিশ্রমিক দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ফেডারেশন গত ১ মে ২০২৮ সালের ডিসেম্বরের পর্যন্ত উভয় জাতীয় দলের জন্য ইউনিয়নের সাথে পৃথকভাবে যৌথ দরকষাকষির পর চুক্তিটি ঘোষণা করেছে। এর ফলে বেতন সমতা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলা তীব্র আলোচনার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

অ্যালেক্স মরগান এবং মেগান রাপিনোর মতো তারকারাসহ মহিলা দলের আরো সফল খেলোয়াড়দের চাপে এই চুক্তিগুলি আংশিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই দুই নারী ২০১৯ সালে মহিলা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নশিপে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার সময় লিঙ্গ সমতা লড়াইয়ের অগ্রভাগে ছিলেন। তাঁদের সংগ্রামের গল্প টিমের সাথে এতোটাই মিশে গিয়েছিল যে, যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়রা ফ্রান্সে শিরোপা জয়ের উদযাপনের সময়ও দর্শকরা গ্যালারি থেকে ‘সমান বেতন! সমান বেতন!’ বলে সমস্বরে আওয়াজ তোলে।

মরগান এবং র‌্যাপিনো এখনো এই চুক্তির সুবিধাভোগী হতে পারে, যদিও ২০২৩ সালে পরবর্তী মহিলা বিশ্বকাপে দলের গঠনে ততোদিনে বেশকিছু পরিবর্তন আসতে পারে। সম্ভবত সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল বিশ্বকাপের প্রাইজমানি বা পুরস্কারের অর্থ, যা টুর্নামেন্টে একটি দল কতদূর এগিয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে দেয়া হয়। যদিও আমেরিকান নারী ফুটবলাররা আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরপর দুবার বিশ্বকাপ শিরোপা নিয়ে ঘরে ফিরেছে, তারপরও ফিফা পুরস্কারের অর্থের পার্থক্যের অর্থ হলো তারা পুরুষ বিজয়ীদের তুলনায় অনেক কমই ঘরে তুলেছে। অর্থাৎ আমেরিকান নারীরা ২০১৯ বিশ্বকাপ জেতার জন্য ১ লাখ ১০ হাজার ডলার বোনাস পেয়েছে; আর আমেরিকান পুরুষরা ২০১৮ সালে জিতলে পেতেন ৪ লাখ ৭ হাজার ডলার। ফলে বৈষম্যটা সেখানেও স্পষ্ট।

ইউনিয়নগুলি এই বছরের শেষের দিকে পুরুষদের বিশ্বকাপ এবং পরের বছরের মহিলা বিশ্বকাপের পাশাপাশি ২০২৬ এবং ২০২৭ টুর্নামেন্টের জন্য ফিফার প্রদেয় সমমানের অর্থ প্রদান করতে সম্মত হয়েছিল।

ফেডারেশন পূর্বে ফিফা থেকে অর্থ প্রদানের ওপর ভিত্তি করে বোনাস, যা ২০১৮ সালের পুরুষদের টুর্নামেন্টের জন্য ৪০ কোটি ডলার নির্ধারিত ছিল, যার মধ্যে ছিল চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের জন্য ৩.৮ কোটি ডলার এবং ২০১৯ সালের মহিলাদের টুর্নামেন্টের জন্য ৩ কোটি ডলার, যার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্র পেয়েছে ৪০ লাখ ডলার।

ফিফা ২০২২ সালের পুরুষদের বিশ্বকাপের জন্য প্রাইসমানি মোট ৪৪ কোটি ডলারে উন্নীত করেছে। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো প্রস্তাব করেছেন, ফিফা ২০২৩ সালের মহিলা বিশ্বকাপের জন্য মহিলাদের পুরস্কারের অর্থ দ্বিগুণ করে ৬ কোটি ডলার করবে। এ ছাড়া ফিফা অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যাও বাড়িয়ে ৩২-এ উন্নীত করেছে।

নিষ্পত্তির অংশ হিসাবে, খেলোয়াড়রা ২.২ কোটি ডলার ভাগাভাগি করে নেবে, এই অঙ্ক তারা সমতায়নের জন্য যা চেয়েছিল, তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। ইউএসএসএফ তাদের ফুটবল-পরবর্তী কেরিয়ার এবং মহিলাদের জন্য খেলাধুলা বৃদ্ধির ল্েয দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ার ল্েয খেলোয়াড়দের উপকৃত করার উদ্দেশ্যে ২০ লাখ ডলার দিয়ে একটি তহবিল প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়েছে।

শেয়ার করুন